আগামী ডিসেম্বরে বিআরটি প্রকল্পের পথে গাড়ি চালানোর আশা থাকলেও ‘পরিকল্পিত ধ্বংসযজ্ঞ’ চালিয়ে সেই আশা–স্বপ্ন ধূলিসাৎ করে দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিনুল্লাহ নূরী।
তিনি বলেন, আমাদের আশা ছিল সেপ্টেম্বরে প্রকল্পের কাজ শেষে ডিসেম্বরে এ পথে গাড়ি চালাতে পারবে। কিন্তু আমাদের সেই আশা–স্বপ্ন তারা ধূলিসাৎ করে দিয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
গতকাল শনিবার দুপুরে কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলনে দুষ্কৃতকারীদের দেওয়া আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত গাজীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের ভবন ও যানবাহন এবং বিআরটি প্রকল্পের ক্ষতিগ্রস্ত স্টেশন পরিদর্শনে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। ছাত্ররা এমন ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে বলে ‘বিশ্বাস করেন না’ জানিয়ে সচিব বলেন, এ প্রকল্পের প্রতিটি লিফট, এঙেলেটর, শাটার যেভাবে পুড়িয়েছে, ভেঙেছে এবং নাশকতার যে ধরন দেখলাম তাতে মনে হয় এগুলো একেবারে ট্রেইনড দুর্বৃত্তরা করেছে।
পরিকল্পিত ছক অনুযায়ী এই হামলা চালানো হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, তারা এটি নষ্ট করার আগে একটি পরিকল্পনার ছক করেছে এবং ছক মোতাবেক এই নাশকতার কাজটি করেছে। এটি এমন নয় যে কোনো অতর্কিত হামলা, হঠাৎ করে হামলা। পরিকল্পিত ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর জন্য এসব ঘটনা ঘটিয়েছে।
সড়ক সচিব নাশকতার কারণে বিভিন্ন ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ তুলে ধরে বলেন, আমাদের কিছু নতুন গাড়ি, যার নম্বরও এখনও পড়েনি, বড় ক্রেনটিও পুড়িয়ে দিয়েছে। নাশকতার কারণে বিআরটি প্রকল্পের ৩১টি এস্কেলেটর, লিফট, গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যেগুলো একসঙ্গে কেনা হয়েছিল। এগুলো এই মুহূর্তে কিনতে পারব না। আমাদের লিফট গেছে, ফুটপাত ভেঙে ফেলেছে। গেইট, ওয়াশ রুম ভেঙে ফেলেছে, টিকিট কাউন্টার ভেঙে ফেলেছে। এগুলো আবার নতুন করে কিনতে হবে।এই হামলাকে ‘বিরাট ক্ষতি’ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগে যেখানে এগুলো ৮০ টাকা ডলার মূল্যে কেনা হয়েছিল সেখানে এখন তা ১২০ টাকা ডলার মূল্যে কিনতে হবে। সময় লাগবে, সাথে বেড়ে গেছে ব্যয়।
গাজীপুরবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে এবিএম আমিনুল্লাহ নূরী বলেন, বিআরটি প্রকল্প আমাদের জন্য এবং গাজীপুরবাসীর জন্য একটি স্বপ্নের প্রকল্প, কষ্টের প্রকল্প। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে গাজীপুরবাসীর অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে। বিআরটি প্রকল্পের রাস্তার কাজ করতে গিয়ে, ওভারব্রিজ নির্মাণ করতে গিয়ে আমরা অনেক সময় নিয়েছি।
অগ্নিসংযোগ ও নাশকতায় ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শনের সময় সচিবের সঙ্গে গাজীপুর জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম, গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ–কমিশনার মো. আলমগীর হোসেন ও গাজীপুর সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলামসহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
