বাংলাদেশকে টাইব্রেকারে হারিয়ে ভারতের শিরোপা

সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ ফুটবল টুর্নামেন্ট

ক্রীড়া প্রতিবেদক | সোমবার , ১৯ মে, ২০২৫ at ৮:৪৯ পূর্বাহ্ণ

সাফ অনূর্ধ্ব১৯ ফুটবল টুর্নামেন্টের শিরোপা বঞ্চিত হলো বাংলাদেশ। টাইব্রেকারে ভারতের কাছে ৪৩ গোলে হেরে যায় তারা ফাইনালে। গতকাল রোববার ভারতের অরুণাচলে ইউপিয়ার গোল্ডেন জুবলি স্টেডিয়ামে দু’দলের নির্ধারিত সময়ের খেলা ১১ গোলে ড্র ছিল। টুর্নামেন্টের বাইলজ অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে ড্র থাকলে খেলা সরাসরি টাইব্রেকার। সাফের বয়সভিত্তিক খেলায় নকআউটে অতিরিক্ত সময় সাধারণ থাকে না। গতকাল ফাইনালের প্রথম মিনিটেই ম্যাচে লিড নেয় ভারত। বাংলাদেশের গোলরক্ষক মাহিন পোস্ট থেকে একটু বেশি এগিয়ে ছিলেন। ভারতের ফরোয়ার্ড এটি খেয়াল করে তার মাথার উপর দিয়ে শট নেন। মাহিন সেই ফ্লাইট মিস করে গোল হজম করেন। তিনি পজিশনে থাকলে ভালো মতোই বল গ্রিপে নিতে পারতেন। প্রথম মিনিটেই পিছিয়ে পড়ার পর ভারত বাংলাদেশকে চেপে ধরে। টানা কয়েকটি আক্রমণে বাংলাদেশের রক্ষণ ও গোলরক্ষককে ব্যতিব্যস্ত রাখে। প্রথম ২০ মিনিট ভারতের আক্রমণ সামাল দিয়ে বাংলাদেশ স্বাভাবিক খেলায় ফেরার চেষ্টা করে। বাংলাদেশের একটি আক্রমণ পোস্টে লেগে ফেরতও আসে। ৪২ মিনিটে কর্ণার থেকে এক আক্রমণে বাংলাদেশ ভারতের জালে বলও পাঠায়। রেফারি অবশ্য এর আগেই ফাউলের বাঁশি বাজান। টিভি রিপ্লে কিংবা খেলার ধরনে ফাউলের তেমন কোনো অ্যাকশন স্পষ্ট হয়নি। বাংলাদেশের ফুটবলাররাও এতে বিস্মিত হন। হাফ টাইমে রেফারিকে এ নিয়ে জেরাও করেন কয়েকজন। দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশ খেলায় সমতা আনার প্রাণান্ত চেষ্টা করে। ৬২ মিনিটে অবশ্য জটলার মধ্যে থেকে গোলে আসে সমতা। কর্নার থেকে ভারতের বঙে কয়েক দফা ঘুরে বল পান জয় আহমেদ। তার নেয়া শট ভারতের ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে বল জালে জড়ায় বাংলাদেশ ম্যাচ সমতার আনন্দে মাতে। পুরো টুর্নামেন্টে এটিই ভারতের জালে প্রথম বল প্রবেশের ঘটনা। বাকি সময় বাংলাদেশ কয়েকটি গোলের সুযোগ তৈরি করলেও ফিনিশিং দুর্বলতায় লিড নিতে পারেনি। উল্টো পাঁচ মিনিট ইনজুরি সময়ে গোল থেকে রক্ষা পায় বাংলাদেশ। ভারতের সংঘবদ্ধ আক্রমণে গোলরক্ষক মাহিন পোস্ট থেকে বেরিয়ে আসেন এরপর অরক্ষিত পোস্টে ভারতের ফরোয়ার্ড শট নিলেও সেটা তেমন জোরালো না হওয়ায় বাংলাদেশের ডিফেন্ডার গোললাইন সেভ করতে সমর্থ হন। এর পরপরই রেফারি খেলা শেষের বাঁশি বাজান। এরপর টাইব্রেকার। টাইব্রেকার মানেই স্নায়ুযুদ্ধ। ফাইনালের এই টাইব্রেকার ছিল বেশ নাটকীয়তাপূর্ণ। বাংলাদেশ টাইব্রেকারের এক পর্যায়ে লিড নিয়েছিল। ভারত তাদের তৃতীয় শট পর্যন্ত এক গোলে পিছিয়ে ছিল। বাংলাদেশ চতুর্থ ও পঞ্চম শট মিস করে। ভারত চতুর্থ ও শেষ শটে গোল করে ৪৩ ব্যবধানে জয় পায়। টাইব্রেকারে বাংলাদেশ প্রথমে শট নেয়। মিঠু চৌধুরী গোল করে বাংলাদেশকে লিড এনে দেন। ভারতও প্রথম শটে গোল করে। দ্বিতীয় শটে মুর্শেদ আলী গোলের ধারাবাহিকতা ধরে রাখেন। ভারতের দ্বিতীয় শট বাংলাদেশের গোলরক্ষক মাহিন হোসেন সেভ করেন। নির্ধারিত সময়ে বাংলাদেশের গোলদাতা জয় আহমেদ তৃতীয় শটে গোল করলে টাইব্রেকারে স্কোর লাইন দাঁড়ায় ৩১। বাংলাদেশ শিরোপার প্রায় দোরগোড়ায়। কিন্তু তখনও যে নাটকীয়তা বাকি। ভারত তৃতীয় শটে গোল করে ব্যবধান ৩২ করে। বাংলাদেশের হয়ে চতুর্থ শট নিতে যান অধিনায়ক নাজমুল হুদা ফয়সাল। যিনি পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলেছেন। নিজে তিন গোল করেছেন আবার করিয়েছেন একাধিক। তার নেয়া শট পোস্টের উপর দিয়ে যায়। বাংলাদেশের দুর্গতি শুরু হয় এ থেকে। চতুর্থ শটে ভারত গোল করে ম্যাচে ৩৩ এ সমতা আনে। পঞ্চম ও শেষ শট নেন সালাউদ্দিন শাহেদ। তার নেয়া শট ভারতের গোলরক্ষক আটকে দেন। পঞ্চম ও শেষ শটে ভারত গোল করলেই চ্যাম্পিয়ন হবে তারা। এই অবস্থায় বাংলাদেশের গোলরক্ষক মাহিন ভারতের শেষ শট আটকানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। তাতে ভারত শিরোপা জয়ের উল্লাসে মাতে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে সিরিজ নিশ্চিত করার ম্যাচ আজ টাইগারদের
পরবর্তী নিবন্ধ‘তাণ্ডব’: রহস্য বাড়ালেন শাকিব