নগরীর বন্দর ও ইপিজেড এলাকা থেকে চুরি হওয়া দুই শিশুকে ফেনী ও লক্ষ্মীপুর থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার ইপিজেড ও বন্দর থানা পুলিশের পৃথক অভিযানে লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ ও ফেনী সদর উপজেলা থেকে শিশু দুটিকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত শিশুদের একজনের বয়স তিন বছর, গত ২২ সেপ্টেম্বর বন্দর থানার কলসী দীঘির পাড় এলাকা থেকে তাকে চুরি করা হয়েছিল। আর আট মাস বয়সী শিশুটি গত ২৭ অক্টোবর ইপিজেড থানার নিউমুরিং এলাকা থেকে চুরি করা হয়। এ দুটি ঘটনায় আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে ছয় জন ইতোপূর্বে বিভিন্ন মামলায় ধরা পড়েছিল।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (বন্দর) শাকিলা সোলতানা আজাদীকে বলেন, গত ২২ সেপ্টেম্বর বন্দর থানার কলসী দীঘির পাড় এলাকা থেকে জেমি নামে তিন বছর বয়সী এক শিশুকে চুরি করে নিয়ে যায় এক যুবক। এ ঘটনায় শিশুটির বাবার করা মামলায় অভিযোগ করা হয়- নানীর সাথে কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম আসার পথে ট্রেনে এক যুবকের সাথে পরিচয় হয়। ওই যুবক চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে নেমে তাদের সঙ্গে কলসী দীঘির পাড় পর্যন্ত যায়। এ সময় সে পেছন থেকে জেমিকে নিয়ে দৌঁড়ে পালিয়ে যায়।
উপ-কমিশনার শাকিলা বলেন, এই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে কয়েক দফায় কুমিল্লার লাকসাম, চৌদ্দগ্রাম ও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়। এক পর্যায়ে মঙ্গলবার মীরসরাই উপজেলার বারৈয়ারহাট এলাকা থেকে জয়নাল আবেদীন ওরফে সুমনকে (২৭) গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যে ফেনী সদর উপজেলা থেকে আমেনা আক্তার নামে এক নারীর হেফাজত থেকে শিশু জেমিকে উদ্ধার করা হয়। আমেনা আক্তার নিঃসন্তান। আটক সুমন এই চুরি করা শিশু জেমিকে তার শ্যালিকার মেয়ে বলে ‘দত্তক’ দিয়েছিল। বিনিময়ে সুমন তার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা নেয়।
এদিকে, গত ২৭ অক্টোবর ইপিজেড থানার নিউমুরিং এলাকা থেকে চুরি করা শিশুকে লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ উপজেলা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। আট মাস বয়সী শিশুটিকে নিয়ে নিউমুরিং এলাকায় একটি বাসায় থাকতেন তার বাবা-মা। ওই বাসায় এক রুমে সাবলেট নিয়েছিলেন কামরুল হাসান-তানিয়া দম্পতি ও মামুন নামের আরেকজন। গত ২৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় ওই শিশুকে ঘর থেকে চুরি করা হয়। শিশুর মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই দিনই কামরুল হাসান, তার স্ত্রী তানিয়া ও তাদের পরিচিত রুবেল নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বায়েজিদ থানার আমিন জুট মিল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আরও দুইজনকে। পরে নোয়াখালীর সেনবাগ থেকে গ্রেপ্তার করা হয় সীমা আক্তারকে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা শিশুটিকে লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জে রাখার কথা জানায়। মঙ্গলবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চন্দ্রগঞ্জ থেকে রোমানা আক্তার নামে এক নারীকে গ্রেপ্তার করে তার হেফাজত থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।