আমরা স্বাধীন জাতি। অনেক ত্যাগ তিতিক্ষার মধ্য দিয়ে এ স্বাধীনতা অর্জন করেছি। মহান মুক্তিযুদ্ধ আমাদের এই প্রজন্ম দেখেনি। কিন্তু বিভিন্ন মাধ্যম, প্রেক্ষাপট আর সময়ের উপযোগিতার সমন্বয়ে যুদ্ধ সম্পর্কে সম্যক ধারণা অর্জন করা না হলেও অনেকটা অনুধাবণ করার সুযোগ হয়েছে। শুধু মুক্তিযুদ্ধ নয়,বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে মিছিলে প্রাণ দেয়া শহীদরা এনে দিয়েছে বাংলা ভাষায় কথা বলার অধিকার। আমাদের পরম সৌভাগ্য ২১শে ফেব্রুয়ারি আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করার স্বীকৃত এক সুশ্রী, শ্রুতিমধুর ভাষা। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা উক্ত ২১ শে ফেব্রুয়ারি কিংবা বিজয় দিবসের মহান দিনে বিভিন্ন মাধ্যমে শহীদ প্রাপ্য সম্মান দিতে অপারগতা প্রদর্শন করি যা আমাদের কর্মে,দৃষ্টিভঙ্গিতে। আমরা অন্যভাষা চর্চা করবো, কিন্তু নিজ মাতৃভাষাকে অবজ্ঞা,অবহেলা করে নয়।এখনো আমরা ২১ ফেব্রুয়ারীর দিন আকাশ সংস্কৃতির প্রভাব দেখতে পাই। একই চিত্র স্বাধীনতা দিবস কিংবা বিজয় দিবসের সময়ও লক্ষ্য করা যায়।আমি একজন সাধারণ ব্যক্তি হিসেবে উপলব্ধি করলাম যে,আমরা উক্ত জাতীয় দিবসে খাঁটি শহীদ ও দেশপ্রেমিকদের মন থেকে অনেকেই শ্রদ্ধা, ভালবাসায় সিক্ত করি না কিংবা শহীদদের প্রতি তাঁদের যোগ্য মোতাবেক স্মরণ করতে ব্যর্থ আমাদের চাল চলন কিংবা বলনে। আমাদের উচিৎ আকাশ সংস্কৃতি কিংবা অতি আধুনিকতায় আসক্ত না হয়ে বাংলা ভাষার প্রতি সম্মান দেখানো এবং ১৯৫২ সাল, ১৯৭১ সালের সকল শহীদ, মুক্তিযোদ্ধা, বীরাঙ্গনা, বিভিন্নভাবে যোদ্ধাদের সহযোগীদের বিনয়ের সাথে কাঙ্ক্ষিত সম্মান দেয়া। তার অন্যতম কারণ, তাঁরাইতো আমাদের শতোভাগ বাংলাতে কথা বলার অধিকার সৃষ্টি করে দিয়ে গেছেন এবং একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ উপহার দিয়ে গেছেন। পরিশেষে মনে রাখতে হবে স্বাধীনতা অর্জনের মূল অঙ্কুর সেই বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। আর এর সফল পরিসমাপ্তি ঘটে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বরের মহান বিজয়ে। যা অনেক কষ্ট বুকে লালন করে ছিনিয়ে আনা হয়েছে। জয় হোক বাংলার, জয় হোক মানবতার।