উত্তর ঔপনিবেশিক পৃথিবীতে তথা আমাদের মত অনুন্নত সদ্যস্বাধীন দেশগুলোতে আর্থ–সামাজিক ও রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল প্রগতি আর প্রতিক্রিয়ার লড়াই। যে শক্তি ঔপনিবেশিক শাসন শোষণের অবশেষ বা সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সাথে মিলে তাদের শাসন থেকেই মুক্ত স্বাধীন দেশ পরিচালনা করতে চাইত, দেশের অর্থনীতিকে বিশ্ব পুঁজিবাদের সাথে যুক্ত করে সাধারণ মানুষের মুক্তির প্রত্যাশার বিপরীতে দেশ পরিচালনা করতে চাইত তাদের সাধারণভাবে শ্রেণিগত এবং সামাজিক শক্তি হিসাবে প্রতিক্রিয়াশীল বলে অভিহিত হয়। আর যে শক্তি ঔপনিবেশিক শাসন ও দীর্ঘ পরাধীনতার পশ্চাদপদতা থেকে মুক্ত দেশে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় আর্থিক প্রতিষ্ঠান সমূহ পরিচালনার মাধ্যমে স্বনির্ভর অর্থনীতি বিনির্মাণ ও বৈষম্যহীন সমাজ নির্মাণের পথে চলতে চায়, তাদের প্রগতিশীল বলেই অভিহিত করা হয়। অবশ্যই সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট, কমিউনিস্ট, উদারনৈতিক সামাজিক শক্তি, ব্যক্তি ও শ্রেণিকে প্রগতির শক্তি রূপে বিবেচনা করা হয়। মোটাদাগে প্রগতি আর প্রতিক্রিয়ার এই লড়াইকে, এর শক্তি বিন্যাসকে বামদের একাংশের হঠকারী বাম সংকীর্ণতা থেকে দেখার সংকট, রণনৈতিক বিভ্রান্তি আমাদের দেশে ও অন্যত্র বাম আন্দোলনের সংকট ও বিভক্তির কারণ হিসাবে প্রতীয়মান হয়। এসব দেশের বিভ্রান্ত বামেরা সামাজিক দ্বন্দ্বকে, প্রগতি আর প্রতিক্রিয়ার লড়াইকে সমাজ প্রগতির দ্বান্দ্বিক বিকাশের আলোকে না দেখে তা পুঁজি ও শ্রমের শ্রেণি সংগ্রামের চিরায়ত দৃষ্টিভঙ্গীতে বিচার করার এক বাস্তবতা বর্জিত রণনীতির পথে চলে। ’৬০ এর দশকে আমাদের দেশে ৬ দফাকে সিআইএর দলিল বলে উল্লেখ করা ছিল এমনিতর এক বাম হঠকারী বিভ্রান্তি। অবশ্য জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের নেতৃত্বে বাম প্রগতিশীলদের অবস্থানের কারণে ভিয়েতনাম, কোরিয়া, কিউবা, পরবর্তীতে এঙ্গোঁলা, মোজাম্বিক, তানজানিয়া, জিম্বাবুয়ে সহ আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার কিছু দেশ প্রগতির পথে হাঁটে। তবে অধিকাংশ অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশ প্রাক্তন ঔপনিবেশিক শাসক গোষ্ঠীর অনুকম্পা নির্ভর হয়ে দেশীয় ধনিক ও আমলাদের স্বার্থে ও চাপে উপরোল্লিখিত প্রতিক্রিয়াশীল পথে চলে। আবার ভারতের মত কিছু দেশ বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামোর মধ্যে থেকে শুরু থেকে জাতীয় বুর্জোয়া পুঁজির বিকাশের স্বার্থে কোনও যুদ্ধজোটে না গিয়ে রাষ্ট্রীয় খাতে মৌলিক ও ভারী শিল্পের বিকাশ ঘটিয়ে আর্থিক স্বনির্ভরতার পথে চলতে লাগল।
