গর্ভবতী মায়েদের নরমাল ডেলিভারি করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা। গত বৃহস্পতিবার রাত ৯টা থেকে পরবর্তী ১২ ঘণ্টায় ১২ প্রসূতির নরমাল ডেলিভারি সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিটি শিশু এবং শিশুর মা সুস্থ আছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুর উদ্দিন রাশেদ জানান, মেডিকেল অফিসার ডা. জেসমিন আক্তার, ডা. শারমিন বন্যা, সিনিয়র স্টাফ নার্স সুষমা সরকার, সুমিত্রা পাটোয়ারী, মেহেরুন্নেসা, মিডওয়াইফ ফাতেমা আক্তার, তাসলিমা আক্তার, নার্সিং সুপারভাইজার হোসনেয়ারা বেগম, নার্স ইনচার্জ ইন্দিরা চৌধুরী মিলে টিম ওয়ার্কের কারণে নরমাল ডেলিভারি সফল হয়েছে।
ডা. মো. নুর উদ্দিন রাশেদ আরও জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে টিম ওয়ার্কের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ১১৮৪ জন নরমাল এবং ৫৪ জন সিজারিয়ান প্রসূতির ডেলিভারি করেন সীতাকুণ্ড স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা। নরমাল ডেরিভারির মাধ্যমে সন্তান প্রসব করতে প্রসূতিদের উদ্বুদ্ধকরণ প্রচারণায় তারা বিভিন্ন কৌশলও কাজে লাগিয়েছেন। এজন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে প্রসূতি নারীদের বিনামূল্যে ‘প্রসূতি কার্ড’ দেয়া হয়। এরপর ডেলিভারি না হওয়া পর্যন্ত চলতে থাকে কাউন্সেলিং আর ফ্রি চেকআপ। প্রসূতি কার্ড ও নরমাল ডেলিভারি করাতে মাঠ পর্যায়ের শিক্ষক, চেয়ারম্যান–মেম্বার, ইমাম ও অন্যান্য জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন এনজিওর স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে বার্তা পৌঁছানো হয় প্রসূতি মায়েদের কাছে। এছাড়াও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরাও নিজেরা বিভিন্ন স্থানে গিয়ে কাউন্সেলিং প্রদান করেন।
কয়েকজন প্রসূতি বলেন, দেরি করে সন্তান নেয়ায় ও এলাকার কিছু লোকের কথায় ভয় পেয়েছিলাম। অনেকে ক্লিনিকে সিজার করার পরামর্শ দিয়েছিল। কিন্তু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাঠকর্মী এবং চিকিৎসকরা অভয় দিয়ে দায়িত্ব নিলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হই। এখানে নরমাল ডেলিভারিতে আমাদের সন্তান সুস্থভাবে জন্মলাভ করেছে।
ডা. মো. নুর উদ্দিন রাশেদ বলেন, ডেলিভারি হওয়ার পর জন্ম নেয়া শিশুর জন্য জামা–কাপড়, মশারি ও ওই শিশুর মাকে উপহার দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। দিন দিন নরমাল ডেলিভারিতে প্রসূতিদের আগ্রহ বাড়ছে। কারণ হাসপাতালে নিরাপদে এ ডেলিভারি করানো হলে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে না। পাশাপাশি কোনো প্রকার খরচ করতে হয় না রোগীর স্বজনদের।