তথ্য ও সমপ্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আমাদের ভিত হচ্ছে জনগণ। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণের রায় নিয়ে সরকার গঠন করেছে পরপর তিনবার। কোন বিদেশি শক্তি আমাদেরকে ক্ষমতায় বসায়নি, কোন বিদেশি শক্তি বাংলাদেশের সরকার পরিবর্তনও করতে পারে না। বিএনপি বিদেশিদের পদলেহন করে বলে তাদের মন্তব্য নিয়ে বিএনপির এত মাথাব্যথা। তিনি বলেন, বিএনপি বিভিন্ন দূতাবাসে রাত-বিরাতে ধর্ণা দেয়। তারা যত না জনগণের কাছে যাচ্ছে, তারচেয়ে বেশিরভাগ রাতের বেলা দূতাবাসে গিয়ে ধর্ণা দেয়। ধর্ণা দিয়ে তাদের হাতে-পায়ে ধরে বিএনপি। হাতে-পায়ে ধরে বলেন, আপনারা কিছু বলুন। সেই কারণে কেউ কেউ কোন কোন সময় বক্তব্য দেন। এই মন্তব্য করার জন্য বিএনপিই তাদের উৎসাহিত করেন।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে আগামী ৪ঠা ডিসেম্বর চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা সফল করার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এবং চট্টগ্রামের সংসদ সদস্যদের সমন্বয় সভায় বক্তব্য রাখেন তথ্য ও সমপ্রচার মন্ত্রী। এসময় বিদেশিদের বিভিন্ন বক্তব্য বর্তমান সরকারের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর এমন বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ একথা বলেন।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন চৌধুরী এমপির সঞ্চালনায় সমন্বয় সভায় বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন এমপি। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রথমত বিভিন্ন রাষ্ট্রদূতদের আমাদের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে বক্তব্য রাখার সময় অবশ্যই কূটনৈতিক শিষ্টাচার মেনে চলা উচিৎ। আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাষ্ট্রদূতকে স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে। এরপরও যখন বিএনপিসহ তাদের দোসররা তাদের কাছে গিয়ে ধর্ণা দেই, সেই কারণে কেউ কেউ কোন কোন সময় বক্তব্য দেন। এই মন্তব্য করার জন্য বিএনপিই তাদের উৎসাহিত করেন। তিনি বলেন, কোন বিদেশি কি বলল, কে কি করল তা নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। যারা বিদেশী শক্তির পদলেহন করে তারা এরকম বক্তব্য রাখতে পারেন। আমির খসরু সাহেবরা বিদেশীদের পদলেহন করেতো, সে জন্য বিদেশীরা কি বলল, না বলল সেটা নিয়ে তাদের এত মাথাব্যথা।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি সারাদেশে নানাধরণের সমাবেশ করছে। এই সমাবেশ করতে গিয়ে তারা চাঁদাবাজি করছে। চট্টগ্রামের সমাবেশের জন্য তারা ব্যাপক চাঁদাবাজি করেছে। চট্টগ্রামের বহু ব্যবসায়ী আমাদের কাছে অভিযোগ করে বলেছে তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে বিএনপি চাঁদা আদায় করেছে। আবার জনসভার নামে তারা বিভিন্ন জায়গায় পিকনিকের মত আয়োজন করছে।
তিনি বলেন, আগামীকাল শনিবার তাদের কুমিল্লায় জনসভা। সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা সাক্কু বলেছেন তার পরিবারের ৭৬টি ফ্ল্যাট নেতাকর্মীদের থাকার জন্য দিয়েছেন। প্রথমত ৭৬টি ফ্ল্যাট কিভাবে আসল সেটা একটা বড় প্রশ্ন। বিভিন্ন জায়গা থেকে নেতাকর্মীদের এনে সেখানে তারা পিকনিকের আয়োজন করছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন শুক্রবার যশোরে আওয়ামী লীগের জনসভা জনসমুদ্রে রূপান্তরিত হয়েছে। স্টেডিয়াম ছাড়িয়ে জনসভা বহুদূর পর্যন্ত জনস্রোত ছিল। চট্টগ্রামের জনসভাও পলোগ্রাউন্ড ছাড়িয়ে বহু বিস্তৃত হবে। পলোগ্রান্ডে যত মানুষ হবে তারচে বহুগুণ বেশি মানুষ হবে পলোগ্রাউন্ডের বাইরে। লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাবেশ ঘটবে। সেই জনসভাকে সফল করার উদ্দেশ্যেই আজকে আমরা এখানে বসেছি। সমন্বয় সভায় উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী, সংসদ সদস্য এম এ লতিফ, মোস্তাফিজুর রহমান, মাহফুজুর রহমান মিতা, দিদারুল আলম, খাদিজাতুল আনোয়ার সনি, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান প্রমুখ।