আমি একজন সাধারণ লেখক। দীর্ঘ সময় ধরে আমি চট্টগ্রামের বিভিন্ন পত্রিকায় উপ–সম্পাদকীয় কলাম লিখে আসছি। পেশাগত জীবনে আমি সরকারি কলেজে অধ্যাপনা করেছি ১৯৭৪ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত। ২০০৭ সালে আমি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষর পথ থেকে অবসর গ্রহণ করি। অবসর গ্রহণের পর আমি গরিব জনগোষ্ঠীর ছেলে মেয়েদের জন্য একটি প্রাথমিক স্কুল প্রতিষ্ঠা করি এবং গরিব ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া শিখানোর কাজে আত্মনিয়োগ করি এবং একটি বেসরকারি কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্বও পালন করি।
চট্টগ্রামের সাহিত্য সংস্কৃতি জগতে কিছু কাজ করেছি। সাহিত্য সংস্কৃতির সংগঠনের সাথে আমি যুক্ত ছিলাম। ছাত্র জীবনে আমি ছাত্র রাজনীতির সাথেও জড়িত ছিলাম। পেশাগত জীবনে শিক্ষকতার পাশাপাশি স্কাউটিং এবং স্কুল কলেজের ক্রীড়ার সাথেও যুক্ত ছিলাম। বয়সের কারণে মানুষকে অনেক কাজ ছেড়ে ঘরে চলে আসতে হয়, বয়সের কারণে নানা অসুখ শরীরে বাসা বাঁধে। বর্তমানে আমি পত্রিকায় লেখালেখি ছাড়া অন্য কোন কাজ করতে পারি না। এই সুযোগে আপনাদের সাথে আমার কিছুদিন পর পর লেখার মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন হয়। আপনারা লেখার মাধ্যমে আমার অনেক কথা জানতে পারেন।
বর্তমানে সারা বিশ্বব্যাপী যুদ্ধবিগ্রহের অবস্থা দেখে আমি রাতদিন বিচলিত বোধ করি। ফিলিস্তিনে ইসরাইলি সেনাদের বর্বরতা, অমানবিকতা গণমাধ্যমে দেখে আমি সহ্য করতে পারি না। তার সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলির নিষ্ঠুরতা এবং তাদের বাকচাতুর্য আমাকে সবসময় ব্যথিত করে। গত কয়েক মাসে আমি ইসরাইলিদের ফিলিস্তিনে অত্যাচারের বিষয়ে কয়েকটি প্রবন্ধ লিখে আপনাদের সামনে পেশ করেছি। হয়তো আপনাদের চোখে পড়েছে। এ ধরনের আমার একটি লেখায় আমি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছিলাম, রাশিয়া এবং ইউক্রেনের যুদ্ধ এবং ফিলিস্তিনের ইসরাইলি হামলা, ইরানের সঙ্গে ইসরাইলের সংঘাত এই ঘটনাগুলি থেকে পরমাণু যুদ্ধের সূচনা হতে পারে। এই বিষয়ে একটি বিশ্লেষণে আমি বলেছিলাম আগামী সেপ্টেম্বর মাসে রাশিয়া এবং ন্যাটো দেশগুলির মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা দেশগুলি যদি রাশিয়াকে পরাজিত করতে চায় অথবা তাদের মনে রাশিয়াকে নিশ্চিহ্ন করার স্বপ্ন জেগে ওঠে তাহলে এই বছরের শেষের দিকে পরমাণু যুদ্ধ লেগে যেতে পারে। এই আশঙ্কা সত্য হোক সেটা আমি একেবারেই কামনা করি না। যদি বিশ্বযুদ্ধের সূত্রপাত হয় তাহলে পৃথিবীতে আমেরিকা, ইসরাইল হোক রাশিয়া, চায়না হোক কারো কোন নাম নিশানা চিহ্ন পর্যন্ত থাকবে না। সুতরাং আমরা কেউই পরমাণু যুদ্ধ কামনা করি না। কিন্তু এই মুহূর্তে পরিস্থিতি দেখে তার আশঙ্কা সম্পূর্ণরূপে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
