দেশের ফ্রাঞ্জাইজি ক্রিকেটের সবচাইতে বড় আসর বিপিএল নিয়ে আলোচনা আর সমালোচনার যেন শেষ নেই। গত আসর নিয়েও হচ্ছে বিস্তর সমালোচনা। আগের কয়েক আসরের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে মুক্তি পেতে এবং নতুন আসর সুন্দর ও স্বচ্ছভাবে আয়োজন করার জন্য বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলে যুক্ত করা হবে বিসিবির বাইরের বিভিন্ন আঙিনার বিশেষজ্ঞদের। গভর্নিং কাউন্সিল চেয়ারম্যান মাহবুব আনাম জানালেন, এই কমিটিতে নেওয়া হবে আইনজ্ঞ, অর্থনীতিবিদ ও বিপণন বিশেষজ্ঞ। বিসিবির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ডিসেম্বর–জানুয়ারিতে হবে বিপিএলের দ্বাদশ আসর। টুর্নামেন্ট গভর্নিং কাউন্সিলে আপাতত আছেন তিনজন। মাহবুব আনামকে প্রধান করে কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে বিসিবি পরিচালক নাজমুল আবেদীনকে। সদস্য হিসেবে আছেন আরেক পরিচালক ফাহিম সিনহা। বোর্ড সভার দুদিন পর বুধবার সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান জানালেন বাইরের কাদেরকে যুক্ত করা হবে তাদের সঙ্গে। প্রথমত আমাদের মূল্যায়ন করতে হবে যে আমাদের অবস্থান কোথায়। সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের সামনে এগোতে হবে। গভর্নিং কাউন্সিলে এখন তিনজনকে দেওয়া হয়েছে। আমরা এর পরিধি বৃদ্ধি করব। বিভিন্ন পেশাজীবী থেকে গভর্নিং কাউন্সিলে অন্তর্ভুক্ত করব। যাতে আরও বেশি সহযোগিতা পাই। এটা লিগ্যাল, ফাইনান্সিয়াল ও মার্কেটিং বিভাগ থেকে। বাংলাদেশে যারা এই ধরনের কাজ করে থাকেন, তাদের আমরা গভর্নিং কাউন্সিলে অন্তর্ভুক্ত করব। বোর্ড পরিচালকদের সভায়ই সিদ্ধান্ত হয়, বিপিএলের সামনের আসর সুন্দরভাবে আয়োজনের জন্য একটি স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেবে বিসিবি। সেই প্রক্রিয়াটি কী হবে তা ব্যাখ্যা করলেন মাহবুব। বিশ্বের বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ কীভাবে পরিচালিত হয়, সেগুলো স্টাডি করছি। বোর্ড থেকে কিছু নির্দেশনা পেয়েছি। সেই অনুপাতে আগামী সপ্তাহের মধ্যে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট বা স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি নেওয়ার জন্য একটা টেন্ডারিং প্রক্রিয়ায় যাব। কোনো একটা মডেল কপি করলে, সেটা বাংলাদেশের জন্যও ভালো হবে তা ঠিক নয়। তাই স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি সম্পৃক্ত করতে যাচ্ছি। তারা দিক–নির্দেশনা দেবে। আর্থিক কাঠামোটা করবে। কীভাবে এটা আরও দীর্ঘস্থায়ী হয় সেটা আমাদের প্রধান আগ্রহ থাকবে। গত আসরের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে বিপিএলের তিন বছরের চক্র। নতুন আসরের জন্য নতুন করে পাঁচ বছর মেয়াদে ফ্র্যাঞ্চাইজিস্বত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি। আগামী মাসে সেই প্রক্রিয়া শুরু করে সেপ্টেম্বরের মধ্যে সামনের আসরের দলসংখ্যা চূড়ান্ত হবে বললেন গভর্নিং কাউন্সিল চেয়ারম্যান। আগস্টের মধ্যে আমরা নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করব। আমরা যে টাইমলাইন রেখেছি, এর মধ্যে আছে সেপ্টেম্বরের ভেতরে নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি নিযুক্ত করা হবে। এই টাইমলাইন অনুযায়ী অক্টোবরের আগে প্লেয়ার্স ড্রাফট হবে না। ১১তম বিপিএলের মাধ্যমে সকল চুক্তি শেষ হয়েছে।
বিসিবি এখন প্রোডাকশন, ফ্র্যাঞ্চাইজি বা স্পন্সর কারও সঙ্গে কোনো প্রকার চুক্তিবদ্ধ নয়। তাই এখন একদম বেইজ লেভেল থেকে শুরু করব। পুরোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি যারা ছিল তারা আবার আসতে পারবে। নতুনরাও আবেদন করতে পারবে। অনেক বছর ধরেই ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে সীমাবদ্ধ বিপিএল। দায়িত্ব নেওয়ার পর বিসিবি সভাপতি বেশ কয়েকবারই বলেছেন, বিপিএলে ভেন্যুর সংখ্যা বাড়ানোর ইচ্ছের কথা। তাই আগামী সপ্তাহ থেকে বর্তমান তিন ভেন্যুর বাইরে অন্য স্টেডিয়ামগুলোর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করবে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। আপাতত বগুড়া, খুলনা ও বরিশালের মাঠের দিকে নজর তাদের।