বাইরের আলোচনা ছাপিয়ে মাঠে দুর্দান্ত জয় রাজশাহীর

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শনিবার , ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫ at ১০:৪৪ পূর্বাহ্ণ

ক্রিকেটাররা টাকা না পাওয়ায় অনুশীলন বর্জন, ম্যাচ খেলতে নামবে কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তা। সব মিলিয়ে গত কয়দিনে বিপিএলে সবচাইতে বড় আলোচনায় ছিল দুর্বার রাজশাহী দল। ক্রিকেটাররা টাকা পেয়েছে কিনা সেটা নিশ্চিত হওয়া না গেলেও গতকাল সিলেটের বিপক্ষে ম্যাচটি খেলতে নেমেছিল রাজশাহীর ক্রিকেটাররা। তবে মাঠে গত কয়দিনের আলোচনার কোন ছাপ দেখা গেল না। দুর্দান্ত খেলে তৃতীয় জয় তুলে নিল রাজশাহী। ব্যাটে বলে সবাই যেন নিজেদের উজাড় করে দিয়ে খেলেছে রাজশাহীর ক্রিকেটাররা। আর তাতেই সিলেট স্ট্রাইকার্সকে একরকম উড়িয়ে দিয়েছে দুর্বার রাজশাহী। নামের মতই দুর্বার গতিতে খেলেছে আনামুলবার্লরা। ফলে চট্টগ্রাম পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই জয় তুলে নিল রাজশাহী। সিলেটকে তারা হারিয়েছে ৬৫ রানে। অন্য দুই ভেন্যুর মত এবারের বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বেও রানের বন্যা বইছে। আগের দিন দুইশ রান করেছে স্বাগতিক চট্টগ্রাম। আর গতকাল রাজশাহী করল ১৮৪ রান। তবে সে রান টপকাতে পারেনি সিলেট। মাঠের বাইরে নানা আলোচনায় থাকলেও মাঠে যেন তার ছিটেফোটাও পড়তে দিল না রাজশাহীর ক্রিকেটাররা। এই জয়ের ফলে ৭ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে খুলনাকে হটিয়ে পয়েন্ট তালিকার চতুর্থ স্থানে উঠে এলো দুর্বার রাজশাহী। সাত ম্যাচের পাঁচ হারে সিলেট নেমে গেল ছয় নাম্বারে। বলা যায় রংপুর, চিটাগাং আর বরিশালের পর চতুর্থ স্থানটির জন্য লড়াইটা বেশ ভালই জমে উঠেছে।

দুপুরে জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টসে জিতে ব্যাট করতে নামা দুর্বার রাজশাহী ২৯ রানে প্রথম উইকেট হারায়। মোহাম্মদ হারিসকে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙেন নাহিদুল ইসলাম। ১৯ রান করে ফিরেন হারিস। দ্বিতীয় উইকেটে জিসান আলম এবং আনামুল হকও বেশিদূর এগুতে পারেনি। ২৪ রান যোগ করেন দুজন। নাহিদুলের দ্বিতীয় শিখার হয়ে ফিরেন জিসান আলম ১৮ বলে ২০ রান করে। রায়ান বার্লকে নিয়ে ৩৫ রান যোগ করেন আনামুল হক বিজয় । এজুটি ভাঙেন রুয়েল মিয়া। তার শিকার ২২ বলে ৩২ রান করা বিজয়। ইয়াসির আলিকে নিয়ে আরো ৩৮ সরান যোগ করেন রায়ান বার্ল। কিন্তু কেউই জুটিটা বড় করতে পারছিল না। ইয়াসির আলি ফিরেন ১০ বলে ১৯ রান করে। এরপর বার্ল একাই দলকে টেনে নিয়ে গেছেন। যদিও হাফ সেঞ্চুরির কাছে গিয়েও সেটি পূরণ করতে পারেনি বার্ল। ফিরেছেন ৪১ রান করে। তার ২৭ বলের ইনিংসে একটি চার এবং চারটি ছক্কার মার ছিল। আকবর আলির ১৫ বলে ১৪ এবং মৃত্যুঞ্জয়ের ৬ বলে ১২ রানে ভর করে ১৮৪ রান সংগ্রহ করে দুর্বার রাজশাহী। সিলেট স্ট্রাইকার্সের পক্ষে ৩২ রানে ৩ টি উইকেট নিয়েছেন রুয়েল মিয়া। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন নাহিদুল ইসলাম এবং নিহাদুজ্জামান।

১৮৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই পল স্টার্লিংকে হারায় সিলেট। সানজামুলের বলে তাসকিনের হাতে ক্যাচ দেন স্টার্লিং। সানজামুলের দ্বিতীয় ওভারে সিলেটের আরেক ওপেনার রনি তালুকদার। ২ রান করে বোল্ড হন রনি। তৃতীয় উইকেটে ভালই এগুচ্ছিলেন জাকির হাসান এবং জর্জ মানসে। ৫৮ রান যোগও করেছিলেন দুজন। ২৮ বলে ৩৯ রান করা জাকির হাসানকে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙ্গেন ডিয়াল। পরের ওভারে আরেক সেট ব্যাটার জর্জ মানসেকে ফেরান আফতাব আলম। ২২ বলে ২০ রান করেন মানসে। পরের ওভারে প্রান্ত বদল করে নিজের তৃতীয় ওভারে অ্যারন জোন্সকে নিজের তৃতীয় শিকার বানান সানজামুল। পরের ওভারে মৃত্যুঞ্জয় এসে নাহিদুল ইসলামকে ফেরালে পরাজয়ের দিকে এগুতে থাকে সিলেট। মৃত্যুঞ্জয় নিজের পরের ওভারে আরিফুলকে ফিরিয়ে সিলেটের পরাজয়কে সময়ের ব্যাপারে পরিণত করে। জাকের আলি অনিক একটু লড়াই করার চেষ্টা করলেও তিনি ফিরেছেন ২০ বলে ৩১ রান করে। পরের ব্যাটাররা টেনেটুনে সিলেটের স্কোরকে ১১৯ রান পর্যন্ত নিতে সক্ষম হয়। রাজশাহীর পক্ষে ৩টি উইকেট নিয়েছেন সানজামুল। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন তাসকিন, মৃত্যুঞ্জয় এবং আফতাব আলম। গতকাল ২ উইকেট নেওয়ায় তাসকিনের উইকেট দাঁড়াল ৭ ম্যাচে ১৫টি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনেপালের মুখোমুখি আজ বাংলাদেশ
পরবর্তী নিবন্ধসাইফের আগে টার্গেটে ছিলেন শাহরুখ?