আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি বলেছেন, বিএনপি–জামায়াতের আন্দোলন মোকাবিলা করার জন্য সবাইকে এক থাকতে হবে। বিএনপি–জামায়াত এখনো দুঃসাহস দেখাচ্ছে। তারা এখনো শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেয়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন কর্মী থাকতে শেখ হাসিনার কোনো ক্ষতি হতে দেব না। আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিগত দিনে কমপক্ষে ২১ বার হত্যার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। সেই অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে আল্লাহর রহমতে শেখ হাসিনা বেঁচে আছেন।
আমাদের সকলের মঙ্গল, কল্যাণ ও প্রগতির জন্য তিনি বেঁচে থাকবেন। ঐতিহাসিক লালদীঘি ময়দানে গতকাল বিকেলে জামায়াত–বিএনপির অরাজকতা ও নাশকতার বিরুদ্ধে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন। বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ওয়াসিকা বলেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের জনগণ ও উন্নয়নের জন্য রাজনীতি করে। সবসময় স্বাধীনতাবিরোধীরা নেত্রীকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে। আমরা বাংলাদেশের উন্নয়ন ব্যাহত হতে দেব না। জনগণই আওয়ামী লীগের শক্তি। কর্মীরাই আওয়ামী লীগের শক্তি। বাংলাদেশে গণতন্ত্র ছিল, আছে। শেখ হাসিনার চেয়ে কেউ দেশ সম্পর্কে ভালো বুঝে সেটা বিশ্বাস করি না। জনগণ জানে দেশের উন্নয়নে কে সবচেয়ে কল্যাণকর। জনগণ তা বুঝে বলেই দেশের উন্নয়ন এখনো অব্যাহত রয়েছে। শুধু আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকলেই হবে। নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যারা হঠাৎ করে উড়ে এসে জুড়ে বসেছেন তাদেরকে সংকটের সময় পাওয়া না–ও যেতে পারে। তাই ত্যাগীদের মূল্যায়ন করতে হবে। বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সবাইকে কাজ করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বিএনপির উদ্দেশে বলেন, মার্কিন অ্যাম্বাসেডরের বাসায় ডিনার খেয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখবেন, ড. ইউনূস সাহেব এসে আপনাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবেন–এসব ভুলে যান। এই বাংলাদেশ ইউনূস সাহেবের কথায় চলে না, খালেদা জিয়ার কুলাঙ্গার পুত্র তারেকের কথায় চলে না। বাংলাদেশ চলে শেখ হাসিনার কথায়। আপনারা শুধু দেখবেন, শুধু চেয়ে চেয়ে দেখবেন, আমরা আবার ক্ষমতায় যাব।
তিনি বলেন, একমাত্র বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া আওয়ামী লীগে আর কেউ অপরিহার্য নয়। তিনিই একমাত্র নেত্রী এবং আমরা সকলেই তার বিশ্বস্ত কর্মী। এটাই আমাদের অহংকার। তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অতীতে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। এখনো ষড়যন্ত্র হচ্ছে এবং ষড়যন্ত্র হবে। তবে কোনো ষড়যন্ত্র আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে পারেনি। বরং যারা আওয়ামী লীগকে ধাক্কা দিতে চেয়েছে তারাই ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। সফল জনসভা আয়োজনে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন সকলের সাথে সমন্বয় করে যে প্রতিবাদী জনসভা করেছেন তা দলীয় ঐক্যকে শক্তি ও সাহস যোগাবে।
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ সকল সময় অপ্রতিদ্বন্দ্বী এবং সব ধরনের প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে জনগণকে সাথে নিয়ে সত্য, সুন্দর, কল্যাণ ও প্রগতিকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। আজকের এই জনসভায় সর্বস্তরের দেশপ্রেমিক জনগণের উপস্থিতির মাধ্যমে জানান দিতে চাই, কোনো শক্তি আওয়ামী লীগকে রুখতে পারবে না। যারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কবরে পাঠানোর হুমকি দিয়েছে তাদেরকেই কবরে যেতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী বলেন, আমরা অনেক সহ্য করেছি, আর সহ্য করব না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ পাওয়া মাত্রই আমরা ডাইরেক্ট অ্যাকশনে যাব। আর কোনো প্রতিবাদ নয়, এবার হবে প্রতিরোধ। মনে রাখতে হবে এটা ১৯৭৫ সাল নয়, এটা ২০২৩ সাল। আগামী বছর জানুয়ারিতে যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সেই নির্বাচনে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করার জন্য এখন থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।
নগর ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন বলেন, সামনে নির্বাচন। নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি–জামায়াত অতীতের মতো এক হয়েছে। আমেরিকা ভিসানীতি ঘোষণা করেছে। এতে বিএনপি বেকায়দায় পড়েছে। তারা তো দেশের মানুষের জন্য রাজনীতি করে না। তাদের ছেলেমেয়েরা আমেরিকায় পড়ে। বিএনপির নেতারা আমেরিকার কাছে ধর্না দেন। আওয়ামী লীগ আমেরিকার রাজনীতি করে না। আওয়ামী লীগ এই দেশের জনগণের শক্তি নিয়ে রাজনীতি করে। জনগণের জন্য রাজনীতি করে।
মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী ও শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় জনসভায় বক্তব্য দেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নঈম উদ্দীন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, সিডিএ চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, বদিউল আলম, উপদেষ্টা সফর আলী, এমএ লতিফ এমপি, নোমান আল মাহমুদ এমপি, শফিক আদনান, হাসান মাহমুদ শমসের, অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী, দিদারুল আলম চৌধুরী, আব্দুল লতিফ টিপু, ড. নেছার উদ্দীন আহমেদ মঞ্জু, মহিউদ্দিন বাচ্চু, দেলোয়ার হোসেন খোকা, এএইচএম জিয়াউদ্দিন, কেবিএম শাহজাহান, দেবাশীষ নাথ দেবু, ইমরান আহমেদ ইমু, জাকারিয়া দস্তগীর প্রমুখ।
সভার শুরুতে কোরান তেলাওয়াত করেন কোতোয়ালী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ আহমেদ। উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা শেখ মো. ইছহাক, হাজী মো. হোসেন, জহুর আহমদ, ইঞ্জিনিয়ার মানস রক্ষিত, জোবাইরা নার্গিস খান, মাহবুবুল হক মিয়া, আবু তাহের, ডা. ফয়সল ইকবাল চৌধুরী, শহিদুল আলম, জহর লাল হাজারী, আবুল মনছুর, সৈয়দ আমিনুল হক, পেয়ার মোহাম্মদ, দোস্ত মোহাম্মদ, গাজী শফিউল আজিম, অ্যাডভোকেট কামাল উদ্দীন আহমেদ, কামরুল হাসান বুলু, বখতেয়ার উদ্দীন খান, গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী, সাইফুদ্দিন খালেদ বাহার, নজরুল ইসলাম বাহাদুর, ইঞ্জিনিয়ার বিজয় কৃষাণ চৌধুরী, মহব্বত আলী খান, হাজী বেলাল আহমদ ও মো. মোর্শেদ আক্তার চৌধুরী।