হঠাৎ রাতের নিস্তব্দতাকে ভেঙে দিল কিছু বিপথগামী সেনা সদস্য। তারা ধানমণ্ডির ৩২ নং বাড়িতে রাইফেল, স্টেনগান নিয়ে প্রবেশ করল। কাউকে ওরা রেহাই দিল না। শিশু রাসেলকেও মায়ের কাছে যেতে দেয়নি। ওরা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালিকে হত্যা করেনি, ওরা হত্যা করতে চেয়েছিল বাঙালির অস্তিত্বকে। পারেনি তারা। ‘চারজন দেবদূত এসে ঘিরে আছে একটি কফিন / একজন বললো দেখো ভিতরে নবীন হাতের আঙ্গুলগুলি আরক্ত করবী / রক্তমাখা বুক জুড়ে স্বদেশের ছবি।’ (কফিনকাহিনী : মহাদেব সাহা)।
বাঙালি আবার দুই দশক পর জানান দেয়, আমাদের দাবিয়ে রাখা যাবে না। বাঙালিকে যে দাবিয়ে রাখা যাবে না সেটা বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে উল্লেখ করেছেন।
নোবেলজয়ী বিশ্ব বরেণ্য অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু বাংলার বন্ধু ছিলেন না, তার ভূমিকা ছিল আরও অনেক বড় এবং অতুলনীয়। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের মহান রাজনৈতিক নায়ক, বাংলার সবচেয়ে সমাদৃত মানুষ, স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার। বাংলাদেশের জনজীবনে তার প্রভাব আজও বিপুল। তাকে ‘বাংলাদেশের জনক’ বা বঙ্গবন্ধু বলাটা নিতান্তই কম বলা। তিনি যে এর চেয়ে বড় কোনো অভিধা চাননি, সেটা তার সম্পর্কে আমাদের একটা সত্য জানান দেয় যে, তিনি নাম কিনতে চাননি, মানুষ তাঁকে অন্তর থেকে ভালোবাসত। বঙ্গবন্ধুকে ‘বিশ্ববন্ধু’ হিসেবেও আমরা সম্মান জানাতে পারি। উপমহাদেশ আজ আদর্শগত বিভ্রান্তির শিকার হয়ে এক কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে চলেছে। এই দুর্দিনে পথনির্দেশ এবং প্রেরণার জন্য আমাদের বঙ্গবন্ধুর কাছে সাহায্য চাইবার যথেষ্ট কারণ আছে। শেখ মুজিবের চিন্তা এবং বিচার-বিশ্নেষণ যে সব দিক থেকে আজ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।…বর্তমান ভারতের পক্ষে তো বটেই, বঙ্গবন্ধুর ধারণা ও চিন্তা উপমহাদেশের সব দেশের পক্ষেই শিক্ষণীয়।’
মধুমতি-বাইগার নদীর পানিতে ভিজে, তাল-তমাল-হিজলের সবুজভরা হৃদয় নিয়ে, ক্রমেই বেড়ে ওঠেন শেখ মুজিব। সেই ছোট্ট খোকা থেকে পরিণত হন জাতির পিতায়। এরপর বিশ্বনেতা হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। বঙ্গবন্ধু নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান। তাঁর প্রজ্ঞা ও দূরদর্শী নেতৃত্বে দীর্ঘ ২৪ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাঙালির আত্মপরিচয়ের ঠিকানা স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়। সেজন্য মুজিব মানেই মুক্তি, মুজিব মানেই বাংলাদেশের প্রতিধ্বনি।
যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বখ্যাত ‘নিউজ উইক’ ম্যাগাজিন ১৯৭১ সালের ৫ এপ্রিল বঙ্গবন্ধুকে ‘পয়েট অব পলিটিক্স’ বলে অভিহিত করে। তাঁর গতিশীল নেতৃত্বের কারণে ব্রিটেনের আরেক শীর্ষ পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ানে বলা হয় ‘শেখ মুজিব ছিলেন এক বিস্ময়কর ব্যক্তিত্ব।’
