বঙ্গবন্ধুর ডাকে বিক্ষোভে উত্তাল ছিল সারা বাংলা

আজাদী ডেস্ক | মঙ্গলবার , ৫ মার্চ, ২০২৪ at ৭:৫৫ পূর্বাহ্ণ

স্বাধিকার আন্দোলনে বাঙালির স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে মার্চের এ সময়ে পূর্ব পাকিস্তান সরকার কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়ে। ১৯৭১ সালের ৫ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে বিক্ষোভে উত্তাল ছিল সারা বাংলা। বঙ্গবন্ধু যা বলছেন মানুষ তাই করছে। তার নির্দেশমতো পরিচালিত হচ্ছেঅফিসআদালত, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, দোকানপাট, ব্যাংকবীমা সবকিছু। এদিন জনতার ওপর গুলিবর্ষণের প্রতিবাদে সারা দেশে সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয়।

পঞ্চম দিনের মতো হরতাল পালনকালে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে টঙ্গী শিল্প এলাকায় ৪ জন শ্রমিক শহিদ হন এবং ২৫ জন শ্রমিক আহত হন। চট্টগ্রামে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৩৮। এ সংবাদে ঢাকাসহ সারা দেশের জনগণের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সারা দেশে প্রতিবাদ সভা ও শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। বিকালে কবি, সাহিত্যিক ও শিক্ষকরা মিছিল নিয়ে রাজপথে নেমে আসেন। ছাত্রলীগ ও ডাকসুর উদ্যোগে বায়তুল মোকাররম থেকে মিছিল বের হয়।

এদিন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ এক বিবৃতিতে বলেন, ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, সিলেটসহ বিভিন্ন স্থানে মিলিটারির বুলেটে নিরীহনিরস্ত্র মানুষ, শ্রমিক, কৃষক ও ছাত্রদের হত্যা করা হচ্ছে। নির্বিচারে নিরস্ত্র মানুষকে এভাবে হত্যা করা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ছাড়া আর কিছুই নয়।

জনরোষের মুখে সন্ধ্যায় সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করার ঘোষণাকে মার্চের এ দিনে বেলুচিস্তান ন্যাপ অবাঞ্ছিত ও অগণতান্ত্রিক ঘোষণা করে। অবসরপ্রাপ্ত এয়ার ভাইস মার্শাল আসগর খান এদিন বিকালে করাচি থেকে ঢাকায় পৌঁছেন। রাতে তিনি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ধানমণ্ডির বাসভবনে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে আসগর খান মন্তব্য করেনসংখ্যাগুরু দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে দেশের সংহতি রক্ষা করা অপরিহার্য।

পাকিস্তানে ইসলামী পণ্ডিত ও রাজনীতিবিদ মওলানা গোলাম গাউস হাজারভি বলেন, পশ্চিম পাকিস্তানের সব নির্বাচিত পার্লামেন্ট সদস্যের পক্ষ থেকে ভুট্টোর কথা বলার অধিকার নেই। অবিলম্বে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী এসব নেতার কারও উপদেশকেই গুরুত্ব দেয়নি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅগ্নি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের নোটিশ দৃশ্যমান স্থানে টানানোর নির্দেশ
পরবর্তী নিবন্ধএস আলম সুগার মিলে ভয়াবহ আগুন