আন্তর্জাতিক পরিবহনে সেবা এবং ’জাহাজে মালামাল বোঝাই ও খালাসকরণ সংক্রান্ত সরবরাহ’ সেবার উপর প্রযোজ্য মূল্য সংযোজন কর আদায় সংক্রান্ত বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি লিখেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বারের সভাপতি খলিলুর রহমান।
গতকাল লেখা সেই চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, চট্টগ্রাম বন্দরের পত্র নং– নথি নং টিএম/কন্টে:বিলিং/মূসক/২০২২/৩৪০৮, তারিখ: ২৪–০৯–২০২৩ এবং ভ্যাট কার্যালয়ের পত্র নং– নথি নং ০৮,০১,১৫০০,৫০৩,০৫,৪১৬,২১/৮৩৯০, তারিখ ০৪/০৭/২০২২ এর দুটি পত্রেই পরিষ্কার উল্লেখ রয়েছে যে, এটি আন্তর্জাতিক পরিবহন কার্যে জাহাজে মালামাল বোঝাই ও খালাস সংক্রান্ত সেবার উপর মূল্য সংযোজন কর। উল্লেখ্য–এই দুটির সাথে স্থানীয় আমদানি রপ্তানিকারকের সরাসরি কোন সম্পৃক্ততা নাই এবং টার্মিনাল হ্যান্ডেলিং চার্জ প্রদানকারী আন্তর্জাতিক মাল্টিমোডাল ট্রান্সপোর্ট অপারেটরের স্থানীয় এজেন্টের সাথে সম্পৃক্ত। স্থানীয় আমদানি রপ্তানিকারককে শিল্পের কাঁচামাল আমদানি রপ্তানিকারক স্থানীয়ভাবে মালামাল গ্রহণ করেন চালানের বিদেশি মাল্টিমোডাল ট্রান্সপোর্ট অপারেটরের স্থানীয় এজেন্ট থেকে।
যেহেতু আন্তর্জাতিক মাল্টিমোডাল কন্টেনার পরিবহন বিধানমতে, কন্টেনার পরিবহনের সমস্ত খরচ ভাড়ার সাথে যুক্ত হয় এবং ভাড়া গ্রহীতাই সকল স্তরের খরচ প্রদান করেন। সেই মতে ২০০৭ সালে দেশের প্রায় সকল বাণিজ্য সংগঠনসহ চট্টগ্রাম বন্দরের যৌথভাবে সর্ব সম্মত সিদ্ধান্ত মতে বন্দরের চার্জ বিষয়ে বন্দর সার্কুলার ০৩/০৭ জারি হয়। যেখানে বলা আছে– টার্মিনাল হ্যান্ডেলিং চার্জ অ্যান্ড অল আদার চার্জ উইল বি ইনক্লুডেড ইন দ্য ফ্রেইট। সেই মতে কন্টেনার চালানের ভাড়া গ্রহীতা বিদেশি মাল্টিমোডাল ট্রান্সপোর্ট অপারেটরের স্থানীয় এজেন্টগণ জাহাজে মালামাল বোঝাই এবং খালাস করণ সংক্রান্ত টার্মিনাল হ্যান্ডেলিং চার্জ প্রদান করেন। বর্ণিত দুটি সার্কুলার মতে সেখানে মূল্য সংযোজন কর বিষয়ে বলা হয়েছে। এছাড়াও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আদেশ নং –০৮০১০০০০০৬৮১৭.০০২.১২.৭৭(১) মতে স্থানীয় বন্দর কার্যক্রমে শতভাগ রপ্তানিমূখী পোশাক শিল্পের উপর থেকে বন্দর সেবার উপর একশ ভাগ মূসক অব্যাহতি দেয়া আছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এস আর ও নং ১৮৮–আইন/২০১৯/৪৫ মূসক সার্কুলার মতে বন্দর সেবা, ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার সেবা, ক্লিয়ারিং–ফরওয়াডিং সেবা, শিপিং এজেন্ট সেবার উপর একশ ভাগ মূল্য সংযোজন কর অব্যাহতি দেয়া আছে।
চিঠিতে তিনি আরো উল্লেখ করেন, চট্টগ্রাম বন্দর সার্কুলার ০৩/০৭ এবং ফ্রেইট ফরওয়ার্ডিং বিধিমালা ১৮/০৮ ধারা ২০ এর (৩) যেখানে বলা আছে এজেন্টগণ নিজ খরচে বন্দর শেডে চালান আনায়ন পূর্বক আমদানিকারককে ডেলিভারি প্রদান করবে এবং (৪) মতে স্থানীয় আমদানিকারকের উপর টার্মিনাল হ্যান্ডেলিং চার্জ আই এলসিএল চার্জ পরিবহনকারীর এজেন্ট থেকে আদায়ের বিধান থাকা সত্ত্বেও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ কন্টেনারের টার্মিনাল হ্যান্ডেলিং চার্জ চালানের ভাড়া গ্রহীতার এজেন্ট থেকে নিলেও চালানের আনস্টাফিং চার্জ (্এলসিএল চার্জ ) ও অন্যান্য চার্জ চালানের ভাড়া গ্রহীতার এজেন্ট থেকে না নিয়ে এখনও আমদানিকারক থেকে চট্টগ্রাম বন্দর আদায় করছে। যা প্রতিরোধে বিজিএমইএ থেকে পত্র দেয়া হয়েছে। তারপরও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এলসিএল আমদানিকারকের কাছ থেকে আদায় করছে।
এমতাবস্থায়, স্থানীয় সেই এলসিএল চার্জের উপর হঠাৎ স্থানীয় আমদানিকারক থেকে অযৌক্তিকভাবে ভ্যাট আদায় শুরু হওয়ায় দেশের আমদানি খরচ বৃদ্ধি তথা দেশে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাবে। তাই স্থানীয় আমদানিকারক থেকে এরূপ অযৌক্তিক ভ্যাট আদায় বিষয়ে আমরা জোর প্রতিবাদ করছি। বিষয়টির উপর বর্ণনামতে আইনানুগ সিদ্ধান্ত দিয়ে স্থানীয় আমদানিকারকে থেকে ভ্যাট আদায় বন্ধ করা সহ বন্দর সার্কুলার ০৩/০৭ মতে টার্মিনাল হ্যান্ডেলিং চার্জের মত এলসিএল আনস্টাফিং এবং রিভার ডিইউস স্থানীয় আমদানিকারক থেকে না নিয়ে চালানের ভাড়া গ্রহণকারী মাল্টিমোডাল ট্রান্সপোর্ট অপারেটরের স্থানীয় ডেলিভারী এজেন্ট থেকে আদায় করার নির্দেশনা প্রদানের জন্য আপনাকে বিনীত অনুরোধ করছি।