আমাদের দেশ পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর ঔপনিবেশিক শাসন শোষণ থেকে দীর্ঘ সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জন করে। পূর্বোল্লিখিত কারণে বিভক্ত বামদের দুর্বলতার প্রেক্ষিতে আমাদের মুক্তি সংগ্রামের নেতৃত্বে সেদিনের পেটি বুর্জোয়া ও মধ্যবিত্ত প্রধান দল আওয়ামী লীগ চলে আসে। ফলে সৃষ্টি হয় নানা জটিলতা। সদ্য স্বাধীন দেশের শাসক দল আওয়ামী লীগ ও এর নেতৃত্বের শ্রেণি অবস্থান, সুবিধাবাদিতা, আপোষকামিতা, দলের অভ্যন্তরে ও বাইরে প্রকৃত শত্রু মিত্র চিহ্নিত করতে না পারা, পেটি বুর্জোয়া অহমিকা থেকে নিজেদের অপ্রতিরোধ্য ভাবা, পাক–মার্কিন অব্যাহত চক্রান্ত সবকিছু মিলিয়ে বিভিন্ন শুভানুধ্যায়ী মহলের আশঙ্কা সত্য প্রমাণিত করে ’৭৫ সালের মধ্য আগস্টে ক্ষমতার রক্তাক্ত পরিবর্তন হয়ে যায়। নির্মোহ দৃষ্টিতে এ প্রতিক্রিয়াশীল পরিবর্তনের কারণ অনুসন্ধান করা দরকার কেননা সেই থেকে গত ৫০ বছরে দেশে প্রতিক্রিয়াশীলতার ধারা শুধু স্থায়ী রূপ নেয়নি উত্তরোত্তর তা আরো অধোগতির দিকে গিয়ে আজকের অবস্থায় পৌঁছেছে।
এ প্রসঙ্গেই এ বছর জন্ম শতবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করতে হয় বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের মূল নেতা, দূরদর্শী, প্রাজ্ঞ ও সময়ের শ্রেষ্ঠ প্রগতিশীল রাজনীতিবিদ তাজউদ্দিন আহমদকে। ১৯৭৩ সালেই প্রকৃত অর্থে তখন ক্ষমতাহীন তাজউদ্দিন বুঝতে পেরেছিলেন যে নজিরবিহীন রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত সদ্য স্বাধীন দেশ ক্রমে ধ্বংসের দিকে এগুচ্ছে। একথা তিনি সুহৃদ প্রফেসর আনিসুজ্জামানকে বেশ কয়েকবার বলেছিলেন। বস্তুত মুক্তিযুদ্ধ শেষে বিজয়ীর বেশে দেশে ফেরার পর বঙ্গবন্ধু নয় মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মূল নেতা তাজউদ্দিনকে প্রধানত দুটি কারণে আর আগের মত সহজভাবে গ্রহণ করতে পারছিলেন না। প্রথমত শেখ মনির মিথ্যা বয়ানে সে সময়ে সৃষ্ট তাজউদ্দিন বিরোধী পারিবারিক বৃত্তের মধ্যে তিনি সেই ৭২ সালের জানুয়ারিতেই আটকে যান, দ্বিতীয়ত এত বড় একটি সশস্ত্রযুদ্ধে নিজে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত না থাকা সত্ত্বেও সেই যুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল বিজয়কে তিনি গ্রহণ করতে, মেনে নিতে যেন একধরনের হীনম্মন্যতায় ভুগছিলেন। সেই যুদ্ধ জয়ের নায়ক তাজউদ্দিনকে প্রাপ্য কৃতিত্ব দেবার উদারতা তাঁর মধ্যে দুঃখজনকভাবে অনুপস্থিত ছিল কেননা তিনি একদিনের জন্যও নয় মাসের ঐতিহাসিক ঘটনার বিবরণ কারো কাছ থেকে শুনতে চাননি। অনেকের কাছে অপ্রিয় হলেও এটাই ছিল সেই সময়ের অনুপেক্ষণীয় বাস্তবতা। এই অনাকাঙ্খিত বাস্তবতা বঙ্গবন্ধুকে তাঁর দীর্ঘ দিনের বিশ্বস্ত অনুগামী তাজউদ্দিন থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়, ক্রমে দুজনের মধ্যে তৈরি হয় এক দুস্তর মানসিক ও চিন্তাভাবনাগত দূরত্ব। মুজিব–তাজউদ্দিন এই দূরত্ব তৈরির মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রতিক্রিয়াশীলতার সূচনা হয়। এটাকে আমি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ট্র্যাজিক ঘটনা বলে মনে করি। তখন থেকেই সার্বিকভাবে দেশের পশ্চাদপসরণ শুরু। মুক্তিযোদ্ধাদের দেশপ্রেম ও উদ্দীপনা দেশের কাজে লাগানোর ও দেশ রক্ষার জন্য তাদের দিয়ে মিলিশিয়া বাহিনী গঠনের তাজউদ্দিনের পরিকল্পনা বঙ্গবন্ধু শুরুতেই বাতিল করে দেন। তিনি তাদের অস্ত্র সমর্পণ করে বাড়িতে ফিরে যেতে বলেন। ফলে ভবিষ্যত নিয়ে হতাশা, না পাওয়ার বেদনা, কর্মহীনতা থেকে মৃত্যুঞ্জয়ী তারুণ্য জড়িয়ে পড়ে