ইউরোপজুড়ে চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যে ইতালি চার দেয়ালের বাইরে খোলা জায়গায় কাজকর্মে বিধিনিষেধ দিয়েছে। ফ্রান্স বন্ধ করেছে স্কুল আর তুরস্ক দাবানলের বিরুদ্ধে লড়ছে। বছরের এ সময়ে এমন তাপপ্রবাহকে আবহাওয়াবিদরা ‘অস্বাভাবিক’ বলছেন। স্পেন গেল মাসকে তাদের রেকর্ড রাখা শুরুর পর সবচেয়ে উষ্ণতম জুন হিসেবে অভিহিত করেছে। মঙ্গলবার দেশটির বেশকিছু শহরে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে ইতালির শহর ত্রেনতোতেও, গরমে পুড়ছে লন্ডনের মতো উত্তর ইউরোপের শহরগুলোও। খবর বিডিনিউজের।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেইঞ্জ সার্ভিস জানিয়েছে, ইউরোপ এখন বৈশ্বিক গড়ের দ্বিগুণ গতিতে উষ্ণ হচ্ছে, এটিই বর্তমানে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে উষ্ণ হয়ে ওঠা মহাদেশ। বছরের এই সময়ে এটা অস্বাভাবিক, তবে অভূতপূর্ব নয়, বলেছেন বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার মুখপাত্র ক্লেয়ার নালিস। এই ধরনের তীব্র গরমের অভিজ্ঞতা ইউরোপের জন্য নতুন নয়, তবে এ ধরনের গরম আমরা সাধারণত গ্রীষ্মের শেষের দিকে দেখি। তীব্র এ তাপপ্রবাহ মোকাবেলায় মহাদেশটির কিছু দেশ স্বাস্থ্যজনিত সতর্কতা জারি করেছে। ফ্রান্সে প্রায় এক হাজার ৯০০ স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে, সোমবারও এ সংখ্যা ছিল দুইশর মতো। ইতালির শ্রমিক সংগঠনগুলো সোমবার বোলোনিয়া শহরের কাছে এক নির্মাণশ্রমিকের মৃত্যুর জন্যও গরমকে দায়ী করেছে। মিলান, রোমসহ ১৭ শহরে তাপপ্রবাহের রেড অ্যালার্ট জারি করা ইতালি কোনো কোনো অঞ্চলে দিনের সবচেয়ে উষ্ণ ঘণ্টাগুলোতে খোলা জায়গায় কাজকর্মে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় ফ্লোরেন্সের মধ্যাঞ্চল এবং উত্তরাঞ্চলীয় শহর বার্গামোতে লোডশেডিংয়ের খবর পাওয়া গেছে। সিসিলির বাঘেরিয়া শহরে হৃদযন্ত্রে সমস্যা থাকা এক নারীর হাঁটা অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে একাধিক বার্তা সংস্থা।
স্পেনের বার্সেলোনা শহরে সপ্তাহান্তে রাস্তার এক ঝাড়ুদারের মৃত্যুর সঙ্গে তাপপ্রবাহের কোনো সম্পর্ক আছে কিনা কর্তৃপক্ষ তা খতিয়ে দেখছে।
দক্ষিণ স্পেনের মালাগাতে বাসিন্দাদের জন্য রেড ক্রস শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত জলবায়ু আশ্রয়কেন্দ্র বানিয়েছে বলে জানিয়েছে রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্টের আন্তর্জাতিক ফেডারেশনের এক মুখপাত্র।
স্পেনের কাতালুনিয়ায় এক দাবানলে দুজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। দাবানল অনেকখানি নিয়ন্ত্রণে এসেছে এবং বুধবার ওই এলাকায় আরও বাতাস এবং বজ্রঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
দাবানলের বিরুদ্ধে লড়াইরত তুরস্ক সোমবার ইজমির শহরের আশেপাশের এলাকা, কাছাকাছি মানিসা প্রদেশ এবং দক্ষিণ–পূর্বের হাতায় প্রদেশ থেকে প্রায় ৫০,০০০ মানুষকে অস্থায়ীভাবে সরিয়ে নিয়েছে।