বন্দরে কোকেন জব্দের মামলায় ২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ

আজাদী অনলাইন | সোমবার , ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ২:১৮ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দরে কোকেনের চালান জব্দের ঘটনায় মাদক ও চোরাচালান আইনে দায়ের হওয়া মামলায় আরও ২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।

সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চতুর্থ অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁঞার আদালতে এই সাক্ষ্যগ্রহণ হয়। পরে আদালত ২৫ অক্টোবর পরবর্তী দিন ধার্য করেন।

চট্টগ্রাম মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী বলেন, বন্দরে কোকেনের চালান জব্দের ঘটনায় মাদক ও চোরাচালান আইনে দায়ের হওয়া মামলায় আরও ২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। একজন হলেন- তৎকালীন চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের সহকারী কমিশনার ও বর্তমানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের উপ-কমিশনার মুকিতুল হাসান।

তিনি দুইটি জব্দ তালিকার সাক্ষী। মুকিতুল হাসানসহ অন্যান্য সরকারি সংস্থার উপস্থিতিতে কনটেইনারে রক্ষিত ড্রামের ভিতর কোকেন মিশ্রিত সূর্যমুখী তেল রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য আলামত সংগ্ৰহ করা হয়।

তিনি আরও বলেন, অন্য সাক্ষী হলেন তৎকালীন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের টার্মিনাল অফিসার ও বর্তমান চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী টার্মিনাল ম্যানেজার রাজীব চৌধুরী। তিনি বন্দরে জাহাজ আসা এবং জাহাজ থেকে এই কনটেইনারসহ অন্যান্য কনটেইনার চট্টগ্রাম বন্দরে নামানোর বিষয়ে সাক্ষ্য প্রদান করেন।

মাদক মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সর্বমোট ২৮ জন এবং চোরাচালান মামলায় ৭ জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেন। ২৬ অক্টোবর মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।

সাক্ষ্য গ্ৰহণে মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটরকে সহযোগিতা করেন অতিরিক্ত পিপি আবু জাফর, অ্যাডভোকেট সাব্বির আহমেদ শাকিল ও অ্যাডভেকেট মো. সাহাব উদ্দীন।

মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামের খানজাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ ও তার ভাই মোস্তাক আহম্মদ, কসকো-বাংলাদেশ শিপিং লাইনসের ব্যবস্থাপক এ কে এম আজাদ, সিকিউরিটিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মেহেদী আলম, সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, আবাসন ব্যবসায়ী মোস্তফা কামাল, প্রাইম হ্যাচারির ব্যবস্থাপক গোলাম মোস্তফা সোহেল, পোশাক রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান মণ্ডল গ্রুপের বাণিজ্যিক নির্বাহী আতিকুর রহমান, লন্ডনপ্রবাসী চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের ফজলুর রহমান ও মৌলভীবাজারের বকুল মিয়া।

২০১৫ সালের ৭ জুন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম বন্দরে একটি কনটেইনার আটকের পর সিলগালা করে দেয় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতর। পরে আদালতের নির্দেশে কনটেইনার খুলে ১০৭টি ড্রাম থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ঢাকার বিসিএসআইআর ও বাংলাদেশ ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষায় এতে তরল কোকেনের অস্তিত্ব ধরা পড়ে। এ ঘটনায় ২০১৫ সালের ২৭ জুন বন্দর থানায় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খান জাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ ও তার ভাই গোলাম মোস্তফা সোহেলকে আসামি করে মাদক আইনে মামলা দায়ের করে পুলিশ। এই মামলায় ২০১৫ সালের ১১ নভেম্বর এজাহারভুক্ত আসামি নূর মোহাম্মদকে বাদ দিয়ে ৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা নগর গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন সহকারী কমিশনার (দক্ষিণ) মো. কামরুজ্জামান।

একই বছর ৭ ডিসেম্বর অভিযোগপত্রের গ্রহণযোগ্যতার ওপর শুনানি হয়। প্রধান আসামিকে বাদ দেওয়ায় ওই সময় অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করেননি আদালত। আদালত অভিযোগপত্র প্রত্যাখ্যান করে তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদ মর্যাদার একজন কর্মকর্তাকে দিয়ে অধিকতর তদন্তের জন্য র‌্যাব-৭ কে দায়িত্ব দেন। এরপর আদালত ওই মামলায় চোরাচালানের ধারা সংযুক্তির নির্দেশ দেন। ২০১৭ সালের ২ এপ্রিল মাদক আইনের মামলায় নূর মোহাম্মদকে অভিযুক্ত করে চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন র‌্যাব কর্মকর্তা তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুকী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত ৭
পরবর্তী নিবন্ধমিতু হত্যা : ৬ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার আবেদনের আদেশ পিছিয়েছে