বিদ্যুতে বছরে ১২০ কোটি ডলার সাশ্রয় সম্ভব, দাবি গবেষণা সংস্থার

| বৃহস্পতিবার , ৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ at ১০:২৩ পূর্বাহ্ণ

বিদ্যুৎ খাতে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডবিপিডিবি বছরে ১২০ কোটি ডলার সাশ্রয় করতে পারবে বলে দাবি করেছে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান। ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালিসিস বা আইইইএফএ নামে এই প্রতিষ্ঠানটি গত রোববার ঢাকায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে এই সংস্কারের পথ নকশা তুলে ধরে।

প্রতিষ্ঠানটি মোটা দাগে চারটি কৌশলের কথা বলেছে যার মধ্যে আছে : যেমন শিল্প প্রতিষ্ঠানে ক্যাপটিভ জেনারেটরের সাহায্যে বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানো হয়, সেগুলোর অর্ধেক চাহিদা গ্রিডের বিদ্যুৎ দিয়ে মেটানো; নতুন তিন হাজার মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ গ্রিডে যুক্ত করা; লোডশেডিংয়ের পরিমাণ ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা এবং সরবরাহ ও বিতরণে অপচয় ৮ শতাংশের মধ্যে সীমিত রাখা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে বিদ্যুৎ খাতের ৬১ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়তি উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে, যা মাত্রাতিরিক্ত। অতিরিক্ত উৎপাদন সক্ষমতার জন্যেই বিপিডিবির ভর্তুকির বোঝা ক্রমে বাড়ছে। খবর বিডিনিউজের।

গবেষণা প্রতিবেদনটির লেখক ও আইইইএফএর বাংলাদেশের প্রধান জ্বালানি বিশ্লেষক শফিকুল আলম বলেন, আমরা ভবিষ্যতে অতিরিক্ত উৎপাদন সক্ষমতা কমাতে বিদ্যুতের চাহিদার প্রাক্কলনে জ্বালানি দক্ষতা বৃদ্ধিকে বিবেচনায় নিতে পরামর্শ দিয়েছি। রোডম্যাপে জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে নতুন বিনিয়োগ কমিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

প্রতিবেদনে দেখানো হয়, ২০১৯২০ থেকে ২০২৩২৪ অর্থবছর পর্যন্ত বিপিডিবির রাজস্ব আয় এক দশমিক ৮ গুণ বাড়লেও ব্যয় বেড়েছে ২ দশমিক ৬ গুণ। এই বছরগুলোতে সবমিলিয়ে ভর্তুকি দিতে হয়েছে এক লাখ ২৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। ২০২৩২৪ অর্থবছরেই ভর্তুকি ছিল ৩৮ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা। এই ভর্তুকি সত্ত্বেও, পাঁচ অর্থবছরে বিপিডিবির লোকসান ছিল ২৩ হাজার ৬৪২ কোটি টাকা।

শফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশের উচিত গ্যাসচালিত যন্ত্রপাতি থেকে ধীরে ধীরে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতিতে স্থানান্তরিত হওয়া। যেমন, গ্যাসচালিত বয়লারের পরিবর্তে ইলেকট্রিক বয়লার ব্যবহার করা। এতে বিপিডিবি বাড়তি বিদ্যুৎ বিক্রি করে রাজস্ব বাড়ানোর পাশাপাশি অলস বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর ভাড়া (ক্যাপাসিটি পেমেন্ট) কমাতে পারবে।

আইইইএফএ মনে করছে, ২০৩০ সালে বাংলাদেশে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা হতে পারে ২৫ হাজার ৮৩৪ মেগাওয়াট হতে পারে। আইইইএফএর রোডম্যাপে নতুন জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিনিয়োগ বন্ধ এবং তেলচালিত কেন্দ্রগুলোর ব্যবহার মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৫ শতাংশের মধ্যে সীমিত করে আনারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এসব পদক্ষেপের পাশাপাশি যদি সাড়ে ৪ হাজার মেগাওয়াটের জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক পুরোনো বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করা হয়, তাহলেও বাংলাদেশের ৩৫ হাজার ২৩৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা থাকবে বলে প্রতিবেদনে ধরা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসরকারি সব চাকরির আবেদন ফি হচ্ছে ২০০ টাকা
পরবর্তী নিবন্ধদীঘিনালায় কৃষকদের মাঝে সার ও বীজ বিতরণ