বিশ্বজুড়ে প্রায় ৮০ কোটি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে, যেখানে সঠিক চিকিৎসা পাওয়া প্রায়শই কঠিন। গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত জার্নাল ল্যানসেটের একটি নতুন গবেষণায় বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার হার গত ৩০ বছরে দ্বিগুণ হয়েছে। খবর বাংলানিউজের।
১৯৯০ সালে বিশ্বব্যাপী প্রায় ৭ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ এন্ডোক্রাইন রোগে আক্রান্ত ছিল, যা শরীরের ইনসুলিন উৎপাদনে অক্ষমতার ফলে রক্তে সুগারের স্তর নিয়ন্ত্রণে সমস্যা সৃষ্টি করে। একে ডায়াবেটিস বলা হয়। তবে এ হার ২০২২ সালে বেড়ে ১৪ শতাংশে দাঁড়ায়। অর্থাৎ ১৯৯০ সালের প্রায় ২০ কোটি মানুষের তুলনায় বর্তমানে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৮০ কোটি। এতে টাইপ–১ এবং টাইপ–২ উভয় ধরনের ডায়াবেটিস অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। গবেষণায় দেখা যায়, উন্নত দেশগুলো যেমন জাপান, ক্যানাডা, ফ্রান্স ও ডেনমার্কে ডায়াবেটিসের হার কমেছে। কিন্তু উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এটি ক্রমাগত বেড়েই চলেছে।
গবেষকরা বলছেন, ডায়াবেটিসের চিকিৎসা খরচের বোঝা ও ডায়াবেটিসের চিকিৎসা না হওয়ার বোঝা ক্রমশ নিম্ন–মধ্যম আয়ের দেশগুলোর ওপর পড়ছে। উদাহরণ হিসেবে পাকিস্তানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। পাকিস্তানে ১৯৯০ সালে নারীদের ১০ শতাংশ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিল। তবে বর্তমানে তা এক–তৃতীয়াংশে পৌঁছেছে। আরও উদ্বেগজনক হলো, বিশ্বের প্রায় ৪৪ দশমিক ৫ কোটি ডায়াবেটিস আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ কোনো চিকিৎসা পাচ্ছেন না, যার মধ্যে এক–তৃতীয়াংশ ভারতের। সাব–সাহারা আফ্রিকায় এ সংখ্যা আরও ভয়াবহ, যেখানে ডায়াবেটিস আক্রান্তদের মাত্র ৫ থেকে ১০ শতাংশ মানুষ চিকিৎসা পেয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, চিকিৎসার অভাবের কারণে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা হার্টের সমস্যা, কিডনির ক্ষতি, দৃষ্টিশক্তি হারানো এবং কখনো মৃত্যুর ঝুঁকিতে থাকেন।ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডনের গবেষক মজিদ ইজ্জাতি জানান, ডায়াবেটিসের চিকিৎসা সেবা বিশ্বব্যাপী সহজলভ্য করার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে, তা নাহলে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এই সমস্যা আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।