বিশ্বকাপ মিশনের শুরুতে বাংলাদেশের সামনে শ্রীলংকা

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শুক্রবার , ৭ জুন, ২০২৪ at ৭:৪৬ পূর্বাহ্ণ

টিটোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশ দলের অবস্থা অনেকটা ঝড়ের কবলে পড়া নৌকার মত। দলের নেই পারফরম্যান্স। ব্যাটাররা ধুকছে রানের জন্য। বোলাররাও নেই ছন্দে। যুক্তরাষ্ট্রের মত দলের কাছে সিরিজ হার। লড়াই করতে পারেনি ভারতের বিপক্ষে। মাঠে এবং মাঠের বাইরে বেহাল দশায় এখন বাংলাদেশ দল। আর ঠিক সে অবস্থায় বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে মাঠে নামছে আজ টাইগাররা। প্রতিপক্ষ শ্রীলংকা। বিশ্বকাপের আগে টানা তিনটি সিরিজ জিতলেও লংকানরা বিশ্বকাপ শুরু করেছে একেবারে বাজে ভাবে। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে মাত্র ৭৭ রানে অল আউট হয়েছে লংকানরা। তুলনা করতে গেলে দুদলের অবস্থা প্রায় একই রকম। আগামীকাল শনিবার বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ছয় টায় ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে মাঠে নামবে দুদল। এই স্টেডিয়ামের উইকেট কেমন সেটা পরখ করা হয়নি বাংলাদেশের। কারণ এই মাঠে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে যে প্রস্তুতি ম্যাচটি ছিল সেটা পরিত্যক্ত হয় বৈরি আবহাওয়ার কারণে। তাই কঠিন পরিস্থিতিতে মাঠে নামতে হচ্ছে টাইগারদের।

বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের যা অবস্থা তাতে টিটোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরের রাউন্ডে জায়গা করে নেওয়ার মত দল নয় বাংলাদেশ। কিন্তু এক জায়গায় আশাবাদি হতে পারছে বাংলাদেশ দল। আর তা হচ্ছে বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শ্রীলংকার প্রথম ম্যাচের বাজে পারফরমেন্স। ঐ ম্যাচে মন্থর উইকেটের সাথে মানিয়ে নিতে ব্যর্থ হওয়ায় মাত্র ৭৭ রানে অলআউট হয় শ্রীলংকা। বাংলাদেশের দলে মূল সমস্যা ব্যাটিং। তবে বোলিং পারফরমেন্সে প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের মাথা ব্যথা কারণ ধরতে পারে। এ কারণেই মন্থর উইকেট বাংলাদেশকে আত্মবিশ্বাসী করছে। ডালাস এবং নিউইয়র্কের সাথে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের উইকেটের মিল পাওয়া যাচ্ছে। শ্রীলংকাকে ধরাশায়ী করতে উইকেটের উপরই নির্ভর করবে বাংলাদেশ। তবে এটা ঠিক যে বাংলাদেশকে নতুনভাবে ইতিহাস লিখতে হবে। ২০০৭ সালের প্রথম আসর দিয়েই টিটোয়েন্টি বিশ্বকাপে যাত্রা শুরু করেছিলো বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে অনুষ্ঠিত ঐ আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয় তুলে নিয়েছিল টাইগাররা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ঐ জয়টিই এখনও পর্যন্ত বড় কোন দলের বিপক্ষে বাংলাদেশের একমাত্র জয়। অস্ট্রেলিয়ায় সর্বশেষ টিটোয়েন্টি বিশ্বকাপে তিনটি জয় পেয়েছিলো টাইগাররা। সেটিই এক আসরে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জয়ের রেকর্ড। কিন্তু তিনটি জয়ই ছোট দলের বিপক্ষে পেয়েছিলো টাইগাররা।

ক্রিকেটের এই সংক্ষিপ্ত সংস্করণে দুদলের মুখোমুখি লড়াইয়ে অনেক এগিয়ে শ্রীলংকা। ১৬ ম্যাচের ১১টিতেই জিতেছে লংকানরা। তবে এই সব পরিসংখ্যান নিয়ে ভাবতে চাননা টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তিনি বলেন আগে যা হয়েছে তা নিয়ে আমরা ভাবছি না। আমরা জানি আমাদের কতটা সামর্থ্য রয়েছে। আমাদের সাহসী হতে হবে এবং পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করতে হবে। যদিও পরিকল্পনা বাংলাদেশ দল সব সময় করে। কিন্তু মাঠে গিয়ে আর সেটা বাস্তবায়ন হয়না। দলের টপ অর্ডারে সৌম্য, লিটন, শান্ত সবাই রয়েছেন অফ ফর্মে। তাই জয়টা এখন সবচাইতে বড় ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাহমুদউল্লাহর মতে জয় দিয়ে কোন টুর্নামেন্ট শুরু করতে পারাটা খুব জরুরি। এতে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। আর বাংলাদেশ দলের আত্নবিশ্বাস যে এখন একেবারে তলানিতে সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা। যদিও বিশ্বকাপের শুরুতে বাংলাদেশ দল বেশ ভাল একটি ধাক্কা খেয়েছে। পেসার শরীফুল ইনজুরির কারণে নেই এই ম্যাচে। তবে আশার আলোও রয়েছে আরেক পাশে। তা হচ্ছে তাসকিন থাকতে পারেন প্রথম ম্যাচের একাদশে।

এদিকে প্রথম ম্যাচে লজ্জার হারের পর চাপে থাকবে শ্রীলংকা। কারণ বাংলাদেশকে যদি হারাতে না পারে তাহলে পরের রাউন্ডে যাবার পথ অনেকটাই কঠিন হয়ে যাবে লঙ্কানদের। সেক্ষেত্রে অনেক যদির উপর নির্ভর করতে হবে তাদের। নিজেদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বাংলাদেশকে হারানোর চাপ দল কাটিয়ে উঠবে বলে বিশ্বাস করেন শ্রীলংকার অধিনায়ক হাসারাঙ্গা ডি সিলভা। তবে দু দলের লক্ষ্য কিন্তু জয়। যেখানে বাংলাদেশের চাইতে জয়টা যেন লংকানদের বেশি দরকার। কারন এরই মধ্যে তারা প্রথম ম্যাচে হেরে গেছে। তবে সেটা ছিল গ্রুপের সবচাইতে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। পরের তিন ম্যাচ তুলনামূলক সহজ লংকানদের। কিন্তু দু দলই বেশ ভালই উপলব্ধি করতে পারছে যে মাঠেই সেরাটা দিতে হবে। দায়িত্বের সিংহভাগ নিতে হবে ব্যাটারদের।

তাইতো বাংলাদেশ এখনো তাকিয়ে আছে সৌম্য, লিটন, শান্তদের ব্যাটে রানের দিকে। গতকাল ম্যাচ ভেন্যুতে অনুশীলন করেছে টাইগাররা। ম্যাচের আগে আরো একটি সেশন পাবে নিজেদের প্রস্তুত করতে। ক্রিকেটারদের শরীরী ভাষাও বেশ উজ্জীবিত। তাই মাঠের লড়াইয়ের দিকে তাকিয়ে এখন টাইগারদের সমর্থকরা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদোয়া চাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন সাকিব
পরবর্তী নিবন্ধএক দশক পর ইমন সাহা