বিশ্বে করোনাভাইরাসে প্রথম মৃত্যুর ১৪ মাসের মাথায় মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেল ২৫ লাখ। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় এ সঙ্কটের শুরু থেকে হালনাগাদ তথ্য নিয়ে নিয়মিত যে টালি প্রকাশ করে আসছে, বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সকাল ৮টা ২২ মিনিটে তাতে মৃত্যুর সংখ্যা ২৫ লাখ ৬ হাজার ৩৪৪ জনে পৌঁছায়।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে নতুন এ ভাইরাসের সংক্রমণের খবর আসতে শুরু করে। এরপর ২০২০ সালের ১১ জানুয়ারি সেখানে প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। পরের কয়েক মাসে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে। গত ১৫ জানুয়ারি বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ২০ লাখ ছাড়িয়ে যায়। খবর বিডিনিউজের।
করোনাভাইরাসে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা ১০ লাখে পৌঁছাতে লেগেছিল নয় মাস। এরপর চার মাসেরও কম সময়ে তা দ্বিগুণ হয়ে যায়। মৃতের সংখ্যা ১৫ লাখ থেকে ২০ লাখে পৌঁছাতে ছয় সপ্তাহ লেগেছিল; পরের ছয় সপ্তাহেই তা ২৫ লাখে পৌঁছাল। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, মেক্সিকো, ভারত ও যুক্তরাজ্যে, যেখানে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ২৭ শতাংশের বসবাস। বিশ্বজুড়ে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ১১ কোটি ২৯ লাখ ৬৭ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এর অর্ধেক রোগীই শনাক্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, ব্রাজিল, যুক্তরাজ্য ও রাশিয়ায়। শনাক্ত রোগী ও মৃত্যুর যে সংখ্যা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো প্রকাশ করছে, তার সবই সরকারি তথ্যের ওপর ভিত্তি করে। কিন্তু বিশ্বের অনেক দেশে এখনও করোনাভাইরাস পরীক্ষার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর অনেক তথ্যই হিসাবের বাইরে থেকে গেছে বলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের ধারণা। আক্রান্ত ও মৃত্যুর তালিকায় সবার চেয়ে এগিয়ে থাকা যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত ৫ লাখ ৮ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে, শনাক্ত হয়েছে ২ কোটি ৮৪ লাখের বেশি মানুষ। বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু দেখা ব্রাজিলে ২ লাখ ৫১ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এ ভাইরাস। সেখানে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় ১ কোটি ৪ লাখে।
১ লাখ ৫৬ হাজার মানুষের মৃত্যু নিয়ে ভারত মৃতের সংখ্যার দিক দিয়ে বিশ্বে চতুর্থ অবস্থানে থাকলেও এক কোটি ১০ লাখ শনাক্ত রোগী নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যায় আছে দ্বিতীয় স্থানে। অবশ্য অঞ্চলের হিসাবে এই মহামারীতে সবচেয়ে বেশি প্রাণক্ষয় হয়েছে ইউরোপে। এই মহাদেশে এ পর্যন্ত ৮ লাখ ৪২ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে, যা পুরো বিশ্বের ৩৩ শতাংশ।
মহামারীর এক বছর পেরিয়ে এসে এখন আশা জাগাচ্ছে টিকা। কিছু ধনী দেশ দ্রুততার সঙ্গে নাগরিকদের টিকাদান এগিয়ে নিতে পারলেও গরিব অনেক দেশের টিকা পাওয়া এখনও নিশ্চিত হয়নি। ফলে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার একটি বড় অংশকে টিকা দিতে লাগবে বহুদিন।