বর্ষায় মতিঝর্ণা পাহাড় নিয়েই যত শঙ্কা

আইনগত বাধা নেই, তবুও হয় না উচ্ছেদ ।। রেলওয়ের ২৬ একরের এই পাহাড়ে শত শত অবৈধ স্থাপনা

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ৮ জুন, ২০২১ at ৫:৩৩ পূর্বাহ্ণ

রেলওয়ের লালখান বাজার মতিঝর্ণা পাহাড় নিয়েই বর্ষায় যত শঙ্কা। বারবার উচ্ছেদের উদ্যোগ নেয়া হলেও রাজনৈতিক প্রভাবে সব উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত হয়। ২৬ একরের বিশাল এই পাহাড়ে অবৈধভাবে বসবাসকারীদের উচ্ছেদে এখন আইনগত আর কোন বাধা নেই।
জানা গেছে, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তাদের মালিকানাধীন মতিঝর্ণা পাহাড় থেকে অবৈধ বসবাসকারীদের উচ্ছেদের জন্য একাধিকবার উদ্যোগ নিলে তাতে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে স্থানীয়রা হাইকোর্টে রিট করেছিলেন। কিন্তু হাইকোর্ট নিষেধাজ্ঞা দেননি। এর পরপরই রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জিএম এবং ভূ-সম্পত্তি কর্মককর্তাসহ সকল বিভাগ মিলে উচ্ছেদের উদ্যোগ নেন। তখন অবৈধ বসবাসকারীদের বাসা-বাড়ির বিদ্যুৎ, গ্যাস এবং পানির সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ অভিযান শুরু হয়েছিল। ঐ সময় পাহাড়ে অবৈধভাবে বসবাসকারীরা লালখান বাজারের প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করলে সরকারি দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারাসহ সকল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের হস্তক্ষেপে এই উচ্ছেদ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রেলওয়ের বহুল আলোচিত মতির্ঝণা পাহাড় এখন আর পাহাড় নেই। এটি এখন অবৈধ দখলদারদের আয়ের প্রধান হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। ভেতরে না গেলে বুঝার কোন উপায় নেই যে, এই পাহাড়ে কিভাবে অবৈধ দখলদারদের বাণিজ্য চলছে। রীতিমত এক তলা থেকে চার তলা পর্যন্ত বিল্ডিং উঠে গেছে পাহাড়ের পাদদেশে।
এই ব্যাপারে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা মাহবুব উল করিম আজাদীকে জানান, লালখান বাজার মতিঝর্ণা পাহাড়টি মোট ২৬ একরের। এরমধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ের নিজস্ব ১৮ একর। অবশিষ্ট ৮ একর ওয়াসা এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের। দীর্ঘদিন নানান জটিলতার পর আমরা গত বছর (২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে) মতিঝর্ণা থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের সকল আয়োজন করেছিলাম। তখন নানান কারনে আর হয়ে উঠেনি। এটা বিশাল এলাকা। পুরো পাহাড় জুড়েই অবৈধ বাসবাসকারী। রেলওয়ের একার পক্ষে এই পাহাড়ের অবৈধ বসবাসকারীদের উচ্ছেদ করা সম্ভব হবে না। এতো বিশাল পাহাড় উচ্ছেদের জন্য পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি লাগবে, র‌্যাব লাগবে।
প্রতি বছর বর্ষা আসলেই সর্ব প্রথম মতির্ঝনার কথা আসে। রেলওয়েকে দোষারোপ করা হয়। লকডাউনের কারনে মানবিক দিক বিবেচনা করে এখন আমরা উচ্ছেদ অভিযান আপাতত বন্ধ রেখেছি। লকডাউনের পর আবার উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে। এখন ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ায় আমরা আমাদের পাহাড়গুলো থেকে অবৈধ বসবাসকারীদের সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং করছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅর্থ পাচার কারা করেছে নামগুলো দিন : অর্থমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধসেলিম উদ্দীন সবুজ বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক