প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সংলাপেও নির্বাচন প্রশ্নে দুই যুগের জোটসঙ্গী বিএনপি ও জামায়াতের দুই ধরনের অবস্থান ফুটে উঠল। বিএনপি দ্রুত নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচনের রোডম্যাপ দাবি করলেও জামায়াত বলেছে, নির্বাচনের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার।
গতকাল শনিবার প্রধান উপদেষ্টার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তৃতীয় দফার এই সংলাপ শুরু হয় বিএনপিকে দিয়ে। বেলা আড়াইটা থেকে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত এক ঘণ্টা আলোচনা শেষে জামায়াতের প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করে।
বিএনপির প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সংলাপ শেষে তিনি সাংবাদিকদেরকে বলেন, নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন স্থগিত করে প্রধান রাজনৈতিক দলের ঐকমতের ভিত্তিতে অনতিবিলম্বে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। আমরা একটা রোডম্যাপ দিতে বলেছি। নির্বাচন কমিশন কবে নির্বাচন করবে সে ব্যাপারে একটা রোডম্যাপ দিতে বলেছি। খবর বিডিনিউজের।
তবে আলোচনা শেষে জামায়াতের অবস্থান তুলে ধরে দলটির আমির শফিকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, এই সরকার দেশ শাসনের জন্য আসেনি, দেশ শাসনের সুষ্ঠু পথ বিনির্মাণের জন্য তারা এসেছে। তাদের কাজ হচ্ছে, গত তিন নির্বাচনে জাতি যা বঞ্চিত হয়েছে একটা গ্রহণযোগ্য, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দেওয়ার পরিবেশ তৈরি করা। এজন্য কিছু মৌলিক বিষয়ে তাদের সংস্কার করতেই হবে। কী কী মৌলিক বিষয়ে তারা সংস্কার করবেন আমরা সেই বিষয়ে কথা বলেছি।
জামায়াত কী কী প্রস্তাব করেছে, তা এখনি সামনে আনতে চান না দলটির আমির। জানান, আগামী বুধবার তা প্রকাশ করা হবে। ৯ অক্টোবর আমরা আমাদের চিন্তা জাতির সামনে তুলে ধরব, এই মুহূর্তে কী কী সংস্কার প্রয়োজন, সংস্কার পরবর্তী পর্যায়ে কী কী আমাদের লাগবে; আমরা মনে করি নির্বাচন থেকে সংস্কার বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বিএনপির মতো জামায়াতও রোডম্যাপ চায় জানিয়ে শফিকুর বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দুটি রোডম্যাপ চেয়েছি। একটি সংস্কারের ও অন্যটি নির্বাচনের। সংস্কার ও নির্বাচন দুটিই গুরুত্বপূর্ণ।
গত ৮ আগস্ট সংবিধান মেনে চলার অঙ্গীকার করে শপথ নেওয়া অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনের সময় নিয়ে কোনো কথা বলছে না। সংবিধানে সংসদ ভেঙে দেওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে ভোটের কথা বলা আছে। দৈব দুর্বিপাকে সেটি করা না গেলে আরও ৯০ দিন সময় নেওয়ার সুযোগ আছে।
৫ আগস্ট সরকার পতনের পর মির্জা ফখরুল বিভিন্ন দলের নেতাদেরকে নিয়ে প্রথমে সেনাপ্রধান ও পরে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেদিন তিনি বলেছিলেন, রাষ্ট্রপতি সংবিধান ভেঙে দেবেন এবং ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হবে। তবে রাষ্ট্রপতি সংবিধান ভেঙে দিলেও নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে কিছু বলেননি। শুরুতে বিএনপি নির্বাচন প্রশ্নে যৌক্তিক সময় দেওয়ার কথা বললেও গত ২৪ আগস্ট থেকে রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়ে আসছে। অন্তর্বর্তী সরকার যে সংস্কারের কথা বলছে তারও বিরোধিতা করছেন মির্জা ফখরুল। তার অবস্থান হলো, সংস্কার করবে নির্বাচিত সংসদ। দেশ দ্রুত গণতন্ত্রে না ফিরলে অন্য ব্যবস্থা ঢুকে পড়বে–এমন আশঙ্কার কথাও বলেন তিনি। তবে বিএনপি যখন থেকেই ভোটের দাবি তুলে আসছে, তখন থেকেই জামায়াত আমির এর বিরোধিতা করছেন।
