মাত্র দিন কয়েকের ব্যবধানে নগরীতে আবারও সন্ধান মিলেছে ট্যানারির বর্জ্য মেশানো মাছ এবং পোল্ট্রি ফিডের কারখানার। গতকাল বাকলিয়া থানাধীন বাস্তুহারা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মেসার্স আদিত্য ট্রেডার্স ও নূর এন্টারপ্রাইজ নামের দুইটি কারখানা থেকে বিপুল পরিমান ট্যানারির বর্জ্য মিশ্রিত মাছ ও মুরগির খাদ্য জব্দ করে ধ্বংস করা হয়। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও র্যাব–৭ এর অভিযানে কারখানা দুইটিকে ৪ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে আর এই ধরণের ট্যানারির বর্জ্য ব্যবহার করে মাছ ও মুরগির খাবার উৎপাদন করবে না মর্মেও দুই প্রতিষ্ঠানের মালিক মুচলেকা দিয়েছে। দীর্ঘদিন যাবত তারা ক্রোমিয়াম যুক্ত ট্যানারি বর্জ্য মিশিয়ে মাছ এবং মুরগির খাবার উৎপাদন এবং বাজারজাত করছিল। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় এই ধরণের আরো বেশ কিছু কারখানা রয়েছে বলেও সূত্র জানিয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ট্যানারি বর্জ্য মিশিয়ে মাছ এবং মুরগির খাবার উৎপাদনকারীদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান চালানো হবে বলেও ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল নগরীর বাকলিয়া থানাধীন বাস্তুহারা এলাকায় জেলা প্রশাসন এবং র্যাব–৭ যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানকালে পোল্ট্রি ফিডে ক্রোমিয়াম যুক্ত ট্যানারির বর্জ্য মেশানোর অভিযোগে আদিত্য ট্রেডার্স এবং নুর এন্টারপ্রাইজ নামের দুইটি কারখানায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানকালে দুইটি কারখানায় ব্যাপক গোঁজামিল ধরা পড়ে। কারখানা দুইটিতে নিষিদ্ধ ঘোষিত ট্যানারির বর্জ্য মিশিয়ে মাছ এবং মুরগির খাবার উৎপাদন এবং বাজারজাতকরণের ঘটনা উদঘাটিত হয়। এই সময় আদিত্য ট্রেডার্স থেকে ১৫০ বস্তা ক্রোমিয়াম যুক্ত ট্যানারির বর্জ্য এবং নূর এন্টারপ্রাইজ থেকে ৩৩ বস্তা ক্রোমিয়াম যুক্ত শ্রিম্প পাউডার জব্দ করা হয়। আদালতের নির্দেশে জব্দকৃত পণ্য জনসম্মুখে ধ্বংস করা হয়। এই সময় আদিত্য ট্রেডার্সের মালিক আশু দাশকে ২ লাখ ও মাছের খাবারে ক্রোমিয়াম যুক্ত শ্রিম্প পাউডার মেশানোর অভিযোগে নুর এন্টারপ্রাইজের মালিক মোহাম্মদ নুর আবছারকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করে ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করা হয়। যৌথভাবে পরিচালিত এ অভিযানে জেলা প্রশাসনের পক্ষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত এবং র্যাব ৭ এর হয়ে নেতৃত্ব দেন সিনিয়র এএসপি রায়হান মুরাদ ও সিনিয়র এএসপি মো. শরীফুল আলম।
এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত বলেন, পোল্ট্রি ও ফিস ফিডে ক্রোমিয়াম যুক্ত নিষিদ্ধ পণ্য মিশ্রণের ফলে মাছ এবং মুরগি হয়ে তা মানবদেহে প্রবেশ করছে। ফলে ক্যান্সারসহ নানাবিধ জটিল রোগ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব কারখানাগুলোকে একে একে চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এ সকল অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত থাকবে।