রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বহরে যুক্ত হচ্ছে আরও ৩৫টি মিটারগেজ যাত্রীবাহী কোচ। দক্ষিণ কোরিয়া থেকে প্রথম চালানে চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছে ১৫টি কোচ। অবশিষ্ট ২০টি কোচও আসার পথে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কোচ্লগুলো খালাসের পর গতকাল পাহাড়তলী রেলওয়ে কারখানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখান থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী এবং রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের উপস্থিতিতে ট্রায়ালরানের পর রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে যুক্ত হবে দক্ষিণ কোরিয়ার নতুন আধুনিক কোচ গুলো।
রেলওয়ের মেকানিক্যাল বিভাগ থেকে জানা যায়, কোচ গুলো ট্রায়ালরানে সফলভাবে উত্তীর্ণ হওয়ার পর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে যুক্ত হবে। এর আগে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আমদানি করা ১৫০ মিটারগেজ কোচ ঢাকা–চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম–সিলেট, চট্টগ্রাম–ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম–কঙবাজার, চট্টগ্রাম–চাঁদপুরসহ বিভিন্ন রুটে চলাচলরত ট্রেনে যুক্ত হয়েছে।
কোরিয়া থেকে আমদানি করা নতুন মিটারগেজ কোচগুলোর অত্যান্ত আরামদায়ক সিট, অটোমেটিক স্লাইড ডোর, বায়ো টয়লেট, সিসি ক্যামেরাসহ আরও কিছু নতুন প্রযুক্তি যুক্ত আছে। নতুন যে কোচ গুলো এসেছে সেগুলোও একই মডেলের। আধুনিক উচ্চগতির কোচ। পাহাড়তলী রেলওয়ে কারখানার কর্মব্যবস্থাপক প্রকৌশলী রাজীব দেবনাথ আজাদীকে বলেন, আগের একটি প্রকল্পে পূর্বাঞ্চলের জন্য দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ৩৫টি মিটারগেজ কোচ আমদানির বরাদ্দ ছিল। কোচ গুলো এখন আসতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে ১৫টি কোচ এসেছে। গত বুধবার রাতে কোচগুলো বন্দর থেকে খালাস করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (গতকাল) আমাদের পাহাড়তলী ওয়ার্কশপে এসে পৌঁছেছে। অবশিষ্ট কোচগুলোও এসে পৌঁছবে। কোচ গুলো দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আসছে। রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মেকানিক্যাল বিভাগ থেকে জানা গেছে, কোচ গুলো ট্রায়ালরান শেষে পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে যুক্ত হবে।
পূর্বাঞ্চলে বর্তমানে চালু আছে ৬০ ট্রেন : রেলওয়ের তথ্য মতে, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বর্তমানে ৫৮টি আন্তঃনগর এবং কমিউটার ও মেইল ট্রেনসহ ৬০টি ট্রেন চলাচল করে। এছাড়াও চট্টগ্রাম থেকে সারাদেশে ৮টি কনটেইনার ট্রেন এবং ১৯টি গুডস ট্রেন চলাচল করে।
পূর্বাঞ্চলে বন্ধ ট্রেনের সংখ্যা ৩৭টি : রেলওয়ের তথ্য মতে পূর্বাঞ্চলে বর্তমান বন্ধ থাকা ট্রেনের হিসাবে দেখা যায়, লোকাল ও ডেমু ট্রেন মিলিয়ে পূর্বাঞ্চলে ৩৭টি ট্রেন বন্ধ রয়েছে।
যে সব রুটের ট্রেন বন্ধ : বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, পূর্বাঞ্চলে বন্ধ থাকা চট্টগ্রাম–দোহাজারী–চট্টগ্রাম রুটের দোহাজারী কমিউটার ১/৬ ট্রেন ২০২৩ সালের ১ আগস্ট, চট্টগ্রাম–সিলেট–চট্টগ্রাম রুটের জালালাবাগ এঙপ্রেস ১৩/১৪ ট্রেন ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর। এছাড়া চট্টগ্রাম–নাজিরহাট–চট্টগ্রাম রুটের নাজিরহাট কমিউটার ১/৬ ট্রেন ২০২৩ সালের ৮ ডিসেম্বর, চট্টগ্রাম–চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়–চট্টগ্রাম রুটের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কমিউটার ১/২/৩/৪ ট্রেন, চট্টগ্রাম–পটিয়া–চট্টগ্রাম রুটের পটিয়া কমিউটার ১/২ ট্রেন ২০২৩ সালের ৮ ডিসেম্বর বন্ধ হয়ে যায়। এসব ট্রেন বন্ধ হাওয়ার কারণ হিসেবে ‘এমসি আন্ডার রিপেয়ার’ থাকার কথা বলা হয়েছে। আখাউড়া–সিলেট–আখাউড়া রুটের কুশিয়ারা এঙপ্রেস ১৭/১৮ এঙপ্রেস ২০২০ সালের ৩ মার্চ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এসব ট্রেন ইঞ্জিন, ক্রু ও কোচ সংকটে বন্ধ হয়ে যায়।
লাকসাম–চাঁদপুর–লাকসাম রুটের চাঁদপুর কমিউটার ৮১/৮২ ট্রেন, লাকসাম–নোয়াখালী–লাকসাম রুটের নোয়াখালী কমিউটার ৮৫/৮৮ ট্রেন ২০২০ সালের ২৪ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে। পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য রুটে যেমন ময়মনসিংহ–দেওয়ানগঞ্জ ময়মনসিংহ–ভৈরব, সিলেট–ছাতকবাজার–সিলেট রুটের লোকাল ঢাকা–ময়মনসিংহ রুটে অনেক ট্রেন বন্ধ রয়েছে।