ফেসবুকে রাজনীতিকদের বিশেষ খাতির বন্ধ হচ্ছে

| শনিবার , ৫ জুন, ২০২১ at ৭:৫০ পূর্বাহ্ণ

ফেসবুক ব্যবহারকারীদের কনটেন্ট প্রকাশের আগে যাচাই-বাছাইয়ের সময় রাজনীতিকদের কিছু নিয়ম থেকে যে ছাড় দিয়ে আসছিল তা বন্ধ করতে যাচ্ছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বড় ধরনের নীতির পরিবর্তনের কথা বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তিভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম দ্য ভার্জের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে। ফেসবুকের স্বাধীন পর্যালোচনা পর্ষদ যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট স্থগিত করার বিষয়ে যখন রায় দিয়েছিল, তখন তারা বেশকিছু সুপারিশও দিয়েছিল। সেগুলোর ভিত্তিতেই এই পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। দ্য ভার্জে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনের বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি ফেসবুকের মুখপাত্র। নীতিমালা ভঙ্গকারী রাজনীতিক এবং বিশ্ব নেতাদের কনটেন্টের ওপর নজরদারি করা নিয়ে সামপ্রতিক বছরগুলোতে যথেষ্টই ভুগতে হয়েছে প্রযুক্তি প্ল্যাটফরমগুলোকে। ফেসবুক এবং টুইটার দীর্ঘদিন ধরেই এই বলে রাজনীতিকদের পক্ষে ওকালতি করে আসছে যে, বেশি সুযোগ তাদের প্রাপ্য। খবর বিডিনিউজের।
সমপ্রতি ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট স্থগিত করার বিষয়ে ফেসবুকের সিদ্ধান্ত যাচাই-বাছাই করে প্রতিষ্ঠানের স্বাধীন পর্যালোচনা পর্ষদ তাতে সমর্থন দিয়েছে। তবে অনির্দিষ্টকালের জন্য অ্যাকাউন্টটি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত ঠিক ছিল না বলে তারা মত দেয়। একইসঙ্গে তারা কিছু সুপারিশও করেছে, যা অবশ্য-পালনীয় নয়। তবে ফেসবুক গতকাল নাগাদ এসব সুপারিশের ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে পারে বলে দ্য ভার্জের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। সুপারিশে বলা হয়, একই ধরনের নিয়ম সব ব্যবহারকারীর জন্য প্রযোজ্য হওয়া উচিত। তবে সর্বনাশ ঘটানোর ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপ্রধান এবং সরকারি কর্মকর্তাদের ক্ষমতা যে বেশি থাকে, সেটাও তারা উল্লেখ করেছেন। ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ দীর্ঘ দিন ধরেই বলে আসছেন, রাজনীতিকদের বক্তব্যে নজরদারি চালানো উচিত না। ফেইসবুক রাজনীতিকদের পোস্ট ও বিজ্ঞাপনকে তাদের তৃতীয় পক্ষের ফ্যাক্ট-চেক কর্মসূচি থেকে অব্যাহতি দিয়ে রেখেছে। তাছাড়া প্রতিষ্ঠানটির ‘সংবাদযোগ্যতা বিষয়ক ছাড়’ নীতির আওতায়ও রাজনীতিকরা নীতিভঙ্গকারী পোস্ট দিতে পারেন, যতক্ষণ পর্যন্ত তার ক্ষতির দিকটি জনস্বার্থকে ছাড়িয়ে না যায়। তবে ট্রাম্প এই ছাড় পায়নি। ফেসবুকে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি প্রতিরোধে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে সংবাদযোগ্যতা নীতির বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়ার সুযোগ থাকা উচিত না বলেও পর্ষদের সুপারিশে বলা হয়েছে।
এতে বলা হয়ে, সংবাদযোগ্যতার নিরিখে কোন কনটেন্ট মুছে ফেলা যাবে না অথবা একটি প্রভাবশালী অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে কখন পদক্ষেপ নেওয়া যাবে- সেসব বিষয়ে আরও স্পষ্টভাবে ব্যবহারকারীদের জানানোর ব্যবস্থা রাখা উচিত। ফেসবুক একটি পক্ষের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে, যারা মনে করেন- রাজনৈতিক বক্তব্যের ক্ষেত্রে নিরব ভূমিকা পালনের অবস্থান থেকে সরে আসা উচিত প্রতিষ্ঠানটির। আবার রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকর্মীদের একাংশ ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট স্থগিত করার সিদ্ধান্তকে সেন্সরশিপ আরোপ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।
স্বাধীন পর্যালোচনা পর্ষদ ট্রাম্পের বিষয়টিতে একটি যৌক্তিক প্রতিক্রিয়ার সিদ্ধান্ত নিতে ফেসবুককে ছয় মাস সময় দিয়েছে, যার ফলাফল হিসেবে ট্রাম্প নিজের অ্যাকাউন্ট ফিরে পেতে পারেন, অথবা তা পুরোপুরি আটকে দেওয়া হতে পারে বা একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত স্থগিত রাখা হতে পারে। ফেসবুক অবশ্য এ বিষয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত জানায়নি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভক্তদের আরো একটি সুসংবাদ দিলেন মিথিলা
পরবর্তী নিবন্ধফারাক দেখছে না ফিলিস্তিনিরা