বাংলাদেশে প্লাস্টিক গণতন্ত্র চায় ভারত : রিজভী

| শনিবার , ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৮:৪৯ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশে হয়ে যাওয়া দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভারতের সমর্থনের সমালোচনা করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। গতকাল শুক্রবার সকালে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সাম্প্রতিক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ভারত নাকি নির্বাচনে (৭ জানুয়ারি) সমর্থন দিয়েছে। বাংলাদেশে পাতানো নির্বাচন, জালিয়াতির নির্বাচন গোটা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত, যেখানে জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে, বর্জন করেছে, সেই নির্বাচন যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষার নির্বাচন হয়, এটাকে যদি ভারত সমর্থন জানায় তাহলে আমাদের ভাবতে হবে, ভারত নিজ দেশে শক্তিশালী গণতন্ত্র চায়, ইস্পাতের গণতন্ত্র চায়। আর বাংলাদেশে চায় প্লাস্টিকের গণতন্ত্র। এটাই প্রমাণিত হয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কথা যদি আমাদের ধরে নিতে হয়।

বিএনপির এই নেতা বলেন, তারা ব্যর্থ একটি সরকার। তারা যেমন মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা করতে পারেনি, ঠিক তেমনি দেশের স্বাধীনতাসার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে পারেনি। আজকে প্রযুক্তির যুগে প্রত্যেক মানুষ দেখছে কিভাবে মর্টার শেল আসছে, বাংলাদেশের মানুষ মারা যাচ্ছে এবং সরকার নিশ্চুপ থাকছে, নির্বিকার থাকছে। একটা স্টেটমেন্ট পর্যন্ত দিতে পারে না। সারাদেশের মানুষ ভাবছে, আমাদের স্বাধীনতা আছে কিনা, আমাদের সার্বভৌমত্ব আছে কিনা, আমরা একটা স্বাধীন দেশের নাগরিক কিনা।

কারাগারে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নির্যাতন করা হচ্ছে জানিয়ে রিজভী বলেন, কারা হেফাজতে নির্মম নির্যাতনের শিকার বিএনপির নেতাকর্মীদের কারো না কারো মৃত্যুর সংবাদ আসছে প্রায়ই। গত তিন মাসে কারাগারে নির্যাতনে বিএনপির প্রায় ১৩ জন নেতার মৃত্যু হয়েছে। প্রত্যেকটি মৃত্যু পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

বৃহস্পতিবার রংপুর কারাগারে বন্দী গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারি মহিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনা টেনে রিজভী বলেন, মনোয়ারুলের বাবা ফজলে রহমান, ছোট ভাই হারুনসহ স্বজনরা বলেছেন, ১৩ জানুয়ারি সুস্থ সবল মনোয়ারুলকে পুলিশ দিনের বেলায় বাসা থেকে তুলে থানায় নিয়ে যায়। এরপর সেইদিন আদালতে চালান না দিয়ে পরের দিন রাত পর্যন্ত থানায় আটকে রেখে বর্বরোচিত কায়দায় অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। যেটা আইনের চরম বরখেলাপ। তার সমস্ত শরীরে, পায়ে, পিঠে ও মাথায় আঘাতের গভীর চিহ্ন দেখা গেছে। পুলিশ নির্যাতন চালিয়ে মনোয়ারুলকে বিনা চিকিৎসায় হত্যা করেছে। মনোয়ারুলসহ কারা হেফাজতে মৃত্যুর প্রতিটি ঘটনার আমরা আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি করছি।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন, দেশের আইনআদালত, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন, কোর্টকাচারি, বিচারআচার সবকিছুই আওয়ামী ডামি সরকার করতলে বন্দী করে বিএনপিসহ বিরোধীদলের নেতাদের জামিনের সাংবিধানিক ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। আদালতে জামিনের জন্য বারবার আবেদন করলেও নানা টালবাহানা করা হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবুল খায়ের ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, আমিনুল ইসলাম, আলমগীর হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমিয়ানমার থেকে আসছিল ৩ লাখ ইয়াবা ও ১ কেজি আইস
পরবর্তী নিবন্ধবাঁধ কাটা পানিতে বসতঘর হারানো ৫৬ পরিবারের দিন কাটছে যেভাবে