বিপ্লব উদ্যানের হারিয়ে যাওয়া সবুজ ফিরিয়ে আনার দাবি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা অধিকার রক্ষা পরিষদের সমাবেশ

| শনিবার , ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ at ৯:৫০ পূর্বাহ্ণ

বিপ্লব উদ্যানের সবুজ ধ্বংস করে সিটি কর্পোরেশনের স্থাপনা নির্মাণ ও বাণিজ্যিকীকরণের চুক্তি বাতিল করা, উদ্যানের হারিয়ে যাওয়া সবুজ ফিরিয়ে আনাসহ ৬ দফা দাবিতে সমাবেশ ও মিছিল করেছে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতা অধিকার রক্ষা পরিষদ’। গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টায় নগরীর ২ নম্বর গেইট মোড়ে এ কর্মসূচি পালিত হয়। আসমা আক্তারের সভাপতিত্বে ও সুবাইতা সুলতানা ইতুর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জ্যোতি বড়ুয়া, মো. ফারদিন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক আফরোজা নীলা প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, নগরজীবনে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য উপযুক্ত আলোহাওয়া সমৃদ্ধ সবুজ মুক্তাঙ্গন যেমন উদ্যান, খেলার মাঠ, পাহাড়, জলাশয় ইত্যাদি আবশ্যক। অথচ বিগত সরকারের আমলে উন্নয়নের নামে চট্টগ্রামে একের পর এক উন্মুক্ত স্থান ধ্বংস ও বাণিজ্যিকীকরণ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম নগরের বিপ্লব উদ্যান একসময় গাছগাছালিতে ভরা হলেও উন্নয়নের নামে সিটি কর্পোরেশন এ উদ্যানটির সবুজ ধ্বংস করেছে। দোকানসহ নানা ধরনের অবকাঠামো নির্মাণের কারণে এ উদ্যানের সবুজ ও উন্মুক্ত পরিসরের পরিমাণ অর্ধেকে নেমে এসেছে। ইমারত বিধিমালা অনুযায়ী, উদ্যানে ৫ শতাংশের বেশি কংক্রিট অবকাঠামো থাকতে পারবে না।

আর আন্তর্জাতিকভাবে ২ শতাংশও অনুমোদন করে না। কিন্তু চট্টগ্রাম নগরের ২ নম্বর গেটের বিপ্লব উদ্যানের কংক্রিট অবকাঠামোর পরিমাণ অন্তত ৫৫ শতাংশ। জনগণের মতামত উপেক্ষা করে তৎকালীন মেয়র আ জ ম নাছির, পরবর্তীতে মেয়র রেজাউল করিম এই চুক্তিকে আরো পাকাপোক্ত করে। রিফর্ম কনসোর্টিয়াম নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে এসব কাজ করার অনুমতি দিয়ে গত বছরের আগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহে চুক্তি করেছে চসিক। এই চুক্তির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটিকে কার্যত উদ্যানে আরও বেশি ব্যবসা করার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। বক্তারা বলেন, চট্টগ্রামে দিন দিন উন্মুক্ত পরিসরের পরিমাণ কমছে। এ অবস্থায় যেখানে উন্মুক্ত পরিসর বৃদ্ধি করা প্রয়োজন সেখানে সিটি কর্পোরেশন বিদ্যমান উদ্যানগুলোকে বাণিজ্যিকীকরণ করেছে। জনগণের মতামতের তোয়াক্কা না করে উদ্যান ধ্বংসের চুক্তি করা হয়েছে। অবিলম্বে বিপ্লব উদ্যান ধ্বংসের এ বাণিজ্যিক চুক্তি ও প্রকল্পটি বাতিল করে সবুজ ঘন উদ্যান ফিরিয়ে আনতে হবে। সমাবেশ থেকে বক্তারা সর্বসাধারণের বিনোদন ও বিশ্রামের প্রাণ কেন্দ্র হিসেবে উন্মুক্ত পার্ক তৈরি করা, অপসারণকৃত কাজীর দেউড়ি শিশুপার্কের স্থানে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত পার্কের ব্যবস্থা করা, জাম্বুরিপার্ক সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা, অতিসত্ত্বর জাতিসংঘ পার্কের সংস্কার কাজ শেষ করে সর্বসাধারণের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা, স্বাধীনতা কমপ্লেক্স বা জিয়া পার্ক সংস্কার করে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা, ফয়’স লেক, চিড়িয়াখানা, স্বাধীনতা কমপ্লেক্সসহ চট্টগ্রাম শহরের যেসব পার্কে প্রবেশ ফি প্রদান করতে হয় তা কমিয়ে সর্বনিম্ন ৫২০ টাকা নির্ধারণের দাবি জানান। বক্তারা নগরীতে জুলাই বিপ্লবে শহীদদের স্মৃতি স্তম্ভ স্থাপন করারও দাবি জানান।

শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বিপ্লব উদ্যান থেকে শুরু হয়ে ষোলশহর স্টেশনে এসে শেষ হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাউজানের পাহাড়তলীতে বিএনপির কর্মী সমাবেশ
পরবর্তী নিবন্ধবন্যার্তদের পাশে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও সিটি রেড ক্রিসেন্ট