বাংলাদেশের দুর্নীতি তদন্তে সহায়তা করতে পারে যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তারা

| বৃহস্পতিবার , ৬ মার্চ, ২০২৫ at ১১:০১ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশে বড় দুর্নীতির ঘটনাগুলো তদন্তে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সহযোগিতার আহ্বানে হাত বাড়াচ্ছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক অনুসন্ধানকারীরা। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সির (এনসিএ) ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্টিকরাপশন কোঅর্ডিনেশন সেন্টার’ (আইএসিসিসি) অন্তর্বর্তী সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এ ধরনের বড় অপরাধের ক্ষেত্রে কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে, সেই উপায় খুঁজছে বলে সব কিছু দেখে বুঝতে পেরেছে স্কাই নিউজ।

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকের দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের এক বক্তব্যের পর এই খবর দিল ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটি। এর আগে স্কাই নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা ব্রিটিশ লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দেশে বিপুল সম্পদের অভিযোগ খতিয়ে দেখে তাকে জবাবদিহির আওতার আনার কথা বলেন। ইউনূস বলেন, টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগ গুরুতর। দেশে তার বিপুল সম্পদসহ সবকিছুই খতিয়ে দেখা হবে।

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ২০২৪ সালের অক্টোবরনভেম্বরে বাংলাদেশ সফর করেন যুক্তরাজ্য সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত এনসিএ’র সদস্যরা। সংস্থাটির পরিচালিত আইএসিসিসিতে রয়েছেন বিশেষজ্ঞ দল, যারা বড় বড় দুর্নীতির তদন্তে বিদেশি অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করেন।

সূত্রের বরাতে স্কাই নিউজ লিখেছে, অনুসন্ধানমূলক এই কাজের মানে এটা নয় যে যুক্তরাজ্যের সংস্থাটি সরাসরি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে তদন্ত করবে। অথবা নির্দিষ্ট কোনো তদন্তে এনসিএ বা আইএসিসিসি কাজ করবে কি না সেটিও নিশ্চিত নয়। যাইহোক, বিগত সরকারের সময়ে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে অর্থপাচার হয়েছে কি না, সেটিই খুঁজে দেখার সম্ভাবনা বাড়ছে।

টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি তার খালা শেখ হাসিনার সঙ্গে যোগসূত্র ধরেই সামনে আসছে। ২০২৪ সালের জুলাইআগস্টের গণআন্দোলনে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রিত্ব ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। এরপর তার বিরুদ্ধে গুমখুনের অভিযোগ, জুলাই আন্দোলনে গণহত্যা ও ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর দুদক টিউলিপসহ শেখ পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ ও অর্থপাচারের অভিযোগ এনেছে। দুদকের তদন্তে নাম আসার পর লন্ডনে বেশ কয়েকটি বাড়ির সন্ধান পাওয়া যায়, যেগুলো টিউলিপ ও তার পরিবারের সদস্যরা শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের কাছ থেকে উপহার হিসেবে পেয়েছেন।

টিউলিপ ও তার পরিবার ঘনিষ্ঠদের নিয়ে দুর্নীতির মামলা ছাড়াও ঢাকার পূর্বাচলে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের অনিয়ম করে নেওয়া প্লটের মামলাতেও তার নাম এসেছে। এছাড়া গাজীপুরের কানাইয়ায় অবকাশযাপনের বাড়ি ‘টিউলিপ’স টেরিটরি’ নিয়েও অনুসন্ধান করছে দুদক। এর মধ্যেই গুলশানে ‘সিদ্দিকস’ নামে একটি বিলাসবহুল ভবনের সঙ্গে তার যোগসূত্রের খবর দেয় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ। গুলশানের অন্য একটি সম্পত্তি এবং ধানমন্ডিতে শেখ হাসিনার বাড়ির সঙ্গেও টিউলিপের সংযোগের কথা লিখেছে টেলিগ্রাফ। টিউলিপ পরিবারের আরেক সদস্যের সঙ্গে এর আগে ঢাকায় ১ লাখ পাউন্ডের একটি ফ্ল্যাটের মালিক হয়েছিলেন, যেটি ২০১৫ সালে বিক্রি করে দেওয়া হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবারকোডে দেশি-বিদেশি ২৬০ পদের ইফতার
পরবর্তী নিবন্ধশিপ রিসাইক্লিং সেক্টরে নেতৃত্ব ধরে রাখতে বৈশ্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন