বর্তমান যুগে বিজ্ঞানের প্রসারে আমাদের সমাজে প্রযুক্তি এবং প্রগতি একযোগে হাঁটছে। হাঁটছে বললে হয়ত ভুল বলা হবে। আসলে প্রযুক্তির ব্যবহার যেন দিনদিন কেবল দৌড়াচ্ছে। শহর থেকে গ্রামে এখন সকলের হাতেই শোভা পাচ্ছে সহজলভ্য স্মার্টফোন। আর এই স্মার্টফোনের বদৌলতে ফেসবুক, মেসেঞ্জার, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার, টেলিগ্রাম, টিকটিকসহ সবকিছুর ব্যাপকভাবে ব্যবহার বেড়েই চলেছে।
বিজ্ঞান আমাদের জীবনযাপনে অনেক পরিবর্তন এনেছে এবং জীবনযাত্রাকেও সহজ করে তুলেছে। তবে, ছাত্রজীবন থেকেই একটা কথা জেনে এসেছি। বিজ্ঞানের প্রসার মানবজীবনে কেবল সুফল নয়, কিছু কুফলও বয়ে আনে। উদাহরণ হিসাবে বলতে পারি, ফেসবুক ও মেসেঞ্জার নামক স্যোসাল মিডিয়ার ব্যবহারে সমাজে সুফল এবং কুফল দুটোরই সুযোগ ঘটেছে। যেমন– আমরা যারা লেখালেখি করি তাদের জন্য ফেসবুক একটি অনন্য প্লাটফর্ম। ফেসবুকে নিজের টাইমলাইন ও পেইজের বাইরেও আমরা বিভিন্ন সাহিত্য গ্রুপে লিখতে এবং পড়তে পারছি। সহজেই ঘরে বসে থেকে পাচ্ছি দেশ বিদেশের খবরাখবর। আবার মেসেঞ্জারে দেশ কিংবা বিদেশে অবস্থানরত আত্মীয় স্বজনদের সাথে খুব সহজেই কথা বলতে পারছি, ভিডিও কলে একে অপরকে দেখতেও পারছি। এটা অনেক ভালো একটা দিক। কিন্তু এর বিপরীত দিকও আছে।
অনেকে ফেসবুক এবং মেসেঞ্জার ব্যবহার করে রাত বিরাতে অহেতুক ভালো মানুষদেরকে বিরক্ত করছে, অসম সম্পর্ক কিংবা পরকীয়ায় আসক্ত হচ্ছে, সমাজে অশ্লীলতাও ছড়াচ্ছে। এমনি করে নীরব বিষের দংশনে মরে যাচ্ছে বহু স্বপ্নদীপ্ত মানুষের মন ও মস্তিষ্ক। নিরাশার অতলে ডুবে ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হচ্ছে চঞ্চলতাপূর্ণ বহু জীবন। এই অনৈতিক কর্মকাণ্ডে কেবল যুবক যুবতীরাই নয়, বরং মধ্যবয়সী নর–নারীরাও আসক্ত হয়ে পড়ছে। বর্তমানে পরকীয়া এবং ডিভোর্সের কারণে হুটহাট সিদ্ধান্তে ভেঙে যাচ্ছে অজস্র সুখের সংসার। যার নেতিবাচক প্রভাবের মাশুল দিতে হচ্ছে ভেঙে যাওয়া পরিবারের সন্তানদেরকেও। পরিশেষে বলতে চাই– ফেসবুক ও মেসেঞ্জারের এই কুফল থেকে সময় থাকতেই আমাদেরকে বেরিয়ে আসতে হবে। এর সঠিক প্রতিকার অবশ্যই প্রয়োজন। নইলে নৈতিক অবক্ষয়ে আমাদের প্রগতিশীল সামাজিক অবস্থানেরও ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছাতে খুব একটা দেরি হবে না।