বান্দরবানে চারদিনের টানা বর্ষণে সাঙ্গু–মাতামুহুরী নদীর পানি অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে। নদী তীরবর্তী লোকজন সরে গেছে নিরাপদ আশ্রয়ে। তবে অব্যাহত বর্ষণে নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে জেলায়। অপরদিকে মঙ্গলবার সকালে রুমা–থানচি, রোয়াংছড়ি সড়কে ধসে পড়া পাহাড়ের মাটি রাস্তা থেকে সরিয়ে ফেলায় অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। এদিকে বৃষ্টিতে সাঙ্গু নদীর স্রোতে থানচিতে নৌকা ডুবে নিখোঁজ হওয়া দুই শিক্ষার্থীর খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি।
প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টরা জানায়, গত শনিবার থেকেই জেলার ৭টি উপজেলায় বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। কখনো মাঝারি ও কখনো ভারী বৃষ্টি হচ্ছে জেলায়। তবে সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম হওয়ায় নদীর পানি কিছুটা কমেছিল। কিন্তু মঙ্গলবার দুপুর থেকে আবারও থেমে থেমে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়। এতে নদীর পানি আবারও বাড়ছে। ফলে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে জেলা সদর, রোয়াংছড়ি, রুমা, থানচি ও লামা, আলীকদম উপজেলায়।
পরিবহন শ্রমিকনেতা অমল দাস বলেন, পাহাড় ধসে রুমা সড়ক যোগাযোগ সাময়িক বন্ধ থাকলেও রাস্তা থেকে মাটি সরিয়ে নেয়ায় যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। থানচি, রোয়াংছড়ি, বান্দরবান–রাঙামাটি, লামা–সূয়ালক, রোয়াংছড়ি–রুমা, থানচি–আলীকদমসহ অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোর বিভিন্ন স্থানেও ছোটখাটো পাহাড় ধসে সড়কে কাদা মাটি জমে সড়কগুলো পিচ্ছিল ও বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। তবে সড়ক যোগাযোগ সচল রয়েছে সব উপজেলায়।
এদিকে নদী তীরবর্তী এলাকা ও পাহাড় ধসের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো পরিদর্শন করেছে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন, পৌরসভার মেয়র মো. সামসুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, চারদিন ধরেই জেলায় বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। সোমবার রাতে বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা কমলেও মঙ্গলবার দুপুর থেকে আবারও বেড়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলার ৭টি উপজেলার চৌত্রিশটি ইউনিয়নে ২০৭টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় সবধরনের প্রস্তুতি রয়েছে প্রশাসনের। বৃষ্টিতে পাহাড় ধসে প্রাণহানির শঙ্কায় পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসতিগুলো থেকে লোকজনদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে প্রশাসন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন কাজ করছে। সম্ভাব্য স্থানগুলোতে গিয়ে লোকজনদের সতর্ক করতে মাইকিং করা হচ্ছে। নৌ ডুবিতে নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থীর সন্ধান পাওয়া যায়নি।