শত্রু-মিত্র নির্বিশেষে সবাই সমীহ করতেন শেখ মুজিবকে। আফ্রিকাসহ অনেক দেশের মুক্তি সংগ্রামেও মুজিব নামটি অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। ভিয়েতনামের ঐতিহাসিক যুদ্ধেও যোদ্ধারা দীর্ঘ-সংগ্রামের অনুপ্রেরণা পেয়েছেন বঙ্গবন্ধুর জীবন-সংগ্রাম সম্পর্কে জেনে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর বিশ্বমঞ্চে যখন আবির্ভাব ঘটল বঙ্গবন্ধুর, তখন বিশ্বনেতারা তাকে একবার কাছে থেকে দেখার জন্য মুখিয়ে থাকতেন। ১৯৭৩ সালে আলজেরিয়ায় অনুষ্ঠিত জোটনিরপেক্ষ সম্মেলনে ভাষণ দিতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘পৃথিবী আজ দুই ভাগে বিভক্ত। এক ভাগে শোষক শ্রেণি, আরেক ভাগে শোষিত। আমি শোষিতের দলে।’ এই সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বৈঠক করেন কিউবার নেতা ফিদেল ক্যাস্ত্রো। সেই সাক্ষাতের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি হিমালয় দেখিনি, কিন্তু শেখ মুজিবকে দেখেছি। ব্যক্তিত্ব ও সাহসে এই মানুষটিই হিমালয়। আমি এভাবেই হিমালয় দেখার অভিজ্ঞতা পেয়েছি।’
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে কুচক্রীরা। স্তম্ভিত হয়ে পড়ে বিশ্বসমপ্রদায়। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুতে দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমস লিখেছে, ‘মুজিব না থাকলে বাংলাদেশ কখনোই জন্ম নিত না।’ দ্য টাইমস অব লন্ডনের ১৯৭৫ সালের ১৬ আগস্ট সংখ্যায় বলা হয় ‘সবকিছু সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধুকে সবসময় স্মরণ করা হবে। কারণ তাকে ছাড়া বাংলাদেশের বাস্তব কোনো অস্তিত্ব নেই।’ পশ্চিম জার্মানির পত্রিকায় বলা হয়, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে চতুর্দশ লুইয়ের সঙ্গে তুলনা করা যায়। তিনি জনগণের কাছে এত জনপ্রিয় ছিলেন যে, লুইয়ের মতো তিনি এ দাবি করতে পারেন, আমিই রাষ্ট্র।’ সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনির কিসিঞ্জার বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের মতো তেজি এবং গতিশীল নেতা আগামী বিশ বছরের মধ্যে এশিয়া মহাদেশে আর পাওয়া যাবে না।’
আধুনিক মালয়েশিয়ার জনক মাহাথির মোহাম্মদ বলেছিলেন, ‘আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলও বাংলাদেশকে চিনতো বঙ্গবন্ধুর নামে। বাঙালির জাতির মুক্তিদাতা বঙ্গবন্ধুকে খুনের ঘটনায় বিশ্ববাসী এই জাতি সম্পর্কে সন্দিহান হয়ে পড়ে।’ মাহাথির মোহাম্মদ আরও বলেন, ‘জন্মের পরপরই বাংলাদেশ অভিভাবকহীন ও নেতৃত্বহারা হয়ে পড়ায় এই দেশটির যে বিশাল সম্ভাবনা ছিল, তা রুদ্ধ হয়ে পড়ে। তোমাদের জাতির ভাগ্যে এতবড় ট্র্র্যাজেডি দেখে খুব আফসোস হয়।…তিনি (বঙ্গবন্ধু) তার দেশ থেকে হাজার মাইল দূরে, অন্য দেশের কারাগারে থেকে, শুধু তার নামের জাদুমন্ত্রে পৃথিবীর ভৌগলিক রেখা পরিবর্তন করে একটি নতুন দেশের অভ্যুদয় ঘটান। মানবজাতির ইতিহাসে এর দ্বিতীয় নজির নেই।’
