অতিসম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যম ও জনমত সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য–উপাত্তে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পরাশক্তির অযাচিত মন্তব্য–হস্তক্ষেপ দেশবাসীকে যারপরনাই উদ্বিগ্ন করছে। বিদেশি কূটনীতিকদের আচরণ জেনেভা কনভেনশন দ্বারা সীমাবদ্ধ থাকলেও এর ব্যত্যয় কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোট ও মানবাধিকার বিষয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত উন্নত–উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের প্রকাশ্যে কূটনীতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত কার্যকলাপে জাতি অতীব মর্মাহত। এটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া যে রাষ্ট্রের যেকোন নিবন্ধিত–জনসমর্থিত রাজনৈতিক দল অন্য দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে। একই সঙ্গে এটি অনস্বীকার্য যে সরকার বা সরকারি দল রাজনৈতিক–অর্থনৈতিক–সামাজিক–সাংস্কৃতিক সম্পর্ককে অধিকতর সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে অন্য কোন রাষ্ট্রের সরকার বা দলের সাথে সুসম্পর্ক বেগবান করার জন্য দেশ–জনগণের কল্যাণে যেকোন ধরনের যৌক্তিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। ধারাবাহিকতায় সম্পর্ককে অধিকমাত্রায় দেশবিরোধী কর্মযজ্ঞে প্রবাহিত করা বা অতিশয় বিদেশনির্ভর রাজনীতির অভিযোগ কোনভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। এই ধরনের অযাচিত–অনাকাঙ্ক্ষিত–অবাঞ্চিত সম্পর্ক স্থাপনের সুযোগে বিদেশিরা অনধিকার চর্চায় ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ে। তথাকথিত কিছু রাজনৈতিক দল–নেতারা দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের দ্বারস্থ হয়ে তাদের অনৈতিক হস্তক্ষেপের বিস্তার অসহনীয় করছে বলে প্রবল জনশ্রুতি রয়েছে। সাধারণ মানুষের ধারণা, গণ প্রত্যাখিত ও প্রচন্ড অজনপ্রিয় কতিপয় ব্যক্তি বিশেষ–দল–প্রতিষ্ঠান বিদেশীদের কাছে দেশের বদনাম করার জন্য অবৈধ–অনৈতিক পন্থায় উপার্জিত–পাচারকৃত অর্থ ব্যবহারে লবিস্ট নিয়োগের মাধ্যমে দেশের সুনাম ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর পরস্পরবিরোধী অবস্থানের সুযোগ কাজে লাগাতে মরিয়া প্রভাবশালী দেশগুলো। অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন এবং গণতন্ত্রের কথা বলে তারা নানাভাবে রাজনীতির প্রভাব বিস্তারের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে হাজির করছে তাদের মনগড়া নানান ফর্মুলা। কিস্তু এদেশের জনগণের চাওয়া পাওয়া বিবেচনায় তারা এসব করছে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। ভূ–রাজনীতিতে বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থান গুরুত্বের শীর্ষে। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাকে কাজে লাগিয়ে প্রভাবশালী দেশগুলো তাদের নিজস্ব এজেন্ডা–লক্ষ্য পূরণে তৎপর। সাধারণ মানুষের আবেগকে ব্যবহার করে কোনো কোনো দেশ আমাদের রাজনীতির অন্দর মহলে ঢুকে পড়েছে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে কথিত দেশসমূহ নিচ্ছে নানা গণবিরোধী অনভিপ্রেত পদক্ষেপ। তাদের কর্মকাণ্ডে দেশের কোনো কোনো দল হয়তো উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছে; কিন্তু মনে রাখতে হবে ঐসব দেশ তাদের নিজেদের স্বার্থ ছাড়া কিছুই করে না। তাই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে প্রভাবশালী দেশগুলোর ভূমিকাকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া উচিত। আমাদের রাজনীতিতে তারা যেন মুরুব্বির ভূমিকায় আসতে না পারে। দেশের রাজনৈতিক দলগুলো যেভাবে বিদেশীদের কাছে ন্যাস্ত করেছে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে দেশপ্রেমিক জনগণ রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি ক্ষুব্ধ হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। অতীতে বিদেশিদের শাসন–শোষণ ও দেশবিরোধী চক্রান্ত আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন দেশের প্রতিটি মানুষের হৃদয় গভীরে প্রোথিত। সুতরাং অনৈতিকভাবে কিছু চাওয়া বা রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার জন্য দলগুলো যতবেশি বিদেশি শক্তির উপর নির্ভর করবে ততটাই তারা গণবিচ্ছিন্ন হবে।
এটি প্রতিষ্ঠিত সত্য যে, অদম্য উন্নয়ন অগ্রগতিতে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশ ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উঁচুমার্গের মর্যাদায় সমাসীন হয়েছে। দেশের পবিত্র সংবিধানে জনগণ রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতার উৎস হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত এবং দেশের আপামর জনসাধারণ থেকে শুরু করে মহামন্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী–স্পিকার–মন্ত্রী–এমপি, সংসদ উপনেতা–বিরোধী দলীয় নেতা–রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন শ্রেণির পেশা–বুদ্ধিজীবী–ব্যবসায়ীসহ সকল নাগরিকবৃন্দের সংবিধান সম্মত যাবতীয় অধিকার অবারিত ভোগ করা সর্বত্রই সুনিশ্চিত। দুঃখজনক হলেও সত্য, বর্তমান গণতান্ত্রিক–উদারনৈতিক সরকারের কোন ধরনের প্রভাব ব্যতিরেকে দেশের একজন বিশিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক উত্থাপিত একাধিক আর্থিক অনিয়ম–দুর্নীতির মামলা–অভিযোগ দেশীয় প্রচলিত আইনে যথাযথভাবে চলমান থাকলেও, বিচারিক কার্যক্রম তাৎক্ষণিকভাবে স্থগিতের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবরে শতাধিক নোবেল বিজয়ীসহ ১৭০ জনের বেশি বিশ্বনেতার উদ্দেশ্য প্রণোদিত খোলা চিঠি প্রকাশ অত্যন্ত দুঃখজনক। আকাশচুম্বী মর্যাদার ব্যক্তিবিশেষের পক্ষে মামলা এবং অভিযোগ থেকে দায়মুক্তির জন্য অপাংক্তেয় প্লাটফর্মের অপব্যবহারে নিজের ত্রুটি আড়াল করতে কথিত বিশ্ব নেতৃবৃন্দের নিকট দেশের বিরুদ্ধে মনগড়া তথ্য উপস্থাপনে নতুন করে ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত কিনা তা ভেবে দেখার বিষয়।
২৮ আগস্ট ২০২৩ কোন একটি বিশেষ ব্লগে প্রকাশিত ঐ চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘আমরা আপনার আছে নোবেল বিজয়ী, নির্বাচিত কর্মকর্তা, ব্যবসায় ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ এবং বাংলাদেশের বন্ধু হিসেবে লিখছি। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর থেকে আপনার জাতি যেভাবে প্রশংসনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে, আমরা তার প্রশংসা করি। তবে আমরা সম্প্রতি বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের যে হুমকি দেখেছি, তাতে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা বিশ্বাস করি যে, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়া এবং নির্বাচনের প্রশাসন যেন দেশের সব প্রধান দলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয় তা অত্যন্ত গুরুত্বপূণ।’ তাদের ভাষায় বর্তমান প্রেক্ষাপটে মানবাধিকারের জন্য যে হুমকিগুলো আমাদেরকে চিন্তিত করে, তার একটি হচ্ছে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী একজন বিশিষ্ট ব্যক্তির মামলা। সম্প্রতি তাকে যেটির লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে, সেটিকে আমরা ক্রমাগত বিচারিক হয়রানি বলে মনে করি, যা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। এ ধরনের চিঠি অতীতেও ৪০ জন বিশ্বনেতার পক্ষ থেকে প্রেরিত হয়েছিল। এছাড়াও চিঠিতে বিশ্বনেতাদের আন্তর্জাতিকভাবে আইনবিশেষজ্ঞ হিসেবে স্বীকৃত ব্যক্তিদের নিয়ে তৈরি একটি নিরপেক্ষ বিচারিক প্যানেল দ্বারা অভিযোগগুলো পর্যালোচনা করার আহ্বান জানানোর বিষয়টি যেকোন স্বাধীন–সার্বভৌম রাষ্ট্রের পবিত্র সংবিধান–আদালত–বিচারব্যবস্থার উপর সরাসরি হস্তক্ষেপের শামিল।
৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশের প্রথিতযশা সম্মানিত ৫০ জন বিশিষ্ট সম্পাদক। এক যৌথ বিবৃতিতে তাঁরা ঐ চিঠিকে বাংলাদেশের স্বাধীন বিচারব্যবস্থার উপর হস্তক্ষেপ বলে অভিহিত করেন। বিবৃতিতে সম্পাদকবৃন্দ বলেন, ‘গত ২৮ আগস্ট কয়েকজন নোবেল বিজয়ী, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী এবং সুশীল সমাজের সম্মানিত সদস্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া খোলাচিঠিতে দেশের শ্রম আইনে ড. মুহাম্মদ ইউনুসের বিরুদ্ধে চলমান মামলা স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। এটি একটি সার্বভৌম দেশের স্বাধীন বিচারব্যবস্থার উপর অযাচিত হস্তক্ষেপ, আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। এ ধরনের খোলাচিঠি দিয়ে তাঁরা অনৈতিক, বেআইনি ও অসাংবিধানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীন বিচারব্যবস্থার উপর হস্তক্ষেপ করেছেন বলে আমরা মনে করি।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এ ধরনের বিবৃতি বা খোলাচিঠি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএরও) এবং বাংলাদেশের শ্রমিকদের প্রদত্ত অধিকার–সংক্রান্ত বিধানাবলির সম্পূর্ণ পরিপন্থী। আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানিত ও নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের এ ধরনের বিবৃতি ও চিঠি অনাকাঙ্ক্ষিত–অনৈতিক। একজন অপরাধ করলে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে না এবং বিচার করা যাবে না, এমন দাবি ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পরিপন্থী। ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ দেশের ১৭১ জন বিশিষ্ট নাগরিক–বুদ্ধিজীবী–পেশাজীবীরাও প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে দেয়া খোলা চিঠিতে বিচার প্রক্রিয়া স্থগিতের দাবি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব এবং স্বাধীন বিচার বিভাগের উপর স্পষ্ট হুমকি হিসেবে উল্লেখ করে দেশের বিবেকবান নাগরিক হিসেবে তাঁরা এ বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
দেশের সচেতন মহল সম্যক অবগত আছে, স্বাধীনতার পূর্ব থেকে এ দেশের রাজনীতিতে স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক অপশক্তির চক্রান্ত–ষড়যন্ত্রে বিদেশিদের হস্তক্ষেপ বিরাজমান ছিল। পরামর্শকের আচ্ছাদনে বিদেশিদের অবাধ বিচরণের সুযোগে মুঘল শাসকদের থেকে ভারতবর্ষ ইংরেজদের হস্তগত হওয়ার ঘটনা কারো অজানা নয়। পাকিস্তান আমলেও দেশ পুরোপুরি বিদেশীদের রাজনৈতিক ক্ষেত্র হিসেবে পরিণত হয়। কিন্তু স্বাধীনতাত্তোর মুক্তির মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশকে অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে বিদেশী প্রভাবমুক্ত রাখায় সচেষ্ট ছিলেন। এমনকি বিভিন্ন প্রতাপশালী রাষ্ট্র–মন্ত্রী–নেতাকে পর্যন্ত তিনি এদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর সুযোগ দেননি। প্রাসঙ্গিকতায় ১৯৭৪ সালের ৪ মার্চ কুমিল্লার দাউদকান্দির এক জনসভায় বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এই উপমহাদেশে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা– আমরা শান্তিতে বসবাস করতে চাই। আমরা কারো সঙ্গে কোনো বিবাদে লিপ্ত হতে চাই না। আমরা আত্মমর্যাদা নিয়ে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে একে অপরের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বসবাস করতে চাই। আমাদের ব্যাপারে কেউ হস্তক্ষেপ করুক তা আমি চাই না, আমরা অপরের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে চাই না।’
২৮ আগস্ট ২০২৩ গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু তনয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত নির্ভীক–সাহসীকতায় কথিত বিশ্বনেতাদের বিচারিক কার্যক্রম নিয়ে অস্বস্তি বা অবিশ্বাসের বেড়াজাল অতুচ্ছ করে কোন অন্যায় বা অসামঞ্জস্য থাকলে বিশেষজ্ঞ ও আইনজীবী পাঠিয়ে সব দলিল দস্তাবেজ খতিয়ে দেখার জন্য বিবৃতিদাতাদের উদ্দেশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন। উক্ত সম্মেলনে প্রদত্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘কেউ যদি ট্যাক্স না দেয় আর শ্রমিকের অর্থ আত্মসাৎ করে এবং সেই শ্রমিকের পক্ষে শ্রম আদালতে মামলা হলে আমাদের কি হাতে আছে যে সে বিচার বন্ধ করে দেব? ……… বাংলাদেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং সবকিছু আইন মতো চলে। আর এদেশে বিচারাধনি বিষয়ে আমরা কথা বলি না। তাছাড়া আমি কে মামলা প্রত্যাহার করার?’ তিনি আরও বলেন, ‘আদালতের উচিৎ স্বাধীনভাবে কাজ করা, ন্যায় বিচার করা। কে বিবৃতি দিলো তাতে আদালত প্রভাবিত হবে কেন? আদালত ন্যায় বিচার করবে। আদালত স্বাধীনভাবে চলবে। ভয় পেলে তো চলবে না। শ্রমিকদের যা পাওনাতো দিতে হবে।’
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ়চেতা বক্তব্যে সুস্পষ্ট উচ্চারিত; কোন নিয়মের ব্যত্যয় ঘটলে বা বিচারিক কার্যক্রমে কোন ধরনের অস্বচ্ছতা বা অবৈধ প্রভাবে বেআইনি কার্যক্রম পরিচালিত হলে বিশ্বের যেকোন প্রান্ত থেকে বিশেষজ্ঞদের বাংলাদেশে এসে আনীত অভিযোগ তদারকি করার জন্য তাঁর আশ্বাস যুগান্তকারী মাইলফলক হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত। আইনের শাসন সুরক্ষা ও দেশের মান মর্যাদা পর্যাপ্ত বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এধরনের বক্তব্য বিশ্ববাসীসহ দেশের জনগণকে উচুমাত্রিকতায় উদ্দীপ্ত করছে। এটি প্রত্যাশিত সত্য যে, বাংলাদেশ কখনো কোন অসত্য অন্যায়ের কাছে মাথা নত করে নি। হৃদয়ে শত ক্ষত থাকা সত্ত্বেও ক্ষমার আদর্শে অতীতের সকল কদর্য কর্মকাণ্ডকে ভুলে গিয়ে ‘বৈরিতা নয়, বন্ধুত্বের হাত’কে শক্তিশালী করার জন্য সদা প্রস্তুত। পারস্পরিক সহযোগিতা–সহমর্মিতা–অসাম্প্রদায়িকতা–মানবিকতা–গণতান্ত্রিক ধারায় উন্নয়ন অগ্রগতিকে সর্বাধিক প্রাধান্য দিয়ে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার ব্রতে কোন অপকর্মই সরকার ও জনগণকে পিছু হঠাতে পারবেনা। জাতীয় কবি নজরুলের ভাষায় ‘অসত্যের কাছে কভু নত নাহি হবে শির, ভয়ে কাপে কাপুরুষ লড়ে যায় বীর’ উচ্চারণে দেশের আপামর জনগণের ঐক্যবদ্ধ শক্তিই হবে সমুচিত প্রত্যাশিত উদ্যোগ।
লেখক : শিক্ষাবিদ, সাবেক উপাচার্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়