আসন্ন বাফুফে নির্বাচনে গতকাল ছিল মনোনয়ন পত্র সংগ্রহের শেষ দিন। সকাল থেকেই সংবাদমাধ্যমের ভিড়। সাবেক ফুটবলার, সংগঠকরা বাফুফে ভবনে প্রতিনিয়ত আসা–যাওয়া করছেন। সবার আগ্রহ ছিল সভাপতি পদে নির্বাচনে ঘোষণা দেয়া তরফদার রুহুল আমিন কোন পদে মনোনয়ন সংগ্রহ করেন। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে তরফদার রুহুল আমিনের প্রতিষ্ঠান সাইফ পাওয়ারটেকের কর্মকর্তা নাজমুল করিম বাফুফে ভবনে এসে সিনিয়র সহ–সভাপতি পদে মনোনয়ন ক্রয় করেন। এরপর গণমাধ্যমে বলেন, ‘আমি স্যারের জন্য সিনিয়র সহ–সভাপতি পদে একটিই মনোনয়ন সংগ্রহ করেছি।’ গুঞ্জন ছিল, তরফদার সভাপতি ও সিনিয়র সহ–সভাপতি দুই পদে কিনবেন। ২০২০ সালে বাফুফে নির্বাচনে তিনি সভাপতি পদে ঘোষণা দিয়ে শেষ পর্যন্ত অংশগ্রহণ–ই করেননি। এবার কাজী সালাউদ্দিন পুনরায় নির্বাচন না করার ঘোষণার পর দিনই সভাপতি পদে নির্বাচনের কথা জানিয়ে সিনিয়র সহ–সভাপতি পদে মনোনয়ন গ্রহণ করেন। তরফদার রুহুল আমিনকে সভাপতি পদে নির্বাচনের অন্যতম সমর্থক ছিলেন ময়মনসিংহ জেলা বিভাগীয় ফুটবল এসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদোয়ান। গতকাল তিনি সভাপতি ও সহ–সভাপতি পদে দুই পদে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন। মনোনয়ন পত্র কিনে বাফুফে ভবনে উপস্থিত সাংবাদিকদের রেদোয়ান বলেন, ‘তরফদার ভাই সভাপতি পদে কেন নির্বাচন করলেন না এটা উনি বলতে পারবেন। আমি সভাপতি ও সহ–সভাপতি দুই পদে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছি। আমরা সুযোগ পেলে ফুটবল উন্নয়নের চেষ্টা করব।’ দুই পদে মনোনয়ন নেয়ার অর্থ সমঝোতার পথ খানিকটা খোলা। সেই দিকে ইঙ্গিত করে রেদোয়ান কয়েকবারই বলেছেন, ‘এখনো সময় আছে। আলোচনা হতে পারে। ফুটবলের স্বার্থে একক প্যানেল হলে সভাপতি পদ ছাড়তে রাজি রয়েছি।’দুই সাবেক ফুটবলার শফিকুল ইসলাম মানিক ও রুম্মন বিন ওয়ালি সাব্বিরও মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এই দুজন সহসভাপতি পদে নির্বাচন করবেন। গতকাল দুপুরে সভাপতি পদে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন তৃণমূলের সংগঠক শাহাদাত হোসেন জুবায়ের। ব্রাহ্মণবাড়িয়া এফসি’র কাউন্সিলর সভাপতি ও সদস্য দুই পদেই মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন। তিনি দুই পদে মনোনয়ন জমা দিলেও এক পদ থেকে প্রত্যাহার করতেই হবে। বাফুফে সভাপতি পদে চারজন মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন। সাবেক বাফুফে সহ–সভাপতি তাবিথ আউয়াল, দিনাজপুরের তৃণমূলের কোচ মিজানুর রহমান, ময়মনসিংহ বিভাগীয় ফুটবল এসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদোয়ান ও এফসি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শাহাদাত হোসেন জুবায়ের। এই চার প্রার্থীর মধ্যে তাবিথ ও মিজানুর রহমানই শুধু একটি সভাপতি পদে নিয়েছেন। অন্য দুই জন দুই পদের জন্য মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন। চার জনের মধ্যে আপাত দৃষ্টিতে তাবিথ আউয়াল সামর্থ্যে এগিয়ে বিষয়টি স্বীকার করে রেদোয়ান বলেন, ‘তাবিথ আউয়াল অবশ্যই বেশি সামর্থ্যবান আমাদের চেয়ে। তবে আমাদের মাঠের অভিজ্ঞতা আছে।’ আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ মূলত ক্রিকেট সংগঠক। ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ছিলেন। নারী উইংয়ের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেছেন। সামপ্রতিক সময়ে ক্রিকেট থেকে দূরে থাকায় গত বাফুফে নির্বাচনে সহ–সভাপতিও করেছেন। সেই নির্বাচনে তিনি হেরেছিলেন। এবার সভাপতি পদে নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে তিনি বলেন,‘ সকল প্রার্থীই জয়ের আশাবাদ চিন্তা করেই দাঁড়ায়।’ বাফুফে নির্বাচনে ভোটার তালিকা নিয়ে আপত্তি ছিল রেদোয়ান ও কয়েকজন সংগঠকের। নিজে প্রার্থী হলেও সেই লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার তার কন্ঠে, ‘আমাদের সেই লড়াই অব্যাহত থাকবে। ডিএফএগুলোতে সালাউদ্দিন সাহেবরা অকার্যকর করে রেখেছেন। আমরা আসতে পারলে এটি সচল করব।’ বাফুফে ভবনে গতকাল বর্তমান সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনও এসেছিলেন। ঘন্টা দেড়েক ভবনে অবস্থান করেছিলেন।