বাঁশখালী উপজেলা একটি দুর্যোগ প্রবণ এলাকা এবং এখানকার মানুষ ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, নদী ভাঙন, পাহাড় ধস ও পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পাহাড়ে বসবাসকারী বাসিন্দারা বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকা থেকে সহায় সম্পত্তি হারিয়ে পাহাড়ে বসবাস করছে এবং সেখানে পাহাড় ধ্বসে বিপদগ্রস্ত হয়ে হতাহত হচ্ছে। বাঁশখালী উপজেলা প্রশাসন দুর্যোগ কবলিত মানুষের পুনবার্সন ও সচতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছে এবং এক্ষেত্রে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ইপসাসহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার, জনপ্রতিনিধি, সরকারী বিভিন্ন সংস্থা, কমিউনিটির মানুষ সকলের সম্মিলিত সহযোগিতা প্রয়োজন।
গতকাল বুধবার সকালে বাঁশখালী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সেভ দ্য চিলড্রেন এবং ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল এ্যাকশন ইপসা, রাইমসের (টেকনিক্যাল পার্টনার) বাস্তবায়নে ‘Anticipatory Actions for Landslides Causing Displacement of the Communities of Chattogram District of Bangladesh’ প্রকল্পের অবহিতকরণ সভায় এমনটি মন্তব্য করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাঁশখালী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জসীম উদ্দিন। তিনি বলেন, এই ব্যতিক্রমী বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে দুর্যোগের আগাম সংকেত প্রদান, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, পাহাড় ধস প্রতিরোধে জাতীয় নীতিমালা প্রণয়নে অ্যাডভোকেসি কৌশল প্রণয়নে উপজেলা প্রশাসন সর্বাত্মক সহযোগিতা করে যাবে।
ইপসার প্রকল্প সমন্বয়কারী ড. প্রবাল বড়ুয়ার সভাপতিত্বে সংবাদ ও উন্নয়নকর্মী কল্যাণ বড়ুয়ার সঞ্চালনায় সভায় অতিথি ছিলেন উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা, সুপন কুমার নন্দী, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম চৌধুরী শাওন, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. শওকতুজ্জামান, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কুহেলিকা সরকার, উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ আবু সুফিয়ান, বাঁশখালী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনোতোষ দাশ, বন বিভাগের সাধনপুর বনবিট কর্মকর্তা মো. আল আমীন, উপজেলা এনজিও সমন্বয়কারী মো. নজরুল ইসলাম, সিপিপি লিডার ও ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে প্রেজেন্টেশান উপস্থাপন করেন ইপসার ড. প্রবাল বড়ুয়া। প্রকল্প অবহিতকরণ সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন সভায় অতিথিরা বলেন, উপযুক্ত উপকারভোগী নির্বাচন ও তাদের জন্য সত্যিকার উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড প্রকল্প সফলতার মূল কৌশল হবে।
সভায় জানানো হয় বাঁশখালী উপজেলার সাধনপুর ও পুকরিয়া ইউনিয়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। মূলত এই প্রকল্পটি প্রকল্পভূক্ত এলাকায় পাহাড়ধসের জন্য আগাম সতর্কতা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার একটি পদক্ষেপ। পাহাড়ধসের প্রভাব কমাতে সময়মত এবং কার্যকর সতর্কতা নিশ্চিত করা এবং এর সমস্যা, গ্যাপ শনাক্ত করে এবং কংক্রিট সমাধান প্রস্তাব করে। এছাড়া প্রকল্পের মাধ্যমে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি, নগর স্বেচ্ছাসেবক, শিশু ও যুব সংগঠকক, রিসোর্স পুল, ইন্টারপ্রিটার পুল সহ বিভিন্ন গ্রুপ ভিত্তিক প্রশিক্ষণ, কনসালটেশন সভা, ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে সচেতনতা আনয়ন, ভয়েস মেসেজ ও সেক্টর ভিত্তিক আবহাওয়া বার্তা প্রদান, ঝুঁকি নিরূপণ প্রতিবেদন তৈরি, স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে এডভোকেসী, গবেষণা কর্ম এবং কমিউনিটি পর্যায়ে শর্ত ও শর্তবিহীন ক্যাশ সাপোর্ট, রেইন গেইজ, মাটির আদ্রতা পরিমাপক ডিজিটাল ডিভাইস স্থাপন সহ বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করবে।