বিশ্বজুড়ে ফ্রান্সের নন্দিত নেতা নেপোলিয়ন বোনাপার্ট। তাকে নেপোলিয়ন দ্য গ্রেট বলা হয়। সেই নেপোলিয়নের চাইতেও বঙ্গবন্ধুকে সফল বলে মন্তব্য করেছেন ফ্রান্সের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ফ্রানচিস মিতেরা। ‘তোমাদের দেশের অদৃশ্য শক্তিধর এই লোকটির (বঙ্গবন্ধুর ছবি দেখে) কী অজানা জাদু ছিল! দেখো, আমাদের ফ্রান্সের সর্বশ্রেষ্ঠ বীর নেপোলিয়ান বোনাপার্ট দি গ্রেট। তিনি ফ্রান্স থেকে বহু দূরে সেন্ট হেলেনা দ্বীপে বন্দি হয়ে পড়েন, তোমাদের শেখ মুজিবের মতো বন্দি হওয়ার পর আমাদের জাতীয় বীর ফরাসি জাতির জন্য বা ফ্রান্সের জন্য আর কোনো অবদান রাখতে পারেননি। কিন্তু তোমাদের ভাগ্য-নির্মাতা (বঙ্গবন্ধু) তোমাদের দেশ থেকে হাজার মাইল দূরে, অন্য দেশের কারাগারে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়ে ডেথ সেলে বসেও, শুধু তার নামের অজ্ঞাত জ্যোতির্ময় আলোকচ্ছটা নিক্ষেপ করে, পৃথিবীর ভৌগোলিক রেখা পরিবর্তন করে, একটি নতুন দেশের অভ্যুদয় ঘটান এবং একটি নতুন জাতির জন্ম দেন।’
কানাডার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পিয়েরে ট্রুডো বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যে ১৯৭০ এর দশকেই বাঙালি জাতিকে নিয়ে স্বাধীনতার যুদ্ধে লিপ্ত হবেন, আশির দশক পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন না, এমন গোয়েন্দা তথ্য উপ-রাষ্ট্রদূত অফিসের গোয়েন্দা মারফত আমরা পেয়েছিলাম। সেটার ব্যাখ্যা সংগ্রহের চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে আমরা তা সংগ্রহ করতে পারিনি। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে সংগ্রহ করা সেই ব্যাখ্যায় আমরা জানতে পারি যে, আশির দশকের পর রাশিয়ার রেড আর্মি থাকবে না বলে বিশ্বাস করতেন তিনি। তখন পৃথিবীর ভারসাম্য একদিকে (যুক্তরাষ্ট্রের দিকে) হেলে পড়বে, আর তারা পাকিস্তানের একনিষ্ঠ সমর্থক। সেই পর্যবেক্ষণ থেকে তিনি ১৯৭০ সালেই যুদ্ধ শুরু পরিকল্পনা করেছিলেন। তার সেই পূর্বাভাস ও যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার ঘটনায় বিশ্বের বড় বড় নেতারা বিস্মিত হয়ে পড়েন। তাই তারা ১৯৭২ সালে তার কাছে তার দৈবদৃষ্টি সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন।’
জার্মানির চ্যান্সেলর উইলি ব্রান্ডিট এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ডেথ সেলে বন্দি অবস্থায় শেখ মুজিব যে ম্যাজিক পাওয়ার প্রদর্শন করে একটা জাতিকে স্বাধীন করেছেন, সেটা বিশ্বনেতাদের কাছে অলৌকিক ঘটনার মতো ছিল। বিশ্বনেতারা তাকে এক পলক দেখার জন্য অধীর হয়ে উঠেছিল। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, ‘এমন অলৌকিক ক্ষমতাসম্পন্ন একজন বিশ্বনেতাকে তোমরা হত্যা করলে কেন? যাকে ছাড়া বিশ্বনেতারা তোমাদের স্বীকৃতি দিতো না। তার হত্যাকাণ্ডের পর বিশ্ববাসী তোমাদের জাতিকে আর বিশ্বাস করে না।’ ব্রিটিশ এমপি জেমসলামন্ড বলেছিলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডে বাংলাদেশই শুধু এতিম হয়নি, বিশ্ববাসী হারিয়েছে একজন মহান সন্তানকে।’ ব্রিটিশ লর্ড ফেন্যার ব্রোকওয়ে বলেন, ‘শেখ মুজিব জর্জ ওয়াশিংটন, গান্ধী এবং দ্য ভ্যালেরার থেকেও মহান নেতা ছিলেন।’ ফিলিস্তিনের অবিসংবাদিত নেতা ইয়াসির আরাফাত বলেন, ‘আপসহীন সংগ্রামী নেতৃত্ব আর কুসুম কোমল হৃদয় ছিল মুজিব চরিত্রের বৈশিষ্ট্য।’ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার খবর পেয়ে ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন সেদিন শোক দিবস পালন করেন। তিনি বলছিলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হচ্ছেন সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের প্রথম শহীদ। তাই তিনি অমর।’ যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর অ্যাডওয়ার্ড কেনেডি বলেন, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, খুব পপুলার স্লোগান। আমি যেন কান পাতলে আজও শুনতে পাই।’ ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বলেন, ‘শেখ মুজিব নিহত হওয়ার খবরে আমি মর্মাহত। তিনি একজন মহান নেতা ছিলেন। তাঁর অনন্য সাধারণ সাহসিকতা এশিয়া ও আফ্রিকার জনগণের জন্য প্রেরণাদাযক ছিল।’ অন্নদাশঙ্কর রায় বলেন, ‘যতকাল রবে পদ্মা যমুনা গৌরি মেঘনা বহমান, ততকাল রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান।’
ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু সর্বকালের শ্রেষ্ঠ সাহসী নেতা।’ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গণতন্ত্রের প্রতিমূর্তি, এক বিশাল ব্যক্তিত্ব এবং ভারতের এক মহান বন্ধু।’ মিশরীয় সাংবাদিক মোহাম্মদ হাসনাইন হাইকল বলেছেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান শুধু বাংলাদেশের সম্পত্তি নন। তিনি সমগ্র বাঙালির মুক্তির অগ্রদূত।’ যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেন, ‘সহিংস ও কাপুরুষোচিতভাবে বাংলাদেশের জনগণের মাঝ থেকে এমন প্রতিভাবান ও সাহসী নেতৃত্বকে সরিয়ে দেওয়া কী যে মর্মান্তিক ঘটনা! তারপরও বাংলাদেশ এখন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছে, তাঁরই কন্যার নেতৃত্ব। যুক্তরাষ্ট্র তাঁর সেই স্বপ্ন পূরণে বন্ধু ও সমর্থক হতে পেরে গর্ববোধ করে।’
বঙ্গবন্ধু কখনও ভাবেননি কোনো বাঙালি তাঁকে হত্যা করবে। অনেকে সতর্ক করলেও তিনি কারও কথা শোনেননি। পাকিস্তানি হায়েনাদের হাতে বন্দি থাকার সময়ও যিনি বলেছেন, আমার লাশটা আমার বাংলার মানুষের কাছে পৌঁছে দিও। যে বাঙালিকে তিনি নিজের জীবনের চেয়ে বেশি ভালোবাসতেন। সেই বাঙালি তার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে! তাকে হত্যা করতে পারে; এমনটা কখনও বিশ্বাস করতে পারতেন না বঙ্গবন্ধু।
কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকের বুলেট নিভিয়ে দিয়েছে ‘স্বাধীনতার সূর্য’ বঙ্গবন্ধু নামের প্রদীপ। তবে ঘাতকেরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও বাঙালির হৃদয় থেকে তাকে সরাতে পারেনি। একজন মানুষ মৃত্যুর পরও যে কতটা শক্তিশালী, একটা জাতির কতটা জুড়ে থাকতে পারে, তার উদাহরণ বঙ্গবন্ধু। ‘এই ইতিহাস ভুলে যাবো আজ, আমি কি তেমন সন্তান?/ যখন আমার জনকের নাম শেখ মুজিবুর রহমান / তারই ইতিহাস প্রেরণায় আমি বাংলায় পথ চলি-/ চোখে নীলাকাশ, বুকে বিশ্বাস, পায়ে উর্বর পলি।’ (আমার পরিচয় : সৈয়দ শামসুল হক)।