‘বলা হয়েছিল চার বছর বাঁচব, ছয় বছর ধরে বেঁচে আছি’

দ্রুত শনাক্ত হলে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়া সম্ভব, কিন্তু সাধারণ মানুষের পক্ষে এর চিকিৎসা ব্যয় মেটানো সম্ভব নয়

| রবিবার , ৯ জুন, ২০২৪ at ৯:০১ পূর্বাহ্ণ

ক্যান্সার হ্যাজ নো আনসার’এক সময় এমন কথা বলা হলেও দিন পাল্টেছে জানিয়ে রাজধানীতে এক আয়োজনে এই রোগ দ্রুত শনাক্ত ও চিকিৎসায় তহবিল গঠনের আহ্বান জানানো হয়েছে। ক্যান্সার সারভাইভারসদেরকে নিয়ে সেই অনুষ্ঠানে বলা হয়েছে, দ্রুত শনাক্ত হলে রোগটির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়া সম্ভব। কিন্তু সাধারণ মানুষের পক্ষে এর চিকিৎসা ব্যয় মেটানো সম্ভব নয়। খবর বিডিনিউজের।

ক্যান্সার সারভাইভারস দিবস উপলক্ষে গতকাল শনিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ক্যান্সার কেয়ার ফাউন্ডেশন বা সিসিসিএফ। অনুষ্ঠানে ৫ জন ক্যান্সার সারভাইভারকে সম্মাননা দেওয়া হয়। তারা হলেন: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সারওয়ার আলী, লেখক ও চিকিৎসাবিজ্ঞানী অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী, চলচ্চিত্র নির্মাতা মসিহউদ্দিন শাকের, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এস এম শহীদুল্লাহ, অণুজীব বিজ্ঞানী সেঁজুতি সাহা।

শুভাগত চৌধুরী বলেন, ‘আমাকে বলা হয়েছিল চার বছর বাঁচব, এখন ছয় বছর ধরে বেঁচে আছি। ক্যান্সার মারণ রোগ, এটা ঠিক নয়। ক্যান্সারকে সিনেমা, নাটকে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে সেটা ঠিক না। ক্যান্সার নিয়ে বাঁচা যায় এবং ক্যান্সার জয় করে বলা যায়, ভয়ের কোনো কারণ নেই।’ ক্যান্সার নির্ণয়ের অবস্থা আমাদের দেশে দুর্বল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তবে দেশে চিকিৎসা সম্ভব, যদি আন্তরিকতা থাকে।’

প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ ক্যান্সার সম্পর্কে ‘কম জানে’ মন্তব্য করে শুভাগত বলেন, ‘তাদেরকে জানাতে হবে। ক্যান্সার আগেভাগে চিহ্নিত করা গেলে অনেকটা প্রতিরোধ সম্ভব। আগেভাগে জানতে পারলে চিকিৎসা সাশ্রয়ী হবে।’ সাধারণ মানুষের ক্যান্সারের চিকিৎসায় তহবিল গঠনের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষের ক্যান্সারের চিকিৎসার টাকা কোথা থেকে আসবে? এই নিয়ে কি আমরা ভাবছি? চিকিৎসা খাতে খরচ দারিদ্র্যের একটি বড় কারণ। ক্যান্সার নিয়ে যারা কাজ করেন, তাদের একটা ফান্ড গঠন করা দরকার। সাধারণ মানুষের ক্যান্সারের চিকিৎসা সুলভ করতে পারলে আমাদের পুণ্য হবে।’

জাতীয় ক্যান্সার তহবিল’ গঠনের পরামর্শ দিয়ে সারওয়ার আলী বলেন, ‘ক্যান্সার বৃদ্ধি পাচ্ছে, ক্যান্সার প্রতিরোধে জাতীয় নীতিমালা ও পরিকল্পনা থাকা দরকার। সারভাইভারদের পুনর্বাসন ব্যবস্থা করতে ক্যান্সার তহবিল গঠন দরকার।’

মসিহউদ্দিন শাকের বলেন, ‘ক্যান্সারের একটি কারণ বংশগত, আরেকটি হল পরিবেশগত ও আমাদের জীবনযাত্রা। আমাদের শহরে বায়ু দূষণ, পানি দূষণ। দূষিত পরিবেশে আমরা বসবাস করছি। আমাদের খাদ্যাভ্যাস ও কায়িকশ্রম না করাও ক্যান্সারের অন্যতম কারণ। চাষের মাছ ভালো কি না সেটার নিশ্চয়তা দিতে পারি না।’ নিরাময়ের চেয়ে প্রতিরোধ শ্রেয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে পারলে তা প্রতিরোধ করা সম্ভব।’

সেঁজুতি সাহা বলেন, ‘ক্যান্সার হলেই সব কিছু থেমে যায় না। ক্যান্সার নিয়েও সমাজে অনেক ভূমিকা রাখা যায়। আমি সেই ভূমিকা রাখতে বিদেশ থেকে দেশে চলে এসেছি। আমি আশা করি, আপনারা পাশে থাকলে ক্যান্সার প্রতিরোধে আমরা বড় পরিবর্তন আনতে পারব।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅংকুর সোসাইটি বালিকা বিদ্যালয়ে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের চেক বিতরণ
পরবর্তী নিবন্ধবোয়ালখালীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ট্রাক হেলপারের মৃত্যু