বিভিন্ন ধরনের ফেব্রিক্স-টাইলসসহ ৯৩ লট পণ্য নিলামে

চট্টগ্রাম কাস্টমস । দরপত্র জমা দেয়া যাবে ১৭ মার্চ দুপুর ২টা পর্যন্ত

জাহেদুল কবির | বুধবার , ৫ মার্চ, ২০২৫ at ১০:২৫ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম কাস্টমসে বিভিন্ন ধরনের ফেব্রিক্সটাইলসহ ৯৩ লট পণ্য অনলাইন নিলামে (অকশন) তোলা হচ্ছে। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টা থেকে অনলাইনে দরপত্র জমা নেওয়া শুরু হয়েছে। দরপত্র জমা দেওয়া যাবে আগামী ১৭ মার্চ দুপুর ২টা পর্যন্ত। এছাড়া আগ্রহী বিডারদের (নিলামে অংশগ্রহণকারী) পণ্য দেখার সুযোগ দেয়া হয়েছে ৩ মার্চ থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম শাখা সূত্রে জানা যায়, ৯৩ লট পণ্যের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফেব্রিক্স, থ্রি হুইলার অটোরিকশা টায়ার, ডাবল ডোর স্টিল, স্টিকার প্রিন্টেড, অ্যানিমল ফিড, পেপার, অ্যালুমিনাস সিমেন্ট, সিলিকন জেল, হ্যান্ড ব্যাগ, ক্র্যাফ্‌ট কার্টন, লেডিস সু সোল, প্লাস্টিকের খেলনা, কেট কেইজ, সিরামিক টাইলস, উডেন পেলেটস, রিপ্লেক্টিভ পাইপিং, সিরামিকের ফুলদানি, পিভিসি রেসিন, টেঙটাইল ফিনিশিং এজেন্ট, কালিজিরা এরোমেটিক রাইস, ইলেকট্রিক ড্রাই আয়রন ও চিনিগুড়া অ্যারোমেটিক রাইস অন্যতম।

জানা গেছে, ২০২০ সালের ২৭ ও ২৮ অক্টোবর ১৬ লট বিভিন্ন ধরনের পণ্য নিলামে তোলার মাধ্যমে ইঅকশনের যাত্রা শুরু হয়। এরপর ২০২১ সালের ১৯ ও ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় ২০ লট পেঁয়াজ নিলামে তোলা হয়। একই বছরের ৩ ও ৪ নভেম্বর কার্নেট ডি প্যাসেজ বা শুল্কমুক্ত সুবিধায় আসা বিলাসবহুল ১১২ লট গাড়ি তোলা হয়। দ্বিতীয় দফায় ২০২২ সালের ১২ ও ১৩ জুন কার্নেট ডি প্যাসেজ বা শুল্কমুক্ত সুবিধায় আসা ১০৮টি গাড়ি পুনরায় নিলামে তুলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। ওই বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর ৭৮ লট কার্নেট গাড়ি নিলামে তোলা হয়। এছাড়া ২০২৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন ধরনের ২৩ লট পণ্য এবং গত ৩১ ডিসেম্বর ১০৮ লট পণ্য ইঅকশনে তোলা হয়। গত বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন ধরনের ৭৯ লট পণ্য নিলামে তোলা হয়। ১৬ মে নিলামে তোলা হয় ৯০ লট পণ্য। ২৬ জুন নিলামে তোলা হয় ৬২ লট পণ্য। গত ১৮ সেপ্টেম্বর তোলা হয় ৪৬ লট পণ্য, ৫ নভেম্বর তোলা হয়েছে ৪৫ লট পণ্য, ১২ ডিসেম্বর তোলা হয় ৪৯ লট পণ্য, ১২ জানুয়ারি তোলা হয় ৪৭ লট পণ্য, ১২ ফেব্রুয়ারি তোলা হয় ৮৩ লট পণ্য এবং সর্বশেষ গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সাবেক এমপিদের বিলাসবহুল গাড়িসহ ৪৪টি গাড়ি নিলামে তোলা হয়।

বিডাররা বলছেন, অনলাইন নিলামে এখনো অনেক বিডার অভ্যস্ত হতে পারেননি। এছাড়া অনলাইন নিলামের অনেকগুলো কাজ এখনো ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে করতে হচ্ছে। শুধু দরপত্র জমাটা অনলাইনে হচ্ছে। তাই অনলাইন নিলামের পাশাপাশি যদি ম্যানুয়াল পদ্ধতিতেও নিলাম আয়োজন করা হয়, বিডাররা উপকৃত হবেন।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান কেএম কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মোরশেদ জানান, চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় আগামী ১৭ মার্চ ৯৩ লট পণ্য তোলা হচ্ছে। একইসাথে বর্তমানে বিভিন্ন নিলাম অযোগ্য পণ্য ধ্বংসের কার্যক্রমও চলমান রয়েছে।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপকমিশনার মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, আমরা অখালাসকৃত পণ্য নিয়মিত নিলামে তুলছি। এছাড়া নিলাম অযোগ্য পণ্য ধ্বংস করে বন্দরের ইয়ার্ড খালি করছি। এই কাজ চলমান থাকবে।

উল্লেখ্য, আমদানিকৃত পণ্য জাহাজ থেকে বন্দর ইয়ার্ডে নামার ৩০ দিনের মধ্যে সরবরাহ নিতে হয়। এ সময়ের মধ্যে কোনো আমদানিকারক পণ্য সরবরাহ না নিলে তাকে নোটিশ দেয় কাস্টমস। নোটিশ দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে এই পণ্য সরবরাহ না নিলে তা নিলামে তুলতে পারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এছাড়া মিথ্যা ঘোষণায় জব্দ পণ্যও নিলামে তোলা যায়। সর্বমোট ৪৫ দিনের মধ্যে নিলামে তোলার এই নিয়ম দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর করতে পারেনি বন্দর ও কাস্টমস। এতে করে বন্দরের ইয়ার্ডে এসব কন্টেনার পড়ে থাকে। আমদানি পণ্য যথাসময়ে খালাস না নেওয়ায় বন্দরগুলোতে প্রায়ই কন্টেনার জট লাগে। দিনের পর দিন কন্টেনার পড়ে থাকলেও বন্দর কর্তৃপক্ষ কোন চার্জ পায় না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রতারণার কৌশল ছিল ভিন্নরকম
পরবর্তী নিবন্ধএস আলম ও তার পরিবার সংশ্লিষ্ট ১১ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা