মার্টিন লুথার কিং বিখ্যাত কৃষ্ণাঙ্গ নেতা এবং মানবাধিকার কর্মী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী মার্টিন আমৃত্যু ছিলেন বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার, অহিংস পন্থায় মানুষের অধিকার আদায়ে নিবেদিতপ্রাণ।
মার্টিন লুথার কিং-য়ের জন্ম ১৯২৯ সালের ১৫ই জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ায়। ১৯৪৮ সালে সমাজতত্ত্বে ব্যাচেলর ডিগ্রি নেন মার্টিন। ১৯৫৫ সালে বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে ডক্টরেট মার্টিন ২৫ বছর বয়সে মন্টগোমারি উন্নয়ন সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। কৃষ্ণাঙ্গদের জন্য যানবাহনে আলাদা আসন ব্যবস্থার ঘোর বিরোধী ছিলেন তিনি। এর প্রতিবাদে মার্টিন আলবামায় অসহযোগ আন্দোলন পরিচালনা করেন এবং সুপ্রিম কোর্ট তাঁর পক্ষে রায় দেয়। বাবার বন্ধু মানবাধিকার নেতা, ধর্মতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ এবং শিক্ষক হাওয়ার্ড থারম্যান ছিলেন মার্টিনের আদর্শ। মার্টিন যখন বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তখন থারম্যানের মাধ্যমে মাহাত্মা গান্ধীর সাথে পরিচিত হবার সুযোগ পান। গান্ধীর অহিংস-অসহযোগ আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি গান্ধীর জন্মস্থান ভারত ভ্রমণে যান ১৯৫৯ সালে। তাঁর মধ্যে দৃঢ় বিশ্বাস জন্মায়, ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নিপীড়িত জনতার সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র অহিংস নীতি। আর অহিংস আন্দোলনের মাধ্যমেই মার্টিন বৈষম্যবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন। ১৯৬৩ সালের ২৮ আগস্ট বিখ্যাত পদযাত্রা কর্মসূচিতে ওয়াশিংটন মেমোরিয়ালে সমবেত আড়াই লক্ষ লোকের এক বিশাল সমাবেশে মার্টিন এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন, যার শিরোনাম ছিল ‘আই হ্যাভ আ ড্রিম’।
আমেরিকার নাগরিক ও মানবিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় অহিংস আন্দোলনের জন্য ১৯৬৪ সালে মার্টিন লুথার কিং নোবেল শান্তি পুরস্কার অর্জন করেন। পুরস্কারের সমুদয় অর্থ তিনি দান করেন আন্দোলনের জন্য। ১৯৬৮ সালের ৪ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসিতে আঁততায়ীর গুলিতে নিহত হন এই অবিসংবাদিত নেতা। কিন্তু মৃত্যুতেই নিঃশ্বেষ নন তিনি। আধুনিক মার্কিন উদারপন্থী মতবাদের ইতিহাসে মার্টিন লুথার কিং যুগ যুগ ধরে এক বিরোচিত নাম।