বইমেলায় জুলাই অভ্যুত্থানের ছাপ

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ at ৬:৫৯ পূর্বাহ্ণ

জুলাইয়ের ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে চট্টগ্রামে প্রথম ওয়াসিম আকরাম এবং দেশে প্রথম শহীদ হন রংপুরের আবু সাঈদ। চট্টগ্রামে অমর একুশে বইমেলার প্রবেশমুখে স্থাপিত তোরণে রয়েছে এই দুই শহীদের ছবি। এতে অনুমান করা যায়, এবারের বইমেলায় রয়েছে জুলাইয়ের ছাপ। প্রবেশপথ পেরিয়ে একটু সামনে যেতেই চোখে পড়ে ‘দাঁড়িকমা প্রকাশনী’র স্টল। যেটি সাজানো হয়েছে জুলাই অভ্যুত্থানের থিম নিয়ে। ‘বুকের ভেতর অনেক ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর’সহ ছাত্রজনতার আন্দোলন চলাকালে জনপ্রিয় হওয়া নানা স্লোগান রয়েছে এই স্টলে।

চট্টগ্রামের অভিন্ন বইমেলায় এবারই প্রথম ‘জিয়া স্মৃতি পাঠাগার’ এর স্টল দেয়া হয়। এই স্টলের সামনে ওয়াসিম আকরামের ছবি এবং তার একটি ফেসবুক পোস্ট দিয়ে ফেস্টুন রয়েছে। স্টলের একপাশেও রয়েছে তার কয়েকটি ছবি।

এখানে কথা হয় সাকিব নামে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে। আজাদীকে তিনি বলেন, প্রতিবছর অনেক আশাউদ্দীপনা নিয়ে অমর একুশে বইমেলার জন্য অপেক্ষা করি। এবার নতুন বাংলাদেশে বইমেলা হচ্ছে, তাই বইমেলাকে ঘিরে প্রত্যাশাটা একটু ভিন্ন। জুলাই অভ্যুত্থ্যান এবং নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণকেন্দ্রিক বইয়ের প্রত্যাশা করছি।

নগরের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ম জিমনেশিয়াম মাঠে চলছে অমর একুশে বইমেলা২৫। গতকাল সোমবার ছিল মেলার তৃতীয় দিন। আগের দিনের চেয়ে গতকাল লোক সমাগম বেশি হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকাশকরা। তবে বেচাকেনা খুব একটা হচ্ছে না বলেও জানান তারা। আগামী শুক্রবার থেকে বেচাকেনা জমজমাট হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।

চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ সাহাব উদ্দীন হাসান বাবু আজাদীকে বলেন, অতীতে ফেব্রুয়ারি মাসের সাতআট তারিখ, এমনকি আরো পরেও বইমেলা শুরু হয়েছে। এবারই প্রথম চট্টগ্রামেও ঢাকার সঙ্গে মিল রেখে পহেলা ফেব্রুয়ারি মেলা শুরু হয়েছে। যা অনেক বইপ্রেমী জানেন না। এক্ষেত্রে সিটি কর্পোরেশনের প্রচারণায় আরেকটু জোর দেয়া উচিত ছিল বলে প্রকাশকরা মনে করেন। এরপরও আমরা আশাবাদী, ধীরে ধীরে মেলা জমে ওঠবে এবং বেচাকেনাও বাড়বে। শুক্রবার থেকে বেচাকেনা বাড়তে পারে।

দাঁড়িকমা প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী মো. রাজু আজাদীকে বলেন, নতুন বই এখনো আসেনি। প্রত্যাশা অনুযায়ী সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। গতবারের চেয়েও কম। প্রচারণা কম হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

প্রাবন্ধিক জহির ছিদ্দিকী আজাদীকে বলেন, সিআরবির চেয়ে এখানেই (মেলা প্রাঙ্গণ) বেশি ভাল লাগছে। সিআরবি খুপড়ির মত। তবে প্রচারণা একটু কম মনে হচ্ছে। বাণিজ্যমেলা বা অন্যান্য মেলা হলে তিনচারদিন আগে থেকে মাইকিং করে প্রচারণা চালানো হয়, বইমেলায়ও এমনটি হওয়া উচিত।

এদিকে গতকাল মেলামঞ্চের আয়োজনে ছিল ‘সামপ্রদায়িক সমপ্রীতির বাংলাদেশ : সবার মিলিত প্রচেষ্টায় হোক আমাদের স্বপ্নপূরণ’ শীর্ষক আলোচনা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে প্রধান আলোচক ছিলেন চবি জীব বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আল আমীন। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট চট্টগ্রাম মহানগরের আহ্বায়ক অধ্যাপক ঝন্টু কুমার বড়ুয়ার সভাপতিত্বে আলোচক ছিলেন গীতা সংসদ চট্টগ্রামের সভাপতি আর কে দাস রুহু, সুমঙ্গল মহাথের ও অধ্যাপক রুপন ধর। অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন স্কুল ও কলেজ শিক্ষার্থী এবং আমন্ত্রিত আবৃত্তি শিল্পী, নৃত্যশিল্পী ও সংগীতশিল্পীদের বিভিন্ন পরিবেশনা ছিল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএম এ আজিজ স্টেডিয়ামে গালা নাইট কনসার্ট ৬ ফেব্রুয়ারি
পরবর্তী নিবন্ধসীমান্তে ফের মাইন বিস্ফোরণ,তরুণের পা বিচ্ছিন্ন