বালু উত্তোলন বন্ধে ৪ দাবি, ৭ দিনের আল্টিমেটাম

রাঙ্গুনিয়ার কর্ণফুলী নদী

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি | বুধবার , ১ অক্টোবর, ২০২৫ at ১১:৩৯ পূর্বাহ্ণ

রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় কর্ণফুলী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ, প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা এবং বালুমহালের ইজারা বাতিলের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে উপজেলা সদরের ইছাখালী এলাকায় ‘রাঙ্গুনিয়ার সচেতন ছাত্রসমাজ ও সর্বস্তরের জনসাধারণের’ ব্যানারে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচি থেকে বালু উত্তোলন বন্ধে ৪ দফা দাবি দেওয়া হয় এবং দাবি বাস্তবায়নে ৭ দিনের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম বরাবর স্মারকলিপি দিলে তিনি তাদের দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন এবং বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন। ইছাখালী প্যারামাউন্ট চত্বরে কাপ্তাই সড়কের পাশে অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচি থেকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে জানানো হয়কোদালা, সরফভাটা, বেতাগী এবং শিলক ইউনিয়নসহ নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে। এর ফলে ভয়াবহ ভাঙন, সড়ক ধস ও অবকাঠামোগত সঙ্কট দেখা দিয়েছে। লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, ইতোমধ্যে শিলক বিচক্র হাট এলাকার হাজী সৈয়দ আলী সড়কের প্রায় ২০০ ফুট অংশ নদীতে ধসে গেছে। এতে ঝুঁকিতে রয়েছে ৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্থানীয় বাজার, শত শত ঘরবাড়ি ও বিদ্যুৎ লাইন। কাপ্তাই প্রকল্প থেকে পানি ছাড়লে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে বলে সতর্ক করেন স্থানীয়রা। এ কারণে এলাকাবাসী ইতোমধ্যে লাল পতাকা টাঙিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করেছে।

কর্মসূচি থেকে জানানো হয়, চলতি বছরের শুরু থেকে একাধিক মানববন্ধন, প্রতিবাদ ও আন্দোলনের মাধ্যমে স্থানীয়রা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও এখনো স্থায়ী সমাধান আসেনি। ফেব্রুয়ারি, এপ্রিল, মে, জুলাই, আগস্ট এবং সর্বশেষ সেপ্টেম্বর মাসে রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু বালু উত্তোলন বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। এ অবস্থায় কর্ণফুলী নদী ও রাঙ্গুনিয়াকে রক্ষায় আন্দোলনকারীরা উপজেলা প্রশাসনের নিকট ৪ দফা দাবি পেশ করা হয়।

দাবিগুলো হল : রাঙ্গুনিয়ার কর্ণফুলী নদীর সব বালু ইজারা ও বালু উত্তোলন আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। আগামী তিন দিনের মধ্যে উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে নদী রক্ষা কমিটি সংস্কার করতে হবে। নিয়মিত নদীপথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল জোরদার করতে হবে। অবিলম্বে কর্ণফুলী নদীর বেতাগী পয়েন্টে নিরাপত্তা ফাঁড়ি স্থাপন করতে হবে। বক্তব্যে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়, সাত কার্যদিবসের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে রাঙ্গুনিয়ার সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা ‘কর্ণফুলী বাঁচান, রাঙ্গুনিয়া বাঁচান’ শ্লোগান দেন। অবস্থান কর্মসূচি শেষে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। পরে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হলে তিনি দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকাল আনোয়ারায় ইসলামী ফ্রন্টের প্রীতি সমাবেশ
পরবর্তী নিবন্ধআনোয়ারায় পূজামণ্ডপে সেনাবাহিনীর শুভেচ্ছা উপহার বিতরণ