আমাদের দেশে অনেক অর্থনীতিবিদ এবং উন্নয়ন বিশ্লেষক চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রসঙ্গে কথা বলতে শুনি। উনারা গণমাধ্যমে, টেলিভিশন কিংবা পত্র–পত্রিকায় চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য আমাদের তরুণ সমাজকে প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান। আমি এই বিষয়ে আমার নিজস্ব মতামত তুলে ধরতে চাই। আমার মনে হয় যাকে আমাদের বিশ্লেষকগণ চতুর্থ শিল্প বিপ্লব নামে অভিহিত করছেন সেটা গতানুগতিক দৃষ্টিকোণ থেকে যাকে আমরা শিল্প বিপ্লব বলি সে ধরনের কিছু হওয়ার সম্ভাবনা নাই। যদি চতুর্থ শিল্প বিপ্লব নামে কোন কিছু ঘটে তবে সেটা হবে প্রযুক্তির বিপ্লব কারণ গতানুগতিক বা ট্রেডিশনাল শিল্প আগামী দিনে আগের কায়দায় প্রসারিত হওয়া বা বিকশিত হওয়ার কোন সম্ভাবনা নাই। এর কারণ হচ্ছে, আমরা বিগত শতাব্দীর শুরুর দিক থেকে মধ্যভাগ পর্যন্ত যে ধরনের পণ্য ভোগ ব্যবহার এবং উৎপাদনে অভ্যস্ত ছিলাম বর্তমানে সেই সব পণ্যের উৎকর্ষ সাধিত হওয়ার মাধ্যমে তার গুণগতমান এবং ব্যবহার প্রণালী পাল্টে গেছে। যেমন আগে আমরা যে ধরনের মোটরগাড়ি ব্যবহার করতাম এখন আমরা সেটা বাদ দিয়ে আমরা হাইব্রিড মোটরগাড়ি এমনকি উড়ন্ত মোটর গাড়ির দিকেও যাওয়ার চেষ্টা করছি। আমরা কাঁচামাল নির্ভর যে সমস্ত পণ্য ব্যবহার করতাম তার পরিবর্তে এখন আমাদের পণ্যের অর্ধেক বা আরো বেশি প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে গেছে যেমন মোবাইল ফোন সেট, ল্যাপটপ, কম্পিউটার এই জাতীয় পণ্য সম্পূর্ণ প্রযুক্তি নির্ভর একেবারে কাঁচামাল নির্ভর নয়। মোটরগাড়ি, রোবট এবং অন্যান্য যন্ত্রপাতি যা নাকি প্রযুক্তি চালিত আমরা এখন সে সব বেশি ব্যবহার করছি। ভবিষ্যতে আমরা হয়তো স্মার্ট হাউস অথবা বিমানযাত্রায় গ্লাইডার অথবা জ্বালানি বিহীন উড়ন্ত যান ব্যবহার করতে পারি। সুতরাং যখন আমরা কাঁচামাল নির্ভর পণ্য ব্যবহার করবো না তখন গতানুগতিক শিল্পের যন্ত্রপাতিতে পরিবর্তন আসবে এবং সবকিছু হবে প্রযুক্তি চালিত অথবা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এ.আই চালিত। সুতরাং শিল্প বলতে যেটা বোঝায় সেটা আগাগোড়া পরিবর্তিত হয়ে যাবে। সুতরাং শিল্প বিপ্লব যাকে আমরা কল্পনা করছি চতুর্থ শিল্প বিপ্লব সেটা মূলত প্রযুক্তির বিপ্লব। প্রযুক্তি আরও আপগ্রেড হবে এবং সেখানে বুদ্ধিমত্তা যুক্ত হবে, এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব মানুষের অনেক কাজকর্ম কমিয়ে দিবে। এ বিপ্লব কী ধরনের হবে সে ব্যাপারে আমি একটি উদাহরণ দিতে পারি যেমন অতি সমপ্রতি গত ১৫ দিনের মধ্যে একটি বিতর্ক দেখা দিয়েছে সেটি হল এ.আই অথবা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যাপকভাবে প্রসার লাভ করার পর সেই রোবট গুলি কি মানুষের বিকল্প হিসেবে এ দুনিয়াতে স্থাপিত হবে। তারা কি মানুষকে নিশ্চিহ্ন করে দেবে? পৃথিবীটা কি তখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার রোবটের দখলে চলে যাবে? এটি একটি প্রশ্ন। হয়তো যাবে হয়তো যাবে না। আরেকটি প্রশ্ন হচ্ছে অনেকেই দেখিয়ে দিয়েছেন যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষের বিকল্প হবে না এবং মানুষকে নিশ্চিহ্নও করতে পারবে না। কারণ তাদেরকে পরিচালনা করবে মানুষ সেই ক্ষেত্রে যে সমস্ত কঠিন কাজ এখন শ্রমিক শ্রেণির মানুষ সম্পন্ন করে, সে সমস্ত কাজ নিখুঁতভাবে করবে প্রযুক্তি। অনেক বড় বড় অ্যাসেম্বলি লাইনে উৎপাদন করতে গিয়ে মানুষ শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, সেই সব কাজ এবং বুদ্ধিমত্তাজনিত কাজ রোবট করবে। তাতে মানুষের কর্মসংস্থান কমতে পারে কিন্তু মানুষ মানুষের জায়গায় থাকবে এবং মানুষ তাদেরকে পরিচালনা করে উন্নতির নতুন একটি দুয়ার খুলে ফেলতে পারবে। সুতরাং মানুষের প্রযুক্তি এবং চিন্তার বিপ্লব কোথায় হবে এবং কীভাবে হবে এটি একটি প্রশ্ন। আগামী দিনে সে প্রযুক্তি বিপ্লব আমাদের কৃষি ব্যবস্থাকে পরিবর্তিত করবে, আমাদের কৃষি উৎপাদনে প্রভাব বিস্তার করবে, আমাদের জীবন যাপন ব্যবস্থায় প্রভাব বিস্তার করবে, আমাদের শাসন পরিচালনায় কীভাবে প্রভাব বিস্তার করবে, আমাদের শিল্প কলকারখানার যন্ত্রপাতির ক্ষেত্রে কীভাবে প্রভাব বিস্তার করবে, এভিয়েশন অর্থাৎ উড়োজাহাজে চলাচল অথবা সমুদ্রে চলাচলে কী পরিবর্তন ঘটাবে এবং মাঠের ভিতরে প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ এই প্রযুক্তির বিপ্লব কী প্রভাব ফেলবে সেটি এখন কোন একজন সাধারণ মানুষের পক্ষে কল্পনা করাও সম্ভব নয়। তাই আমি মনে করি যারা অত্যন্ত হালকা ভাবে আগামী দিনের প্রযুক্তি এবং এ.আই প্রযুক্তি দ্রুত বিপ্লবের কথা বলে তাদেরকে অনেক বিশ্লেষণধর্মীভাবে অনেক চিন্তাশীলভাবে কথাবার্তা বলতে হবে। কারণ আমাদের দেশে মানুষ বিশেষ করে তরুণ সমাজ এ.আই প্রযুক্তি বিপ্লবের দ্বারা কিভাবে প্রভাবিত হবে সেটি পুরোপুরি অনুধাবন করার ক্ষমতা আমাদের কারো নাই। যখন এটি ঘটবে তখন আমরা সেটি দেখতে পাবো। সুতরাং আমাদের এই মানসিক প্রস্তুতি নিতে হবে যে আমরা যেন এ পরিস্থিতি আসলে তাকে সামাল দেওয়ার মতো সব রকমের মানসিক প্রস্তুতি আমাদের থাকে। এ.আই বুদ্ধিমত্তা বা এ.আই যখন মহাশূন্য অভিযানে সামরিক যুদ্ধবিদ্যায় ব্যবহৃত হবে, যুদ্ধক্ষেত্রে অস্ত্রশস্ত্র যখন এ.আই দ্বারা পরিচালিত হবে, যুদ্ধ কৌশল যখন এ.আই দ্বারা পরিচালিত হবে তখন পারমাণবিক যুদ্ধ ক্ষেত্র বা পারমাণবিক শক্তির যুদ্ধক্ষেত্রের ব্যবহারের বিষয়টি অনেক ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে বলে আমি মনে করি। সে অবস্থায় পারমাণবিক যুদ্ধ কি পরিমাণে মানুষের ক্ষতি করবে এবং মানুষের কি হাল ঘটাবে সেটা এখন অনুমান করতে আমার হৃদয় কেঁপে ওঠে। আমি আশা করব বুদ্ধিজীবী, বিজ্ঞানী, অর্থনীতিবিদ, রাজনীতিবিদ, শাসকগণ ক্ষমতার আসনে বসা মানুষজন তারা সবাই অত্যন্ত সতর্কতার সাথে কথা বলবেন এবং গভীরভাবে চিন্তাভাবনা করবেন।
এখানে একটি বিষয় আমাদের খেয়াল রাখতে হয় সেটা হল যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপে কোন কিছু ঘটে তখন তারা তাদের গণমাধ্যম এত শক্তিশালী যে তারা সেটিকে বৈশ্বিক সমস্যা হিসেবে আমাদের সামনে তুলে ধরে কিন্তু বাংলাদেশ বা ভারত বা শ্রীলংকার কোনো সমস্যা সেটা বৈশ্বিক সমস্যা না, সেটা হল আমাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যা। প্রশ্ন হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের যে ছাত্র আন্দোলন হচ্ছে এটি বৈশ্বিক সমস্যা নয়, এটি হলো তাদের কু–কর্মের প্রতিক্রিয়া।
আমরা আরেকটি বিষয় লক্ষ্য করতে পারি সেটি হল ইসরাইলের ফিলিস্তিনের উপরে বর্বর হামলা চালানোর সময় গণমাধ্যমে প্রচার করা হয় যে, ফিলিস্তিনে মুসলমানদের মারা হচ্ছে। কিন্তু এটা নিশ্চয়ই আপনাদের অনেকেই জানেন যে ফিলিস্তিনে মুসলিম ছাড়া খ্রিষ্টানও আছে এবং তারাও এখানে মারা যাচ্ছে। সুতরাং ইসরাইল ফিলিস্তিনকে শেষ করে দেবে এটাকে ধর্মভিত্তিকভাবে পুরোপুরি ব্যাখ্যা করা সঠিক নয়। অন্যদিকে সমস্ত মুসলিম দেশের যে প্রতিক্রিয়া তা মোটেও প্রশংসনীয় নয়। যদি এরকম হয় যে ফিলিস্তিনি মুসলিমরা মারা যাচ্ছে তাহলে সারা বিশ্বের মুসলিম দেশগুলি একমাত্র ইরান ছাড়া কেনো নিশ্চুপ আছে। সে দিক থেকে আমি বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করি, বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর মেয়ে শেখ হাসিনা এই যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের সমর্থন দিয়েছেন সাহায্য করেছেন এবং যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য বিশ্ব নেতৃবৃন্দের কাছে আহবান জানিয়েছেন। আপনি আওয়ামী লীগের যত সমালোচনা করুন কিন্তু শেখ হাসিনার সাহসী পদক্ষেপ এটি জাতি অনেকদিন ধরে মনে রাখবে এক্ষেত্রে আমি বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দলকে অনুরোধ করব তারা যেন ইসরাইলের বর্বর হামলার প্রকাশ্য প্রতিবাদ করে। এটা নিয়ে রাজনীতির কোন সুযোগ আমাদের সামনে নাই। আমি শেখ হাসিনার আরেকটি বিষয়ে প্রশংসা করি সেটি হচ্ছে, জো বাইডেনকে পরোয়া না করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকেও ইসরায়েলে সাহায্য প্রদানের ব্যাপারে তিনি স্পষ্ট ভাষায় বিরোধিতা