বিএসআরএম স্টিলমিলে ৬ মাসে ২৩ বার চুরি

মীরসরাই প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ৬ মার্চ, ২০২৫ at ১১:৪৮ পূর্বাহ্ণ

ঢাকাচট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন মীরসরাই উপজেলার সোনাপাহাড় এলাকায় প্রায় দুই দশক আগে গড়ে উঠা বিএসআরএম স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজ এই অঞ্চলের সর্ববৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান। প্রায় সহস্র একর এলাকা জুড়ে গড়ে উঠা এই শিল্প পার্ক ঘিরে ইতিমধ্যে গড়ে উঠছে বহুমুখী কর্মসংস্থান। কিন্তু শিল্প প্রতিষ্ঠানটির আশেপাশে ঘাপটি মেরে থাকা চোর চক্রের কারণে আতঙ্কে আছেন শিল্প প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারীরা। গত ৬ মাসে ২৩ বার মালামাল চুরি, বাগান পুড়িয়ে দেয়া, হামলায় নিরাপত্তাকর্মীদের আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

বিএসআরএম স্টিল পার্কে কর্মরত একাধিক সিকিউরিটি কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, গত প্রায় ৬ মাসে উক্ত প্রতিষ্ঠানের ২৩ টি চুরির ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের সিকিউরিটি এসিসটেন্ট ম্যানেজার সাকিল উদ্দিন জানান, গত ১ মার্চ দিবাগত রাতে বিএসআরএম এর কিছু মালামাল খিলমুরারী গ্রামে চুরির মালামাল ভাগাভাগির ঘটনাকে নিয়ে এলাকার জনৈক পারভেজকে প্রতিপক্ষের লোকজন পিটিয়ে রক্তাক্ত করে। এসময় তার দেয়া তথ্য মতে, এলাকার নুরু, ইলিয়াছ, নাজিম, জীবনসহ একটি পক্ষের সাথেই চুরির মালামাল ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে। অপর সিকিউরিটি কর্মকর্তা জসীম উদ্দিন জানান, বিভিন্ন সময় বিএসআরএম এর লোহা ও বিভিন্ন স্ক্র্যাপ মালামাল চুরি করতে গিয়ে ওরা দা, কিরিছ, ছুরি এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েও হামলা করে। এতে আমাদের নিরাপত্তা কর্মীরা আতংকিত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, গত কয়েক মাসে এভাবে ২৩ বার মিলের মালামাল চুরির অভিযোগ স্থানীয় জোরারগঞ্জ থানায় প্রদান করা হয়। আবার থানার পূর্বের ওসি এবং বর্তমান ওসি এসে দফায় দফায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও কোনো আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। প্রতিষ্ঠানের অপর সিকিউরিটি কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, কয়েকদিন পূর্বে আমাদের এগ্রিকালচার প্রজেক্টের বাগানে অজ্ঞাত দুস্কৃতকারীরা আগুন লাগিয়ে সহস্রাধিক ফলজ ও বনজ গাছ পুড়িয়ে দেয়। তিনি বলেন, আমাদের মিলের কেবল চুরি থেকে শুরু করে স্ক্র্যাপ এবং প্রয়োজনীয় মালামালও চুরি করে নিয়ে যেতে প্রায়ই হানা দিচ্ছে এ চোরচক্র। আবার ওরা নিজেরা ভাগাভাগি নিয়ে খুনখারাবির মতো ঘটনারও সৃষ্টি হচ্ছে প্রায়ই। এমতাবস্থায় দেশের এমন স্বনামধন্য শিল্প প্রতিষ্ঠানের সুনামসহ এলাকার ভাবমূর্তিও বিপন্ন হতে চলেছে। তবুও আমরা আইন এবং স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে আস্থা রাখতে চাই। এই বিষয়ে জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম বলেন, আমি সম্প্রতি যোগদান করেছি। চোরচক্রের হামলার বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তিনি বলেন, আমার পর্যবেক্ষণে মনে হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির সিকিউরিটি বিভাগের কিছু দুর্বলতা রয়েছে। বিশেষ করে সীমানাবিহীন অরক্ষিত কয়েকটি এলাকা রয়েছে। যেসব এলাকায় চুরির ঘটনা ঘটছে। সেখানে সিসিটিভি ও পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখলেই চোরচক্র ও হামলারীদের শনাক্ত করা সহজ হবে। আমরা অপরাধীদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধব্যাটারি গলি-বহদ্দারহাটে ১২ দোকানদারকে জরিমানা
পরবর্তী নিবন্ধপ্রধান উপদেষ্টার ২ জন নতুন বিশেষ সহকারী নিয়োগ