অবিলম্বে ইসি গঠন ও নির্বাচনের রোডম্যাপ চাইল বিএনপি : প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সংলাপে অবিলম্বে নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বিভিন্ন সমাবেশে তোলা দাবিটি এবার সরাসরি সরকার প্রধানের কাছেই তুলে ধরল তারা।
গতকাল বিকালে সংলাপের থেকে বের হয়ে এসে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন স্থগিত করে প্রধান রাজনৈতিক দলের ঐক্যমতের ভিত্তিতে অনতিবিলম্বে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। আমরা একটা রোডম্যাপ দিতে বলেছি। নির্বাচন কমিশন কবে নির্বাচন করবে সে ব্যাপারে একটা রোডম্যাপ দিতে বলেছি।
বেলা আড়াইটা থেকে এক ঘণ্টা ফখরুলের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদল হেয়ার রোডে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবনে প্রবেশ করে। প্রতিনিধিদলে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও সালাহউদ্দিন আহমেদ।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিতর্কিত কোনো ব্যক্তি যাতে নির্বাচন সংস্কার কমিশনে না যায়, সে কথা আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি। আমরা ফ্যাসিস্ট সরকারের ভুয়া ভোটে নির্বাচিত সকল ইউনিয়ন পরিষদ বাতিল করতে বলেছি। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে যেসব প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং কমিশনারসহ ছিল, তাদেরকে পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন করার অভিযোগে তাদেরকে আইনের আওতায় আনার কথা বলেছি।
নির্বাচন উনাদের এক নম্বর অগ্রাধিকার : ইউনূসের সঙ্গে সংলাপ শেষে বিএনপি নেতা বলেন, উনি (প্রধান উপদেষ্টা) আমাদেরকে বলেছেন, নির্বাচন অনুষ্ঠান উনাদের এক নম্বর অগ্রাধিকার। বিএনপির দাবির বিষয়ে তিনি কী বলেছেন জানতে চাইলে জবাব আসে, বিষয়গুলো অত্যন্ত সহযোগিতার সঙ্গে তারা দেখছেন। তারা মনে করেন আমাদের দাবিগুলো জনগণের দাবি, আমাদের দাবিগুলো তাদেরও দাবি।
সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা দাবি : তত্ত্বাবধায়ক সরকার অসাংবিধানিক উল্লেখ করে রায় দেওয়ার কারণে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনার দাবিও জানিয়েছে বিএনপি। ফখরুলের অভিযোগ, বিচারপতি খায়রুলই সংবিধান ধ্বংস ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিলের মূল হোতা।
বিচার বিভাগের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আমরা বলেছি যে, হাই কোর্ট বিভাগে এখন পর্যন্ত পরিবর্তন হয়নি। হাই কোর্ট বিভাগে বেশিরভাগ নিয়োগই ছিল দলীয় ভিত্তিতে এবং প্রায় ৩০ জন বিচারক বহাল তবিয়তে কাজ করছেন এখনও। এদের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি। কিছু বিচারককে দলকানা আখ্যা দিয়ে ফখরুল বলেন, তাদের অপসারণের কথা বলেছি। একই সঙ্গে অতি দ্রুত পিপি ও জিপি নতুনভাবে নিয়োগ দেয়ার কথা বলেছি।
প্রশাসনে ফ্যাসিবাদের অনেক দোসর কর্মরত আছেন অভিযোগ করে তাদেরকে অপসারণ, ডিসি নিয়োগে নতুন ফিট লিস্ট এবং যেসব ডিসির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তাদের নিযোগ বাতিল, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের চুক্তিভিত্তিক সব নিয়োগ বাতিলের দাবি তোলার কথাও জানান বিএনপি মহাসচিব। ফখরুল বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে দুই একজন আছেন যারা বিপ্লব–গণঅভ্যুত্থানের যে মূল স্পিরিট তাকে ব্যাহত করছে তাদেরকে সরানো কথা বলেছি। আমরা গত ১৫ বছর ধরে পদোন্নতির বঞ্চিত সরকারি কর্মকর্তাদের ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি নিশ্চিত করার জন্য বলে এসেছি।
দেশ ছেড়ে পালাচ্ছে কীভাবে : সাবেক মন্ত্রীরা দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন উল্লেখ করে বিএনপি নেতা বলেন, কীভাবে পালিয়ে যাচ্ছে, কার সহযোগিতায় পালাচ্ছে, এই বিষয়গুলো দেখার জন্য বলেছি। আজকে পতিত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ভারতে আছেন। ভারতে থেকে তাকে কেন্দ্র করে, তার মাধ্যমে যে সমস্ত ক্যাম্পেইন চলছে, যে সমস্ত অপপ্রচার চলছে, সেই বিষয়গুলো নিয়ে ভারতের সরকারের সঙ্গে আলোচনার জন্য এবং তাকে (শেখ হাসিনা) ওই অবস্থা থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য সরকারকে অনুরোধ করেছি; তারা যেন ভারত সরকারের সাথে আলোচনা করে। যাদেরকে দুর্নীতি ও হত্যার সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, তাদের জামিন দেওয়া হচ্ছে মন্তব্য করে বিএনপি নেতা বলেন, এটা খুব উদ্বেগজনক। এই বিষয়টা আমরা দেখার জন্য বলেছি। ২০০৭ সালে থেকে শেখ হাসিনার শাসনামলে সকল মিথ্যা, গায়েবি মামলা প্রত্যাহারের জন্য নীতিগত সিদ্ধান্ত ঘোষণা ও প্রত্যাহারের ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেছি।
পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্থিরতা সৃষ্টির পেছনে কারা আছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং গুম–খুনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবিও জানান বিএনপি নেতা। জাতিসংঘের একটি দল এসেছে বাংলাদেশে। সেই দলকে যারা বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে জড়িত আছেন তারা জাতিসংঘের টিমকে সেইভাবে সহযোগিতা করছে না। বিষয় আমরা বলেছি।
দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে সনাতনী কিছু মানুষ অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে জনগণকে উসকে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন ফখরুল।
সংস্কার বেশি গুরুত্বপূর্ণ : নির্বাচন প্রশ্নে জামায়াতের যে এখনও কোনো তাড়াহুড়া নেই সেটি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তৃতীয় দফা সংলাপেও ফুটে উঠেছে। শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াত সংস্কারকে এক নম্বরে গুরুত্ব দিচ্ছে। সংস্কারের টাইমলাইন কী হবে, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা দুইটা বিষয় দেশবাসীর কাছে চেয়েছি এবং সরকারের কাছে জানিয়েছি। একটা রোডম্যাপ হবে সংস্কারের, আরেকটা নির্বাচনের। সংস্কার সফল হলে নির্বাচন সফল হবে। দুইটা বিষয়ে আমরা গুরুত্ব দিয়েছি।
জামায়াত আমির বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, এই সরকারকে নিরপেক্ষ থেকে একটি ভালো নির্বাচন উপহার দেবে জাতিকে। আমরা শুরু থেকে বলে আসছিলাম সংস্কারের জন্য সরকারকে যৌক্তিক সময় দিতে চাই। সেই যৌক্তিক সময়টা কী হবে এটা নিয়ে অচিরেই আমরা কাজ করব। এঙট্রা দেরি হবে না। এভাবে আমরা সামনে আগাতে চাই। অন্তর্বর্তী সরকার কোনো ধরনের পক্ষ–বিপক্ষের মানসিকতা না নিয়ে নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে দেশকে একটা ভালো পর্যায়ে নিয়ে নির্বাচন দিতে সক্ষম হবে বলেও আশার কথা বলেন তিনি।
সংলাপে জামায়াতের প্রতিনিধিদলে ছিলেন নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান, সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের, আ ন ম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি রফিকুল ইসলাম খান, আবদুল হালিম ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য সাইফুল আলম খান।
পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কথা জানাল গণতন্ত্র মঞ্চ : প্রধান উপদেষ্টার মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সংলাপে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিষয়টি নিয়েও আলোচনা করেছে কয়েকটি ছোট রাজনৈতিক দলের মোর্চা গণতন্ত্র মঞ্চ। তাদের সেই উদ্বেগের পর সরকারের তরফে বলা হয়েছে, পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণও তাদের অগ্রাধিকারে আছে। গতকাল বিকালে মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে সংলাপের পর সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা তুলে ধরেন মোর্চার নেতারা।
জেএসডি, নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন নিয়ে এই গণতন্ত্র মঞ্চ গঠিত। বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা গণতন্ত্র মঞ্চের অবস্থানও জামায়াতের মতোই। তারা গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করেই নির্বাচনে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
মঞ্চের সমন্বয়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমরা বলেছি, আমরা একটা সরকার বদলানোর আন্দোলন করছি না, নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করছি না, সামগ্রিকভাবে আন্দোলন করছি যাতে নির্বাচন ব্যবস্থা ও সংবিধান সংস্কারের প্রক্রিয়ায় একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র করা যায়। আবার যাতে ফ্যাসিবাদ ফিরে না আসে সে কারণে সংস্কার আগে প্রয়োজন।
গণসংহতির প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দল, শিক্ষার্থী, বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষের সঙ্গে আলাপ–আলোচনা করা প্রয়োজন। একটা কাঠামো তৈরি করা দরকার, জাতীয় রাজনৈতিক কাউন্সিল হতে পারে, যেখানে অংশীজনেরা বসবেন। সংস্কার কমিশন আজ রোববার থেকে কাজ শুরু করবে বলে বৈঠকে জানানো হয়েছে।
পরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাম গণতান্ত্রিক জোট, হেফাজতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এবি (আমার বাংলাদেশ) পার্টি, গণঅধিকার পরিষদও সংলাপে অংশ নেন।
নতুন করে ৯টি কমিশন চায় ইসলামী আন্দোলন : সরকার যে ছয়টি সংস্কার কমিশন করেছে, তার সঙ্গে আরও নয়টি কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে চরমোনাইয়ের পীরের নেতৃত্বাধীন দল ইসলামী আন্দোলন। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপ শেষে দলের আমির সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম সাংবাদিকদের এ কথা জানান। তিনি জানান, তারা আইন, নাগরিক সেবা, পররাষ্ট্র, শিক্ষা, বাকস্বাধীনতা, স্বাস্থ্য, শ্রমজীবী, সংখ্যালঘু ও নৃগোষ্ঠী মহিলা ও শিশু বিষয়ক সংস্কার কমিশন করার কথা বলেছেন। তিনি বলেন, সংস্কার করেই দেশে অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে, যাতে আর কোনো স্বৈরাচার দেশে প্রতিষ্ঠা না হতে পারে।
বাম গণতান্ত্রিক জোট : বিবিসি বাংলা জানায়, বাম গণতান্ত্রিক জোটভুক্ত দল সিপিবি, বাসদ খালেকুজ্জামান, বাসদ (মার্ঙবাদী), গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টিও বৈঠক করে প্রধান উপদেষ্টার সাথে। সবশেষে গণ অধিকার পরিষদ ও আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি) সঙ্গেও সংলাপ অনুষ্ঠিত হয় এদিন।
বাম গণতান্ত্রিক জোটের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, সংস্কার কমিশনের মধ্যে প্রধান হলো নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার। সেটা আজ থেকে, রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে কথা বলে পূর্ণাঙ্গ সংস্কার করে নির্বাচন কবে হবে, সেটার রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে।
তবে এই বৈঠকে ডাক পায়নি ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ ও তাদের শরিক ১৪ দলভুক্ত কোনো রাজনৈতিক দল। সরকার গঠনের পরপর প্রধান উপদেষ্টার সাথে প্রথম দফায় রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকে জাতীয় পার্টি আমন্ত্রণ পেলেও এবার তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।