করেছেন। ক্ষমতা আছে, থাকবে অথবা চলে যাবে, কোন ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। কিন্তু আজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইলের বর্বরতার সমালোচনা করা এটি চিরদিন মানুষের মনে গেঁথে থাকবে। আমি আবার বলি যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপের কোন দেশের সমস্যা হলো বৈশ্বিক সমস্যা আর আমাদের দেশের কোনো সমস্যা হলো অভ্যন্তরীণ সমস্যা। এই ধরনের চিন্তাভাবনা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসা উচিত এবং সেটি এখন সঠিক সময়। পশ্চিমা দেশগুলি যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপের ন্যাটোভুক্ত বা ইউ অন্তর্ভুক্ত দেশগুলি আমাদেরকে উপদেশ দেয়। আপনারা যারা বড় বড় বুদ্ধিজীবী, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আছেন আপনারা জানেন যে, তারা সব সময় আমাদের অর্থনীতি, আমাদের প্রশাসনিক ব্যবস্থা, আমাদের রাজনীতিতে বুদ্ধি পরামর্শ দেয়। আমার অনুরোধ হচ্ছে পশ্চিমাদের কোন পরামর্শ আমাদের গ্রহণ করা উচিত নয়। তারা যদি টাকা দেয় আমরা নিব কিন্তু তাদের কোন পরামর্শ আমরা একেবারেই নিব না।
তাদের পরামর্শ আখেরে আমাদের ক্ষতি হয়। ভারতের একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবীণ অধ্যাপক আমাকে বলেছিলেন, ডোন্ট টেক অ্যাডভাইস ফ্রম ওয়েস্টার্ন পিপল ইউ মে টেক দেয়ার মানি নট দেয়ার এডভাইস। আমি মনে করি, পশ্চিমা শক্তিধর দেশগুলি যারা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সারা বিশ্বকে উপনিবেশে পরিণত করেছে যারা ধর্মকে রাজনীতিতে ব্যবহার করছে এবং যারা পুঁজিবাদের পৃষ্ঠপোষকতা করে তাদের হাতে বিশ্ব একদম নিরাপদ নয়। যদি তাদের বাড়াবাড়ির জন্য কোনোভাবে বিশ্বযুদ্ধের সূত্রপাত ঘটে তাহলে সেটা পারমানবিক যুদ্ধে রূপান্তরিত হবে। এই পারমাণবিক যুদ্ধে প্রাচ্যের শক্তিগুলিকে একেবারে নিষ্ক্রিয় মনে করে পশ্চিমারা ভুল করবে এতে আমাদের যাই অবস্থা হোক না কেন পশ্চিমারাও সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। আশা করি বিশ্বযুদ্ধ বা পারমাণবিক যুদ্ধের ঝুঁকি এড়ানোর জন্য পূর্ব পশ্চিমের সব রাষ্ট্রনায়কগণ একতাবদ্ধ হয়ে নতুনভাবে চিন্তা ভাবনা শুরু করবেন। যারা বুদ্ধিজীবীরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে আসন্ন মনে করছেন তাদের প্রতি আমি বিনীতভাবে বলছি, হয়তোবা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের আগে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ আমাদের মাথার উপর চলে আসতে পারে।
লেখক: শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক, কলমিস্ট।
সাবেক অধ্যক্ষ–চট্টগ্রাম সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ।