বাবার লাশ ঘরে রেখে মেয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে

যখন ফিরে ততক্ষণে দাফন সম্পন্ন

আনোয়ারা প্রতিনিধি | শুক্রবার , ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৮:০১ পূর্বাহ্ণ

বাবার শেষ বিদায়ের যাত্রার আগেই এক বুক আর্তনাদ নিয়ে মেয়েকে যেতে হয়েছে পরীক্ষা কেন্দ্রে। চোখের পানি মুছে তিন ঘণ্টার পরীক্ষা শেষে যখন বাড়ি ফিরে তখন বাবা মাটির কবরে শায়িত। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার সময় যখন বাবার দাফনকাফন হচ্ছিল তখন মেয়ে এস এম আউলিয়া উচ্চ ব্যিালয় কেন্দ্রে এসএসসি ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা দিচ্ছিল। আনোয়ারা উপজেলার ৩ নম্বর রায়পুর ইউনিয়নের ২ নম্বর দক্ষিণ পরুয়া পাড়া ওয়ার্ড রহিম তালুকদার বাড়িতে ঘটে এ মর্মস্পর্শী ঘটনা। জানা যায়, রায়পুর ইউনিয়ন বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে চলমান এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে রিপা আক্তার। বুধবার রাতে হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় তার বাবা আহমদ নবী (৪৫)। তিনি পেশায় একজন মৎস্যজীবী, বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বুধবার সারাদিন আহমদ নবী সুস্থ ছিলেন। কিন্তু রাত সাড়ে ১১টার দিকে হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। আহমদ নবী উপজেলার ৩ নম্বর রায়পুর ইউনিয়নের ২ নম্বর দক্ষিণ পরুয়া পাড়া ওয়ার্ড রহিম তালুকদার বাড়ির মরহুম দানা মিয়ার তৃতীয় পুত্র। তিনি চার সন্তানের জনক।

বটতলী এস এম আউলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের কেন্দ্রসচিব ফরিদুল আলম বলেন, সকালে স্থানীয় ইউপি সদস্য রিপাকে পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে আসার পর আমরা জানতে পারি পরীক্ষার্থীর বাবার মৃত্যুর বিষয়টি। সে হলে বসে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। তবে বারবার চোখের পানি মুছছিল সে।

রায়পুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জানান, আহমদ নবীর তিন ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে রিপা সবার বড়। সে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। বাবার মৃত্যুর পর তার পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। পরে তাকে আমি পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যাই। বুকে কষ্ট চেপে সে তিনঘণ্টা পরীক্ষা দিয়েছে। তবে পরীক্ষা শেষে তার সকল বাঁধ ভেঙে যায়। তার কান্না দেখে অন্যান্য পরীক্ষার্থীসহ উপস্থিত সকলের চোখ ভিজে উঠে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঘুমাতে যান একসঙ্গে, সকালে উঠে স্বামী দেখতে পান স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ
পরবর্তী নিবন্ধপরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালকের পর মারা গেলেন স্ত্রীও