৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর দেশের উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রশাসনের পদত্যাগ–অপসারণের দাবি ওঠে। দাবির মুখে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) ও রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবিপ্রবি) উপাচার্যসহ প্রশাসনিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিবর্গ পদত্যাগ করেন।
এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখন পর্যন্ত কোনো প্রশাসন নিয়োগ দেয়নি অন্তর্বর্তী সরকার। যার কারণে কার্যত অচল রয়েছে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। টুকটাক প্রশাসনিক কার্যক্রম চললেও কোনো ধরনের ক্লাস–পরীক্ষা হচ্ছে না। এর মধ্যে গত বুধবার চুয়েট খোলার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয়টির সিন্ডিকেট। কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনায় খুলেনি বিশ্ববিদ্যালয়। যার কারণে সেশনজটের শঙ্কায় রয়েছেন এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারো শিক্ষার্থী।
জানা যায়, গত ১২ আগস্ট চবি উপাচার্য প্রফেসর আবু তাহের, উপ–উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর বেনু কুমার দে, উপ উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর সেকান্দর চৌধুরীসহ বিশ্ববিদ্যালযের প্রক্টরিয়াল বডি, সকল আবাসিক হলের প্রভোস্ট ও ছাত্র উপদেষ্টা পদত্যাগ করেন। ১৪ আগস্ট পদত্যাগ করেন চুয়েট উপাচার্য রফিকুল ইসলাম। এরপর ১৮ আগস্ট পদত্যাগ করেন রাবিপ্রবি উপাচার্য ও উপ–উপাচার্য। প্রশাসন না থাকায় কার্যত বন্ধ রয়েছে এসব প্রতিষ্ঠান।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী রেসালাত রহমান বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসন পদত্যাগের পর ক্যাম্পাসে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তা শিক্ষার্থীদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। প্রশাসনিক সংকটের কারণে শিক্ষাক্রম দীর্ঘদিন স্থবির হয়ে পড়ে আছে। ক্যাম্পাস কবে খুলবে, শিক্ষাক্রম কেমন হবে, এসব প্রশ্নের উত্তর এখনও অস্পষ্ট। শিক্ষার্থীদের অমূল্য সময় নষ্ট হচ্ছে। তাছাড়া সেশনজটের তীব্র আশঙ্কা তো আছেই। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসন না থাকায় নানরকম সমস্যা তৈরি হচ্ছে। অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ দখল করছেন বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে প্রশাসন থাকলেও একাডেমিকভাবে একরকম স্থবির ছিল চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়। তবে গতকাল শিক্ষক–শিক্ষার্থীদের সমন্বয় সভায় আগামী ৮ তারিখ থেকে যাবতীয় একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য ও প্রকাশনা শাখার সিনিয়র উপ–পরিচালক খলিলুর রহমান আজাদীকে বলেন, (বৃহস্পতিবার) শিক্ষক–শিক্ষার্থীদের সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে আগামী ৮ তারিখ থেকে নিয়মিত ক্লাস–পরীক্ষার শুরু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তবে কবে কখন খুলবে জানেন না চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নুর আহমদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন প্রশাসন আসার আগে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব না। নতুন প্রশাসন কখন আসবে সেটা জানি না। প্রশাসন না থাকায় কিছু জটিলতা তৈরি হয়েছে। আশা করি প্রশাসন আসলে সেগুলো সমাধান করা যাবে।