খুব বেশি প্রয়োজন না হলে কেউ কাউকে মনে রাখে না‘র যুগে দেশে ফেসবুকে যখন আমার জন্মোৎসব চলছে ঠিক সে সময়টিতে আমি দুবাই‘এ ফুলের রাজ্যে প্রজাপতির মতো উড়ে বেড়াচ্ছি। মনকে ফুলের পবিত্রতায় ভাস্বর করছি। চারদিকে এতো আলোকিত সুবাস, আর ভালোলাগায় ব্যাকুল হয়ে উঠছিলো সমস্ত সত্তা।
স্বজনদের স্বার্থহীন ভালোবাসার বিনিময়ে বিনম্র কৃতজ্ঞতায় নুয়ে পড়ছি। ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, ফোনকল, হোয়াটস্অ্যাপসহ নানা মাধ্যমে যাঁরা আমাকে শ্রদ্ধা, স্নেহ, মমতা, ভালোবাসার আবীর‘এ রাঙিয়েছেন তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ভাষা জানা নেই–শুধু এটুকু বলি, সবার এ ঋণের অর্ঘ্য আমি মাথায় তুলে রাখলাম। এতোটুকুন জীবনে আমার ব্যবহারে যদি কেউ প্রকাশ্যে কিংবা গোপনে কষ্ট পেয়ে থাকেন আমি বিনয়ের সাথে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। মানুষের সম্পর্ককে আমি সবসময় গুরুত্ব দিয়েছি ধনী–গরীবের কোনও বিভেদ না রেখেই।
সদা সচেষ্ট থেকেছি মানুষের উপকার করতে, আমার অপকার যারা করেছে, তাদেরও। কখনো মাথায় আসেনি কোন বিষয়ে প্রতিশোধ পরায়ণ হতে হবে।
সারাজীবন পজেটিভ চিন্তা করা মানুষ আমি–আমাকে যারা ভুল বুঝেছেন কোন কারণে বা অকারণে, কখনো কারো ভুল ভাঙাতে যাইনি। এ আমার ধাতে নেই। নিজেদের ভুল শুধরিয়ে কিংবা ভুল ভাঙার পরে যারা ফের এসেছেন কাউকে যেমন ফেরাইনি, অপমানও করিনি। আমার দিন শুরু হয় যেনো কারো ক্ষতির কারণ না হই–এই শপথে। আমার জন্য কেউ পা ভেজালে আমি তার জন্য হাঁটুজলে নামতে দ্বিধা করিনি। শঠতা, মিথ্যাবাদিতায় মোড়া অহংকারী মানুষগুলোকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেছি সব সময়। তারপরও, কালজয়ী কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ–এর ভাষায় ‘সারা জীবন কুকুর থেকে সাবধান থাকলাম, আর কামড় খেয়ে গেলাম মানুষের।‘
‘স্বার্থের লোভে যারা রূপ বদলায়, তারা কখনো মানুষের ভালো–মন্দ, লাভ–ক্ষতি উপলব্ধি করতে পারে না, তারা শুধু জানে সবকিছুর উর্ধ্বে তাদের স্বার্থটা।‘ যে বা যারা বলেছিলো সবাইকে এক ভাবা ঠিক না; প্রয়োজন শেষে তাদেরও বদলে যেতে দেখেছি।‘
আমি সঠিক এবং কঠিন সৎ। এটি আমার অহংকার। আমার যাপিত জীবনে অনেক ঠকেছি যেমন সত্য, তার‘চে বড় সত্য হলো সব বুঝে শুনেও কাউকে ঠকাই নি। এটা বলতে পারার মধ্যে যে গর্ব ও অপার শান্তি তা অন্যায়কারী ও প্রতারকরা কখনো উপলব্ধি করতে পারবে না। আমার তৃতীয় নয়ন বলে, কেউ ধোঁকা দিলে বুঝাই যায় সে ধোঁকা দিচ্ছে। সে যতই ল‘জিক্যাল এক্সকিউজ দিক না কেনো, ধোঁকার আলাদা একটা স্মে‘ল আছে; যা ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় কখনো মিস করে না এমনকি কেউ ইগনর করলে সেটাও। তারপরও প্রিয় কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্‘র ভাষায়, ‘যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হতে পারে, সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হতে পারে, তবুও ভালোবাসা থেকে যায়, হয়তো আক্ষেপে নয়তো অপেক্ষায়।‘ সবাই ভালো থাকবেন। নিজের জন্য নয়, মানুষের তরে বাঁচার মধ্যে অপার আনন্দ। অপরিসীম সুখ। আমি সর্বদা আনন্দ যাপন করি।