চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কন্টেনার পরিবহন ব্যাহত হচ্ছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ আরোপিত নতুন ট্যারিফে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরে ভারী গাড়ি প্রবেশের ফি ৫৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৩০ টাকা করায় কন্টেনার পরিবহনের ট্রেইলার চালাচ্ছেন না মালিকরা। ব্যক্তি মালিকানার এসব ট্রেইলার আন্তঃজেলা রুটে কন্টেনার পরিবহন করে। প্রতিটি ডিপোর নিজস্ব ট্রেইলার থাকলেও সেগুলো চলাচলেও বাধা দেয়া হচ্ছে বলে বেসরকারি কন্টেনার ডিপো মালিকদের সংগঠন বিকডা জানিয়েছে।
চট্টগ্রাম প্রাইম মুভার ও ফ্লাটবেড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন গতকাল শুক্রবার বলেন, কর্মবিরতি বা ধর্মঘট নয়, প্রাইম মুভার মালিকরা ৫৭ টাকার পাস ২৩০ টাকা করায় গাড়ি চালানো বন্ধ রেখেছেন। কারণ এই বাড়তি টাকা শ্রমিকরা দেবেন নাকি মালিকরা দেবেন সিদ্ধান্ত হয়নি।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম থেকে ভারী গাড়ি (প্রাইম মুভার, ট্রেইলার, লং ভ্যাহিক্যাল) যখন ঢাকা বা কোনো গন্তব্যে যায় তখন লাইন খরচ (ফি, টোল, বকশিশ) ফিঙড করা থাকে। এর থেকে বেশি খরচ হলে সেটা পরিবহন শ্রমিকদের দিতে হয়। অবশ্য তেলের দাম বাড়লে সেটি রিভাইস করা হয়। বিষয়টি নিয়ে আমরা বন্দরের পরিচালকের (নিরাপত্তার) সঙ্গে কথা বলেছি। বন্দর চেয়ারম্যান ঢাকা থেকে এলে আবার আলোচনা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, তখন হয়তো চলমান সংকটের সুরাহা হবে।
তিনি জানান, ১৪ অক্টোবর রাত থেকেই আমাদের ট্রেইলার চলাচল করছে না।
বেসরকারি ডিপো মালিকদের সংগঠন বিকডার মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার বলেন, প্রাইম মুভার মালিকদের ট্রেইলার চলে আন্তঃজেলা রুটে। ডিপোর ট্রেইলারগুলো বন্দর থেকে ডিপোতে কন্টেনার আনা–নেওয়া করে। এখন প্রাইম মুভার মালিকদের গাড়ি না চালানোর কারণে কিছু কিছু জায়গায় ডিপোর ট্রেইলার চলাচল চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। তিনি বলেন, ডিপোগুলোর নিজস্ব ট্রেইলার চলাচলে বাধা দেয়া হচ্ছে। গেটে আড়াআড়িভাবে ট্রেইলার রেখে দিলে অন্য ট্রেইলার চলাচল করতে পারে না।
এদিকে, প্রাইম মুভার মালিকদের ট্রেইলার চলাচল না করায় উদ্বেগ জানিয়েছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা। তাদের আশঙ্কা এভাবে চলতে থাকলে একসময় অচলাবস্থা তৈরি হবে। তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সব স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে আলোচনা ও সমন্বয় প্রয়োজন। বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, ট্রেইলার মালিকদের ট্রেইলার চলাচলে বিভিন্ন স্থানে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে শুনেছি। তবে বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।
ট্যারিফ বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বন্দরের সার্ভিস বেড়েছে। ব্যয় বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ট্যারিফ বৃদ্ধির মাধ্যমে মূলত বাড়তি ব্যয় সমন্বয় করা হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।