বড়দিনের উৎসব ও সান্টাক্লজ

সাইফুদ্দিন আহমদ সাকী | বুধবার , ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ at ৭:২৬ পূর্বাহ্ণ

খ্রিষ্টান ধর্মের সবচেয়ে বড় উৎসব মেরি ক্রিসমাস, যাকে আমরা বড়দিন হিসাবে জানি। যিশু খ্রিষ্টের জন্মদিন হিসাবে প্রতিবছর ২৫ ডিসেম্বর খ্রিষ্টান সমপ্রদায় দিনটি পালন করে থাকেন। বড়দিন হিসাবে ২৫ ডিসেম্বর জাতীয় ছুটির দিন।

জানা যায় ষোড়শ শতাব্দী থেকে ধর্মপ্রচারকদের মাধ্যমে এদেশে খ্রিষ্ট ধর্মের প্রচলন হয়। বাংলাদেশে প্রায় ০.০৩ শতাংশ খ্রিষ্টান সমপ্রদায়ের লোক বসবাস করেন। বড়দিন খ্রিষ্টান সমপ্রদায়ের কাছে সবচেয়ে উৎসবমুখর, মর্যাদাময়, মহিমান্বিত পবিত্র দিন। যিশুখ্রিষ্টের অনুসারী বিশ্বের একটি বিশাল জনগোষ্ঠী এই ধর্মদর্শনের অনুগত বিধায় যিশুর জন্মদিন হিসাবে ২৫ ডিসেম্বর তাঁরা নানা আয়োজনে দিনটি উদযাপন করে থাকেন। বাংলাদেশে বড়দিন উপলক্ষে রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান বাণী দিয়ে থাকেন এবং সারাদেশে গীর্জায় ও বিভিন্নস্থানে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ক্রিসমাস ট্রি, ব্যানার, ফেস্টুন, আলোকসজ্জা, বেলুন ইত্যাদিতে বিভিন্ন সাজে সাজানো হয়। হোটেল রেস্তোরাঁয় বিশেষ খাবার এবং গণমাধ্যমে এর উপর অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকে। চট্টগ্রাম নগরীর পাথরঘাটা গীর্জায় দীর্ঘকাল থেকে বড়দিন উপলক্ষে চমৎকার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে। এতে সরকারের মেয়র, পদস্থ অফিসার, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ অংশ নেন এবং ধর্মীয়যাজক ও খ্রিষ্টান সমপ্রদায়ের নেতৃবৃন্দের সাথে কেক কাটেন। পরে অতিথিগণ আপ্যায়নে যোগ দেন। বড়দিন উপলক্ষে নানা রকমের মজাদার কেক, মিষ্টি ও পিঠাপুলির আয়োজন করা হয়। তখন মঞ্চ থেকে সুরেলা কণ্ঠে বেজে ওঠে সঙ্গীতের মূর্ছনাস্বর্গের সিঁড়ি বেয়ে তুমি এসেছিলে মাটির ধরায়মুহূর্তটি ধর্মবর্ণ জাতিগোষ্ঠী নির্বিশেষে এক মিলনমেলায় রূপ নেয়। ছোটদের জন্য বড়দিনের প্রধান আকর্ষণ হল লালসাদা পোশাকে আর সাদা চুলদাড়ির সান্টাক্লজ। লালটুপি পরিহিত সান্টাক্লজ ঘুরে ঘুরে শিশুকিশোরদের আনন্দ দেয় এবং নানারকমের উপহার দেন। বড় দিনের সকল আয়োজন ও উৎসব আনন্দময় হোক এটিই আমাদের প্রত্যাশা। কে এই সান্টাক্লজ, কীভাবেই বা তিনি এলেন? ইতিহাস বলে যিশুখ্রিষ্টের পর প্রায় ২৮০ বছরের দিকে তুরস্কের পাতারা নামক জায়গায় সেইন্ট নিকোলাস নামে এক শিশু জন্ম নেয়। ছোটবেলায় নিকোলাস মা বাবাকে হারিয়ে অনাথ হওয়ায় সে বড় হলে গরীব শিশুদের ভালোবাসতেন। তার জীবনের ভরসা ও বিশ্বাস ছিল যিশুখ্রিষ্টের উপর। পরবর্তীতে তিনি ধনসম্পদের মালিক হলে তা দান করতেন। তাঁর দান দক্ষিণায় যথেষ্ট সুনাম ছিল এবং মানব রক্ষায় করেছিলেন খ্যাতি অর্জন।এই সেইন্ট নিকোলাস যিশুখ্রিষ্টের জন্মদিনে সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে উপহার দিতেন। তখন থেকেই নিকোলাস সান্টা নামে পরিচিতি লাভ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিজয়ের মাসে বাবা তোমাকে মনে পড়ে
পরবর্তী নিবন্ধদূরের টানে বাহির পানে