পারমিটবাজি, লাইসেন্সবাজি, চোরাকারবারি, ডাকাতি সহ নানা অপতৎপরতার বৃত্তে। এটা ছিল তারুণ্যের ত্যাগ ও প্রতিজ্ঞাকে অবচেতনভাবে নিশ্চল করে দেয়ার নামান্তর, এটা এক ধরনের হত্যাকাণ্ড। ঠিক সে সময় শেখ মনির চাপে ছাত্রলীগের দ্বিধাবিভক্তি ঠেকাতে বঙ্গবন্ধুর কোনও প্রচেষ্টা নেয়া তো দূরের কথা বরং ছাত্রলীগকে ভাঙ্গনের দিকে ঠেলে দেয়ার আত্মাঘাতী বিভক্তির পথে হাঁটেন। অবিভক্ত ছাত্রলীগের ও মুক্তিযোদ্ধদের সবচেয়ে ত্যাগী, সৎ ও নিবেদিত ক্যাডাররা বিচ্ছিন্ন হয়ে পরবর্তীতে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদে চলে যায়। সেদিন সিপিবির সাপ্তাহিক মুখপত্র ‘একতা’ পত্রিকায় বর্ষীয়ান কমিউনিস্ট নেতা কমরেড খোকা রায়কে শুধু দেখেছিলাম এ অবাঞ্চিত ঘটনাকে জাতির জন্য অশনি সংকেত উল্লেখ করে এর সুদূর প্রসারী প্রতিকূল প্রতিক্রিয়া নিয়ে একটি প্রবন্ধ লিখতে। বস্তুত এটা ছিল প্রতিক্রিয়াশীলতার পথে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের পশ্চাদপসরণের দ্বিতীয় পর্বান্তর।
এভাবে একের পর এক ঘটনা এবং নিজের শক্তি ও জনপ্রিয়তা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর পেটি বুর্জোয়া সুলভ অতি আত্মবিশ্বাস, সেই আত্মবিশ্বাস থেকে স্বাধীন দেশে শত্রু মিত্রকে একাকার করে ফেলা ইত্যাদি কারণে সংকট গভীরতর হয়ে সেই ’৭২ সালেই বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার প্রতিক্রিয়াশীল পালাবদলের সূচনা ঘটে। এদিকে চলতে থাকে মার্কিন পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির নানামুখী তৎপরতা। তাদের সহযোগী হিসাবে আগে থেকেই ছিল সরকারি দলের অভ্যন্তরের মোশতাক সহ মুক্তিযুদ্ধের ভাবাদর্শ বিরোধী, সাম্প্রদায়িকতার সমর্থক এক বিশাল অংশ। এর পরে দেখা যায় আওয়ামী লীগের দুই তৃতীয়াংশেরও বেশি আসনে বিজয় নিশ্চিত থাকা সত্ত্বেও ১৯৭৩ সালের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রধান শক্তি ন্যাপ–সিপিবির অন্তত ২০টি আসনে নিশ্চিত বিজয়কে ঠেকিয়ে দিয়ে, সেই নির্বাচনে পরাজিত মোশতাককে জিতিয়ে এনে এবং নির্বাচনকে অপ্রয়োজনীয়ভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর দল প্রমাণ করল আদতে তাজউদ্দিন সহ কয়েকজন বিরল ব্যতিক্রম ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ উদারনৈতিক মর্মবস্তুকে অন্তর থেকে ধারণ করতে শাসকদল হিসাবে আওয়ামীলীগ সামগ্রিকভাবে অক্ষম। চরম অসহিষ্ণুতা থেকে প্রগতিশীল কোনও বিকল্প শক্তির বিকাশ তাঁরা চান না। অথচ এ প্রাকৃতিক সত্য তাঁরা বুঝলেন না যে বিরোধী দল বিহীন পরিবেশে বৈরী বিকল্প শক্তি অনিবার্যভাবে গড়ে উঠে। ’২৪ এর গণঅভ্যুত্থান আবারো একথার সত্যতা প্রমাণ করলো।
মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে মাত্র সাড়ে ৩ বছরের মাথায় ফিরে এলো সামরিক শাসনের পাকিস্তানি ধারা। সামরিক ফরমান বলে ধর্ম ভিত্তিক রাজনৈতিক ব্যবসার নিষিদ্ধের সাংবিধানিক ধারা বাতিল করলেন মুক্তিযোদ্ধা জিয়া। ফলে সাম্প্রদায়িক পাকিস্তানি ভাবাদর্শ, ধর্মান্ধ সংস্কৃতি বিস্তৃত হয়ে পড়ে সমাজ মানসে। মার্কিন চাপে চালু হলো লুটেরা মুক্ত বাজার রাজনৈতিক অর্থনীতি। দীর্ঘ নয় বছর ধরে এরশাদ সেই লুটেরা