বিবাহ একটি পবিত্র সামাজিক চুক্তি বা বন্ধন যা সাধারণত দুটো প্রাপ্তবয়স্ক নর–নারীর মধ্যে সংঘটিত হয়ে থাকে। সাধারণত বিবাহ বলতে বোঝায় ধর্মীয় রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক কিছু রীতিনীতি মেনে দুইজন নরনারী একসাথে জীবন চলা শুরু করা এবং বিবাহ বিচ্ছেদ হল ধর্মীয় রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক কিছু নিয়ম ও শর্ত মেনে এই সম্পর্ক হতে মুক্ত হওয়া বা মুক্তি দেওয়া। সকল ধর্মে বিবাহের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছে। ধর্মীয়ভাবে যেমন বিবাহের উপর গুরুত্ব আরোপ করে বিবাহের কথা বলেছে তেমনি প্রয়োজন অনুসারে বিবাহ বিচ্ছেদের কথাও বলা হয়েছে। তবে ধর্মীয়, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে এটি অত্যন্ত ঘৃণিত এবং নিন্দিত কাজ। এটা যতটা সম্ভব এড়িয়ে যেতে বলা হয়েছে। বিবাহ বিচ্ছেদের অন্যতম প্রধান কারণ হলো ধৈর্যের অভাব। ধৈর্য দুজনকেই ধরতে হয় কিন্তু মেয়েদের বেলায় একটু বেশি প্রয়োজন। বিচ্ছেদ কোনো সমাধান হতে পারে না। এতে জড়িয়ে থাকে সামাজিক পারিবারিক ও ব্যক্তিগত সম্মান, সর্বোপরি সন্তানের মঙ্গল।
মানুষ মাত্রই ভুল। ভুল দুজনেরই হতে পারে। হোক সে স্বামী বা স্ত্রী। দুজনের ত্যাগ আর ভালোবাসার সমন্বয়ে তৈরি হয় সংসার, মজবুত হয় সংসারের ভিত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিবাহ বিচ্ছেদ অহরহ ঘটেই চলেছে। বৃটেনের রাজ পরিবার থেকে শুরু করে আমাদের দেশে রহিম মিয়ার সংসারও ভেঙেছে। দরিদ্র পরিবারগুলোতে অর্থের অভাব যৌতুক ও অজ্ঞতার কারণেই সাধারণত বিভিন্ন ধরনের পারিবারিক সমস্যা তৈরি হয় আর তার থেকে শুরু হয় পারিবারিক ভাঙন শেষমেষে বিবাহ বিচ্ছেদ। অন্যদিকে ধনী পরিবারগুলোতে অতিরিক্ত প্রাচুর্যের কারণ, পারিবারিক শ্রদ্ধাবোধের অভাব, সমঝোতার অভাব, স্বেচ্ছাচারিতা, কিছু কিছু নারীদের স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বাধীনতা, সঠিক পারিবারিক শিক্ষার অভাব, পরকীয়া ইত্যাদি। পরিবার থেকেই মানুষ তার জীবনে প্রথম শিক্ষা লাভ করে। শিশু বয়সে সে পরিবার থেকে যা দেখে সারা জীবন তা চরিত্রে তার প্রতিফলন ঘটে। সংসারে সব সময় সবকিছু নিজের পছন্দমত হবে এমনটা কিন্তু নয়। সংসারে যখন সন্তান চলে আসে তখন তার মুখের দিকে চেয়ে তার ভবিষ্যতের কথা ভেবে বাবা মাকে অনেক কিছু মেনে নিতে হয়। বিশেষ করে আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে মাদের। বিচ্ছেদ কোনো সমাধান হতে পারে না। সেই ক্ষেত্রে স্বামী–স্ত্রী হয়তো বা নতুন জীবন পেলেও পেতে পারে তবে সন্তানরা ধ্বংস হয়ে যায়, অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে যায় তাদের গোটা জীবন। সব ক্ষেত্রে দ্বিতীয় সুযোগও কাজে লাগে না। আমরা দিনদিন যত শিক্ষিত হচ্ছি তত যেন জটিল ও কঠিন সমস্যার মধ্যে ডুবে যাচ্ছি। আমরা শিক্ষিত হব জীবনের অন্ধকার দিকগুলোকে আলোয় ভরে তোলার জন্য। হাতে হাত মিলিয়ে, কাঁধে কাঁধ লাগিয়ে একে অপরের সাহায্যে এসে সমস্যার সমাধান করার জন্য। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলো যে আমাদের মধ্যে এমন কিছু নর নারী আছে যারা এই শিক্ষা বা স্বাধীনতা অপব্যবহার করছে যা আমাদের সামাজিক কলঙ্ক। তারা আমাদের সুস্থ সমাজকে ক্রমশ অসুস্থ করছে। সংসার জীবনের ক্ষেত্রে সংসার টেকানোর চেষ্টায় দায়িত্বটা মেয়েদের ভূমিকা একটু বেশি। আমি একজন মেয়ে হয়েই বলছি। একজন মেয়েই পারে সর্বাংসহা হয়ে সংসার টিকাতে। তবে সব ক্ষেত্রে যে সফল হবে তা নয়। চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। এই ক্ষেত্রে আমি রাজ বধু ডায়নার কথা বলব সে তো চেষ্টা চালিয়েছিল, পারেনি। কিন্তু ক্লিনটনের স্ত্রী হিলারি পেরেছে। পেরেছে অমিতাভ বচ্চনের স্ত্রী জয়াও, পারছি আমরা অনেক বাঙালি স্ত্রীরাও। বুক ভরা কষ্ট আর মুখ ভরা হাসি নিয়ে শুধু সন্তানের মুখের দিকে চেয়ে। পারলো না শুধু জাস্টিন টুডো স্ত্রী সোফির।