বাংলাদেশের প্রায় সব বিদ্যালয়ে শিক্ষক স্বল্পতার কারণে, গেস্ট টিচার নিয়োগ দেয়া হয়। এই সকল গেস্ট টিচার আবার মনোনীত হন বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের ইচ্ছে মতো। পড়ানোর যোগ্যতা না থাকলেও এদের নিয়োগ দেয়া হয়। এদের মধ্যে আবার কেউ কেউ খুব ভালো করে পড়ায়। মানে মানসম্মতভাবে পড়াতে খুব চেষ্টা করে। যাই হোক, এই গেস্ট টিচাররা কিন্তু থাকে বলে স্কুলের এমপিওভুক্ত টিচাররা কিছুটা কম চাপে থাকে। গেস্ট টিচাররা সব কাজই করে, যেমন একজন এমপিওভুক্ত টিচার করে থাকেন। কিন্তু গেস্ট টিচাররা সম্মানী পায় স্কুল থেকে। সরকারি টাকাটা এরা পায় না। আর গেস্ট টিচাররা সম্মানী যা পায়, একজন টিচার হিসেবে সেটা ভাবতেই আমার লজ্জা লাগে। আর এটা নির্ভর করে স্কুল পরিচালনা কমিটির উপর এবং সর্বোপরি স্কুল কমিটির চেয়ারম্যান এটা নির্ধারণ করেন।এই দুর্মূল্যের বাজারে স্কুল কমিটি যখন সমান তালে ভারসাম্য রেখে সম্মানী না বাড়ায়, তখন এই গেস্ট টিচাররা কিছু বলতে পারে না। পাছে যদি চাকরিটুকুও যায়, সেই ভয়ে। এক কথায় বলতে গেলে, কমিটির সভাপতি যেন করুণা করে রেখেছেন গেস্ট টিচারদের। প্রশ্ন হলো, গেস্ট টিচাররা কি নিজের ইচ্ছায় চাকরিটা নেয়, নাকি রেজুলেশনের মাধ্যমে নেয়। আমার জানা মতে, রেজুলেশনের মাধ্যমে নেয়। কিন্তু তারা গেস্ট টিচারদের একটা মানসম্মত সম্মানী দিতে এতো অনীহা দেখায় কেন? পরিচালনা কমিটির লোকেরা কি জানেন না, এই গেস্ট টিচাররা হয়ে থাকেন স্কুলের অন্যান্য টিচারদের মতোই।এদের সম্মান করে যথাযথ সম্মানী না দিলে, এরা পড়াবে নাকি টাকা অন্য কিভাবে ইনকাম করা যায় তা ভাববে, এটা কমিটির মানুষগুলোর মাথায় ঢুকে না কেন?
প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান আর পরিচালনা কমিটির সভাপতি, সদস্যবৃন্দ যদি এ ব্যাপারে একটু মনোযোগ দেন বাস্তবতার নিরিখে, তবে আমার মনে হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়াশোনার মান দিন দিন বাড়বে।
রাজীব দাশ
সহকারী শিক্ষক,
সিংহরা রামকানাই উচ্চ বিদ্যালয়।