ধারাকে আরো তীব্র ও বেগবান করে। মূলত ’৭৫ পরবর্তী সেই ধারা এখনো প্রচণ্ড শক্তিতে বহমান। মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী সেদিনের মধ্যপন্থী পেটি বুর্জোয়া দল আওয়ামী লীগ ’৮০ দশকের মধ্যভাগ থেকে শেখ হাসিনার একক নেতৃত্বে ক্ষমতা প্রত্যাশী হয়ে কার্যত মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী ভাবাদর্শের পক্ষে অবস্থান নেননি, জিয়া–এরশাদ প্রবর্তিত লুটেরা রাজনৈতিক অর্থনীতিকে আরো ব্যাপকতা দিয়ে, ধর্মান্ধদের সাথে আপোষের রাজনীতির পথ পরিক্রমায় অবশেষে চরম দুঃশাসনের পথ বেছে নেন। ২০০১–০৬ পর্যন্ত বিএনপি–জামাত জোট সরকারের দুঃশাসনের ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ২০০৮ সালে নিরংকুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করে শেখ হাসিনা ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার এক দুর্নিবার আকাঙ্ক্ষায় নির্বাচনী প্রতিষ্ঠান সহ সকল গণতান্ত্রিক কাঠামো ধ্বংস করে দলীয় নয়, বলতে গেলে এক ব্যক্তি শাসনের স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েম করেন। মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তি সুকৌশলে, গোপনে তাঁর দলে, প্রশাসনে, বিভিন্ন বাহিনীতে অনুপ্রবেশ করে এবং সমাজ মানসের ব্যাপক সাম্প্রদায়িকীকরণের অনুকূল পটভূমিতে সংগঠিত অবস্থান গ্রহণ করে। ছাত্র গণঅভ্যুত্থানে এদের পরিকল্পিত ও সংগঠিত ভূমিকার ফলে একটি ঐতিহ্যবাহী গণতান্ত্রিক দল, মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দল শুধু ক্ষমতাচ্যুত হয়নি, বিজয়ী চরম দক্ষিণ পন্থার চাপে আজ সমাজে ও রাজনীতিতে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে। লক্ষ লক্ষ নিরপরাধ কর্মীর জীবনে নেমে এসেছে বিপর্যয়। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তিই আজ দেশে ‘গণতন্ত্রের’ স্বঘোষিত পাহারাদার। দেশের রাজনীতিতে এত বড় প্রতিক্রিয়াশীল পালাবদল এদেশে আর কখনো হয়নি।
৫ আগস্টের রক্তাক্ত পটপরিবর্তনের পর সমাজে রাজনীতিতে গত এক বছরে ধর্ম ভিত্তিক প্রধান দু’একটি রাজনৈতিক দল প্রাসঙ্গিক শক্তি হিসাবে সামনে চলে এসেছে। এমনকি অন্তর্বর্তী সরকারকে সামনে রেখে তারা “ডিপ স্টেট পাওয়ার”কে নিয়ন্ত্রণের পর্যায়ে চলে গেছে। নিজেদের গোপন এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য তারা নির্বাচনকে যথাসম্ভব প্রলম্বিত করতে চাইছে। দীর্ঘদিনের মিত্র বিএনপিকেই এখন আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে শুধু ক্ষমতার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে বিবেচনা করছেনা, আদর্শগতভাবেও বৈরী মনে করছে। ’৫৪ বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশ আজ প্রতিক্রিয়াশীল পর্বান্তরের এক চূড়ান্ত রূপ প্রত্যক্ষ করেছে। এ পরিস্থিতিতেও প্রগতি ও প্রতিক্রিয়ার নানা মাত্রিক দ্বন্দ্ব সমাজে দৃশ্যমান। অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন ও সদর্থক পরিবর্তনের মাধ্যমে এ দ্বন্দ্বের অবসানের জন্য প্রগতির শক্তিকে জেগে উঠতে হবে। নূরল দীনের ভাষায় ডাক দিতে হবে ‘জাগো বাহে’।
লেখক : শিক্ষাবিদ, প্রাবন্ধিক, কলামিস্ট।