বাঁধ কেটে আড়াই হাজার একর বনভূমি উদ্ধার

বন ডুবিয়ে কৃত্রিম লেক সৃষ্টি করে মাছ চাষ

| রবিবার , ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৭:৫৯ পূর্বাহ্ণ

বন ডুবিয়ে কৃত্রিম লেক সৃষ্টি করে মাছ চাষ

লোহাগাড়া প্রতিনিধি 

লোহাগাড়া উপজেলার বড়হাতিয়া এবং সাতকানিয়া উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকায় বাঁধ দিয়ে বন ডুবিয়ে কৃত্রিম লেক সৃষ্টি করে দীর্ঘদিন যাবত মাছ চাষ করে আসছিল একটি প্রভাবশালী মহল। গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ৩টা থেকে চট্টগ্রাম বন সার্কেলের বন সংরক্ষক বিপুল কৃষ্ণ দাসের নির্দেশনায় বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে বনবিভাগের লোকজন বাঁধ কেটে দিয়ে আড়াই হাজার একর বনভূমি উদ্ধারের প্রক্রিয়া শুরু করেন। রাত ১০টায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত ছিল বলে জানা গেছে।

জানা যায়, ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে ওই বনের সোনাকানিয়া ছড়ায় মাটির বাঁধ দিয়ে পানি চলাচল বন্ধ করে দেয় একটি প্রভাবশালী মহল। এরপর থেকেই চলছে মাছ চাষ। এতে লোহাগাড়ার বড়হাতিয়া ও সাতকানিয়ার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের প্রায় ৪ হাজার ২৫৫ একর জমির চাষাবাদ ব্যাহত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় কৃষকেরা শুরু থেকেই সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করে আসছিলেন। কৃত্রিম লেক তৈরির কারণে বিভিন্ন প্রজাতির ছোটবড় প্রায় পাঁচ লাখ গাছ মরে যায়।

এদিকে বনবিভাগ বাঁধ কেটে দেয়ার খবরে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় শতাধিক লোক সেখানে ছুটে যান। তারা জানান, আজ আমরা খুবই আনন্দিত। এই বাঁধের কারণে পানি থাকায় চাষাবাদ বন্ধ ছিল। ফলে পতিত পড়ে ছিল কৃষিজমি। এখন বাঁধ কেটে দেয়া হচ্ছে। আগের মতো পানি পাওয়া যাবে। চাষাবাদের আওতায় আসবে পানির অভাবে পতিত থাকা জমি।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, বিভাগীয় বন কর্মকর্তার নির্দেশে বনবিভাগের প্রায় ৬০ জন বনকর্মীর উপস্থিতিতে বনের জায়গায় দেয়া বাঁধ অপসারণ করা হচ্ছে। প্রায় ৩০ জন শ্রমিক বাঁধ কাটার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। শ্রমিকরা কোদাল দিয়ে বাঁধের মাঝ বরাবর অংশ কেটে পানিপ্রবাহের পথ তৈরি করছেন। মাটি নরম করার জন্য শ্যালো মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে। আর বাঁধ এলাকায় নির্মিত টিনের ঘর ভেঙে দিয়েছেন ক্ষুব্ধ কৃষকেরা। সহকারী বন সংরক্ষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, এই অবৈধ বাঁধ পুরোপুরি কেটে দেয়া হবে। এরপর এই বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে। এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাজেকে তিনদিনের সফরে আসছেন রাষ্ট্রপতি
পরবর্তী নিবন্ধকলেজ প্রভাষকের আত্মহত্যা