বিক্ষোভে উত্তাল চীন, চলছে ধরপাকড়

রাস্তায় রাস্তায় পুলিশ প্রহরা, ‘মারধরের পর’ গ্রেপ্তার বিবিসির সাংবাদিক

| মঙ্গলবার , ২৯ নভেম্বর, ২০২২ at ৯:০৭ পূর্বাহ্ণ

 

 

কোভিড বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে চীন। বেইজিং ও সাংহাইসহ বিভিন্ন নগরীর বিক্ষোভস্থলগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। রাস্তায় রাস্তায় দেখা যাচ্ছে পুলিশ প্রহরা। চলছে ধরপাকড়ও। সাংহাইয়ে বিক্ষোভ চলার সময় বিবিসির একজন সাংবাদিককে মারধরের পর গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় পুলিশ। গত কয়েকদিনে চীন জুড়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যেমন লাফিয়ে বাড়ছে তেমনি ভাইরাসের বিস্তার রোধে সরকারের আরোপ করা কঠোর বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে আন্দোলনও জোরদার হয়েছে। বিক্ষোভের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। সরকারবিরোধী এমন স্বতঃস্ফূর্ত গণআন্দোলন চীনে একপ্রকার বিরলই বলা যায়। করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে সরকারের জিরো কোভিড নীতির অংশ হিসেবে গত কয়েকমাস ধরে চীন জুড়ে বিভিন্ন এলাকায় কঠোর লকডাউন চলছে। কোথাও কোথাও এমনটি দুইতিন মাস ধরে টানা লকডাউন জারি থাকার খবরও পাওয়া যাচ্ছে। লকডাউনের সময় বাসিন্দাদের তাদের আবাসিক ভবনের প্রাঙ্গণ থেকেও বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। দিনের পর দিন লকডাউন চীনে করোনাভাইরাস সংক্রমণে মৃত্যুর হার কমাতে পারলেও সংক্রমণের বিস্তার থামিয়ে দিতে পারেনি। বরং রোববার টানা পঞ্চম দিনের মত দৈনিক শনাক্তে নতুন রেকর্ড হয়েছে। চীনে রোববারও নতুন করে ৪০ হাজার ৫২ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। যারা স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত হয়েছেন।

এদিকে, মাসের পর মাস স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে না পারার কারণে জনমনে অসন্তোষ বাড়ছে। কাজের অভাবে মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত শ্রেণীর মানুষরা আর্থিক ও খাদ্য সংকটে পড়ার কথাও বলছেন। যদিও সরকার থেকে দাবি করা হচ্ছে, যে এলাকায় লকডাউন চলছে সেখানে সরকার থেকে খাদ্যপণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।

কিন্তু বাসিন্দারা বলছেন, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। লকডাউনের নেতিবাচক প্রভাব দেশটির গোটা অর্থনীতিতেও পড়েছে। এ অবস্থায় বিক্ষোভকারীরা বলছেন, কেভিড১৯ নিয়ন্ত্রণে সরকার যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে তা অবৈজ্ঞানিক ও অবাস্তব।

চীনে কঠোর লকডাউনের বিরুদ্ধে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই জনগণের সড়কে নেমে বিক্ষোভ করার খবর পাওয়া যাচ্ছে।

বিক্ষোভকারীরা সরকার এবং দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বিরুদ্ধেও স্লোগান দিচ্ছেন। চীন শির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হতে খুব একটা দেখা যায় না। কারণ, দেশটির আইনে সরকার নিয়ে সরাসরি কোনও সমালোচনার ফল হতে পারে কঠোর শাস্তি।

রোববারের বিক্ষোভের বিষয়ে বিবিসি জানায়, ওইদিন রাতে সাংহাইয়ে শত শত বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়ার চেষ্টা করে। ওই সময় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। বিবিসির সাংবাদিক এড লরেন্স রোববার নগরীর প্রধান বিক্ষোভক্ষেত্র থেকে খবর সংগ্রহ করছিলেন। ওই সময়ে পুলিশ তাকে ধরে মারধর করে এবং গ্রেপ্তার করে কয়েক ঘণ্টা আটকে রাখে। পরে অবশ্য তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে বিবিসি থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, দায়িত্ব পালনরত আমাদের একজন সাংবাদিকের উপর হামলা চালানো হয়েছে যা খুবই উদ্বেগজনক। পরে চীনা কৃর্তপক্ষ জানান, লরেন্স পুলিশকে তার প্রেস কার্ড দেখাননি। তিনি নগরীর উলুমুকি মিডল রোডে বিক্ষোভের ভিডিও করছিলেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়, বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা লরেন্সকে জাপটে মাটিতে ফেলে চেপে ধরেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিদ্যুতের টাওয়ারে ঝুলছে প্লেন, অন্ধকারে এক লাখ বাড়ি
পরবর্তী নিবন্ধমা ও শিশু হাসপাতালের অটিজম ও শিশু বিকাশ কেন্দ্রে চিটাগাং উইমেন এসো’র প্রতিনিধি দল