বিয়ের প্রলোভনে কোচিং সেন্টারে ধর্ষণ, ঘুমের ওষুধ খেয়ে মৃত্যু

প্রতারক সেই শিক্ষক গ্রেপ্তার

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৪:৩৩ পূর্বাহ্ণ

নগরের চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার ‘শিক্ষাশালা’ নামের কোচিং সেন্টারে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ করা হয় এক শিক্ষার্থীকে। পরে প্রতারিত হয়েছে বুঝতে পেরে ওই শিক্ষার্থী ঘুমের ওষুধ খায়। এরপর ১১ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে গত রোববার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ওই শিক্ষার্থী (১৫) মারা গেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই ছাত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর তার বাবা চান্দগাঁও থানায় মামলা করেন। জোরপূর্বক ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় আসামি করা হয় কক্সবাজারের মহেশখালীর পশ্চিম পাড়ার বাবুল মিয়ার ছেলে হামিদ মোস্তফা জিসান (২১)-কে, যিনি কোচিং সেন্টারের অংকের শিক্ষক। চান্দগাঁও থানা পুলিশ গত ১৭ ফেব্রুয়ারি শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে একদিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠায়। মহেশখালীতে খবর নিয়ে জানা গেছে, এইচ এম জিসান প্রকাশ হামিদ মোস্তফা জিসান মহেশখালীর কুতুবজোম ইউনিয়ন ইসলামী ছাত্রসেনার সভাপতি। শিক্ষার্থীর খালা জানান, ওই শিক্ষার্থী নগরীর বহদ্দারহাটস্থ এনএমসি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী এবং এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। সে চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার ১১ নম্বর রোডে শিক্ষাশালা নামে একটি কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয়েছিল। এই কোচিং সেন্টারের অংকের শিক্ষক হামিদ মোস্তফা জিসান তাকে অংক বুঝিয়ে দেয়ার নাম করে তার মোবাইলে বিনা কারণে ফোন দিত। সে বিষয়টি পরিবারের কাউকে না জানালেও তার বাসার পাশের এক বান্ধবীকে সব বলতো। মোবাইলে শিক্ষক হামিদ মোস্তফা জিসান তার গ্রামের বাড়ির ছবি পাঠাত। এক পর্যায়ে তাকে পারিবারিক ভাবে বিয়ে করবে বলে প্রস্তাব দেয়। ১৭ ডিসেম্বর কোচিং শেষে ওই শিক্ষক একটি রুমের ভেতর রেখে বাইরে তালা লাগিয়ে দেয়। সবাই চলে গেলে প্রেম ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এসময় আপত্তিকর অবস্থায় ছবিও ধারণ করে। এই ছবি দিয়ে পরবর্তীতে ব্ল্যকমেলিং শুরু করে। বিষয়টি সে তার বান্ধবীকে জানায় এবং তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে বলে। পরীক্ষার আগের দিন ওই শিক্ষক তার প্রবেশপত্রও লুকিয়ে ফেলে।

প্রতারিত হয়ে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে নিজ রুমে ঘুমের টেবলেট খায় ওই শিক্ষার্থী। পরের দিন তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পরিবারের লোকজন চমেক হাসপাতালে ভর্তি করায়।

তার খালা জানান, বিষয়টি আমরা প্রথমে জানতে পারিনি। তার বান্ধাবীর কাছ থেকে সব কিছু জানার পর তার বাবা গত ১৭ ফেব্রুয়ারি চান্দগাঁও থানায় ওই প্রতারক শিক্ষক হামিদ মোস্তফা জিসানকে আসামী করে মামলা দায়ের করে। ওইদিন তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ঘুমের ওষুধ খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ায় ধর্ষিতাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তাই জবানবন্দি নেওয়া যায়নি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআমাকে কেন ফেলে গেলি?
পরবর্তী নিবন্ধস্ত্রীর অধিকার পেতে এবার অনশন