ফুটবলের ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে আর্জেন্টিনার সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে বাংলাদেশ সরকার। আর্জেন্টিনার সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী সান্তিয়াগো কাফিরোর সঙ্গে গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এই সমঝোতা স্মারক সই হয়।
একইসঙ্গে সরকারি ও কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকারের বিষয়ে চুক্তি এবং দুই দেশের ফরেন সার্ভিস একাডেমির মধ্যে সহযোগিতার বিষয়েও সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
মোমেনের সঙ্গে বৈঠকের আগে ঢাকার বনানীতে ৪৫ বছর পর ঢাকায় আর্জেন্টিনা দূতাবাস পুনরায় উদ্বোধন করেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ঢাকায় আর্জেন্টিনা দূতাবাসের এই নব সূচনার পুরো আয়োজনে ছিল ফুটবলমৈত্রীর বন্দনা। খবর বিডিনিউজের।
ফুটবল সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতা স্মারকের বিষয় তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, তারা ফুটবলে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন, আমাদের ছেলেমেয়েরা ওখানে যাবে, ট্রেনিং নেবে এবং সলিড সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারব। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, তারা আমাদের লোকদের প্রশিক্ষণ দিতে সম্মত হয়েছে, কীভাবে ফুটবল খেলতে হবে, এটা আমাদের জন্য প্লাস প্লাস। এর মাধ্যমে আমরা টেকনিক জানতে পারব। আশা করি, তাদের মতো না হলেও তাদের কাছাকাছি রকমের খেলতে পারব আমরা। আমি সেটার অপেক্ষায় আছি।
ব্যবসা–বাণিজ্য প্রসারের বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের দুদেশের ব্যবসা–বাণিজ্য অনেক কম। মূলত তারাই শুধু আমাদের দেশে জিনিস পাঠান। আমরা খুব কম পাঠাই। এই সফরের পরে এবং এখানে মিশন খোলার পরে আমরা আশা করি, আমাদের ব্যবসা–বাণিজ্য বাড়বে। যেমন– আমরা ভোজ্যতেল আনব, তাদের গবাদিপশুতে ভালো, আমরা এই প্রযুক্তি তাদের থেকে আনতে চাই। আমরা চাই তারাও আমাদের দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে… বিশেষ করে ওষুধ তারা নেবেন, প্রযুক্তি খাতে তারা যাতে বিনিয়োগ করেন।
যৌথ ব্রিফিংয়ে দূতাবাস পুনরায় চালুর বিষয় উল্লেখ করে সান্তিয়াগো কাফিরো বলেন, আমরা আজকে দূতাবাস খুলছি। আমি ভাবছি যে, এতদিন আমাদের দূতাবাস চালু থাকলেও ব্যবসা–বাণিজ্য কীভাবে বাড়তে পারত। তবে বাংলাদেশের মানুষ আর্জেন্টিনার প্রতি ভালোবাসা সবসময় দেখিয়েছে এবং আর্জেন্টিনাকে হৃদয়ে জায়গা করে দিয়েছে।
১৯৭৮ সালে ঢাকায় আর্জেন্টিনার দূতাবাস বন্ধ হয়ে গেলেও ফুটবল ঘিরে মানুষের বন্ধন টিকে থাকার কথা তুলে ধরে উদ্বোধনের সময় দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন, এই সময়ে কী ঘটে গেছে যে বাংলাদেশের মানুষ আর্জেন্টিনার পতাকা নিয়ে আমাদের জাতীয় দলের জন্য উল্লাস করে গেছে? এরকম আমাদের প্রত্যাশাও ছিল না। অথচ বাংলাদেশ আর্জেন্টিনার জন্য ভালোবাসা প্রকাশ করে গেছে! এর কারণ হচ্ছে, মানুষ কখনো ভোলে না। বাংলাদেশের মানুষ কখনো ভোলেনি। পৃথিবীকে তারা দেখিয়েছে আর্জেন্টিনার প্রতি ভালোবাসা। আর সেই কারণে আমরা বিনয়ের সঙ্গে এখানে এসেছি, সেই ভালোবাসার প্রতি সুবিচার করতে এবং আমাদের সম্পর্ককে শক্তিশালী করার মাধ্যম হিসাবে পুনরায় দূতাবাস চালু করছি।